Top Unsold Cricketers in IPL Auction 2025: আইপিএল নিলামে শীর্ষ অবিক্রিত খেলোয়াড়দের তালিকায় স্থান পেলেন ভারতের পৃথ্বী শ, শার্দুল ঠাকুরও। ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়ারের মত খেলোয়াড়রা এই আইপিএলেই বিরাট আর্থিক চুক্তিতে লাভবান হয়েছেন।
কিন্তু, অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, জনি বেয়ারস্টোর মত বড় কিছু নাম। আশ্চর্যজনক হলেও, পৃথ্বী শ ও শার্দুল ঠাকুরও কোনও ক্রেতা পাননি। সৌদি আরবের জেড্ডায় ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর আইপিএল নিলামের আসর বসেছিল। সেখানেই অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন বেশ কিছু নামজাদা ক্রিকেটার।
এই নিলামে মাত্র ১১ ঘণ্টায় কলকাতা নাইট রাইডার্সে ফিরেছেন অজিঙ্কা রাহানে। কিন্তু, নিলামের সময় পেরিয়ে গেলেও জনি বেয়ারস্টো, কেন উইলিয়ামসন ও মুস্তাফিজুর রহমানের মত ক্রিকেটাররা অবিক্রিত থেকে গেলেন। বছর ৪৩-এর জেমস অ্যান্ডারসন, তাঁর কেরিয়ারে প্রথমবারের মতো নিলামে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও ক্রেতা পাননি।
বিক্রি হলে, অ্যান্ডারসনই হতেন এবারের আইপিএলে যোগদানকারী সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড়। অবশ্য, এবারের নিলামে ইতিহাস তৈরি হয়েছে। ১৩ বছর বয়সি বৈভব সূর্যবংশী, রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে ১.১ কোটি টাকার চুক্তি করে ইতিহাস তৈরি করেছেন।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক, আইপিএল ২০২৫ মেগা নিলামে বিক্রি না হওয়া খেলোয়াড়দের-
১. ডেভিড ওয়ার্নার- (বেস প্রাইস ২ কোটি টাকা) আইপিএলের অন্যতম স্মরণীয় কেরিয়ারের সমাপ্তি ঘটল। প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের বেস প্রাইস ছিল ২ কোটি টাকা। কোনও ক্রেতা পাননি। জেড্ডায় কোনও রাউন্ডেই ফ্র্যাঞ্চাইজিরা তাঁকে না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি আইপিএলে তাঁকে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় দেখা যাবে?
২. জনি বেয়ারস্টো- (বেস প্রাইস ২ কোটি টাকা) জনি বেয়ারস্টো আইপিএলের অন্যতম ভয়ংকর ওপেনার ছিলেন। পাঁচ বছরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও পঞ্জাব কিংসের হয়ে ৫০টি ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু, পঞ্জাবের হয় গত দুই মরশুমে খারাপ পারফরম্যান্স বেয়ারস্টোর এবারের আইপিএলে ফেরার রাস্তা বন্ধ করে দিল।
৩. পৃথ্বী শ- (বেস প্রাইস ৭৫ লক্ষ টাকা) দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পরে কেউই বিতর্কিত ওপেনারের পাশে দাঁড়ায়নি। পৃথ্বী শ, দিল্লি ক্যাপিটালস থেকে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন। ৭৯টি ম্যাচ খেলে ১,৮৯৩ রান করেছেন। গত দুই মরশুমে তিনি মাত্র ১৬টি ম্যাচ খেলেছেন। গত মরশুমে মাত্র ১৯৮ রান করেছিলেন। তবে, ফিটনেসের কারণে সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন।
৪. পীযূষ চাওলা- (বেস প্রাইস ৫০ লক্ষ টাকা) মনে হচ্ছে লিগের অন্যতম সেরা স্পিনারের আইপিএল যাত্রা শেষ হল। ৩৫ বছর বয়সি ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রধান স্পিনার ছিলেন। তবে, এবার একজন ক্রেতাও খুঁজে পাননি। তাঁর আইপিএল লিগে ১৯২টি উইকেট রয়েছে।
৫. শার্দুল ঠাকুর- (বেস প্রাইস ২ কোটি টাকা) এটি ছিল এক বিশাল চমক। অতীতে, চেন্নাই সুপার কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেছেন শার্দুল। নিলামের ২য় দিনে তাঁর নাম ওঠে। সেই সময় দলগুলোর কাছে খুব বেশি অর্থ ছিল না। এটি শার্দুলের বিরুদ্ধে যায়। পাশাপাশি, ইনজুরির শঙ্কাও রয়েছে শার্দুলের। ২০২৪ সালে সুপার কিংসের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স খারাপ ছিল। ৯ ম্যাচ খেলে তিনি মাত্র ৫ উইকেট নিয়েছিলেন।
৬. মায়াঙ্ক আগরওয়াল- (বেস প্রাইস ১ কোটি টাকা) মায়াঙ্ক একজন ওপেনার। ২০২২ সালে পঞ্জাব কিংস ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে খুব বেশি সুযোগ পাননি। তিনি গত দুই মরশুমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু, বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেননি। ২০২৪ মরশুমে তিনি মাত্র চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন।
৭. কেন উইলিয়ামসন- (বেস প্রাইস ২ কোটি টাকা) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রাক্তন অধিনায়ক গত দুই বছরে আইপিএলে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন। ফিট থাকা সত্ত্বেও গত বছর গুজরাট টাইটানসের হয়ে মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছেন। উইলিয়ামসন কি তাঁর বেস প্রাইস ২ কোটি টাকা রেখে ভুল করেছেন? বিক্রি না হওয়ার পর এই প্রশ্ন উঠছে।
৮. জেমস অ্যান্ডারসন- (বেস প্রাইস ১.২৫ কোটি টাকা) কিংবদন্তি ইংল্যান্ড বোলার ৭০৪ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কয়েক মাস পর তাঁর কেরিয়ারে প্রথমবারের মত আইপিএল নিলামে নাম নথিভুক্ত করেন। এমনকি সিএসকে, যাঁরা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কেনার জন্য পরিচিত, তারাও অ্যান্ডারসনকে নেয়নি। এমনকী নিলামে তাঁর নামও ডাকা হয়নি।
৯. নবদীপ সাইনি- (বেস প্রাইস ৭৫ লক্ষ টাকা) ভারতের দ্রুততম বোলারদের একজন। নভদীপের দুর্ভাগ্য, তিনি একজনও ক্রেতা পাননি। প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো ফর্মে থাকা সাইনি ২০২৪ মরশুমেও আইপিএল খেলার সুযোগ পাননি।
১০. সরফরাজ খান- (বেস প্রাইস ৫০ লক্ষ টাকা) তাঁর ভাই মুশির খান পঞ্জাব কিংসের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। আর, এবারই সরফরাজের কাছে টেস্ট ক্রিকেটে একটি যুগান্তকারী বছর। তিনি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। তারপরও তিনি আইপিএলে অবিক্রিত থেকে গেলেন।
যাকে দুর্ভাগ্যজনক মনে করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সরফরাজ খান সর্বশেষ ২০২৩ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলেছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দিয়ে আইপিএল খেলা শুরু করেন। তিন বছরে আরসিবি (RCB)-র হয়ে ২৫টি ম্যাচ খেলেন। কিন্তু, বিশেষ দাগ কাটতে পারেননি।