আরসিবির সামনে শেষমেশ ত্রাতা হয়ে দাঁড়াল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে মুম্বই প্লে অফে পৌঁছে দিল আরসিবিকে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৫ উইকেটে শনিবার জিততেই টানা তিনবার প্লে অফে ওঠা নিশ্চিত হয়ে গেল কোহলিদের।
আরসিবির ভাগ্য নির্ভর করে ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জয়ের ওপর। আর মুম্বই চলতি সিজনে চতুর্থ জয়ের পরে আরসিবি সরাসরি প্লে অফে পৌঁছে গেল। প্ৰথম এলিমিনেটরের লড়াইয়ে আরসিবি এবার খেলবে লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে, কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে।
আরও পড়ুন: হেটমায়ারের স্ত্রীকে জড়িয়ে অশ্লীল যৌন মন্তব্য! গাভাসকারের কাণ্ডে অস্থির বিতর্কে উত্তাল IPL
চলতি মরশুমে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছে দিল্লি ক্যাপিটালস। শনিবার তারই খেসারত দিল পন্থের দল। পঞ্চম স্থানে থেকে লিগ শেষ করল তারা। রবিবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদ অথবা পাঞ্জাব কিংস ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, দিল্লি সম্ভবত পঞ্চম স্থানে থেকেই ফিনিশ করতে চলেছে।
মুম্বই শনিবার টসে জিতে দিল্লিকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল। প্ৰথমে পরপর আউট হওয়ার ধাক্কা সামনে দিল্লি শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ১৫৯/৭ তোলে।
১৬০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে মুম্বইও শুরুতে ক্যাপ্টেন রোহিতকে হারিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ঈশান কিষান (৩৫ বলে ৪৮) এবং বেবি এবি দেওয়াল্ড ব্রেভিস (৩৩ বলে ৩৭) দ্বিতীয় উইকেটে ৫১ রান যোগ করে যান। কুলদীপ যাদবের ১০তম ওভারে দুজনে ১৮ রান তোলেন।
তার পরের ওভারেই কুলদীপ ধাক্কা দেন ঈশান কিষানকে আউট করে। বড় শট হাঁকাতে গিয়ে ওয়ার্নারের হাতে ধরা পড়েন কিষান। সেই ওভারেই ব্রেভিসকে ফিরিয়ে দিতে পারতেন কুলদীপ। তবে পন্থ সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন। লাইফলাইন পেয়ে ১৩তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের প্ৰথম বলেই ছক্কা হাঁকান। তবে দক্ষিণ আফ্রিকান উঠতি তারকা বেশিক্ষণ টানতে পারেননি নিজের ইনিংস। শার্দূল ঠাকুরের বলে আউট হয়ে যান ব্রেভিস।
সেই সময়ে ৯৫/৩ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই। একই সঙ্গে আরও দুই উইকেট দখল করতে পারত দিল্লি। টিম ডেভিডের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপারের কাছে পৌঁছলেও পন্থ রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেননি। পরে রিভিউয়ে দেখা যায় বল ব্যাটে স্পর্শ করেছিল।
আরও পড়ুন: অন্য দলের ভরসায় বসে নেই! কোহলিদের তুলোধোনা করে বোমা ক্যাপিটালস মালিক জিন্দালের
এভাবে জীবন পাওয়ায় সুযোগের সদ্ব্যবহার দারুণভাবে করেন ডেভিড। সেই ওভারের শেষ বলে সিঙ্গাপুরের ক্রিকেটার শার্দূল ঠাকুরকে ৯৭ মিটার ছক্কা হাঁকিয়ে যান। শেষমেশ ডেভিডের ব্যাটে ভর করেই মুম্বই জয় ছিনিয়ে নেয়। ১৮তম ওভারের শেষ বলে ডেভিড আউট হলেও মুম্বইয়ের জয় তখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। দিল্লির হয়ে আনরিখ নর্জে এবং শার্দূল ঠাকুর দুটি করে উইকেট নেন।
তার আগে প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে দিল্লি শুরু থেকেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল। ডেভিড ওয়ার্নার মাত্র ৫ রান করে ফেরার পরে জসপ্রীত বুমরা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মিচেল মার্শকেও। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে বুমরার বাউন্সার সামলাতে না পেরে আউট হয়ে যান পৃথ্বী শকে (২৪)। দারুণভাবে ক্যাচ তালুবন্দি করেন ঈশান কিষান।
কিছুক্ষণ পরেই মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে সরফরাজ খানকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরে স্কোরবোর্ড ৫০/৪ হয়ে যায়। ঠিক যখন মনে হচ্ছিল চাপের মুখে দিল্লি ব্যাটিং নুইয়ে পড়বে, তখনই দলের হাল ধরেন রভম্যান পাওয়েল (৩৪ বলে ৪৩) এবং ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্থ (৩৩ বলে ৩৯)। দুজনে পঞ্চম উইকেটে ৭৫ রান যোগ করে দিল্লিকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।
২৮ বছরের ক্যারিবিয়ান তারকা চারটে ছক্কা এবং একটা বাউন্ডারি হাঁকান। হৃতিক সৌকিনের ১২তম ওভারে জোড়া ছক্কা এবং বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের জাত চিনিয়ে যান। পরের ওভারে মায়াঙ্ক মার্কণ্ডের ওভারেই ছক্কা হাঁকান। পাওয়েলের সঙ্গে ছক্কা হাঁকানোর পার্টিতে যোগ দেন পন্থও। ১৬তম ওভারে রমনদীপ সিংয়ের বলে দুটো বাউন্ডারি, একটা ছক্কা হাঁকিয়ে যান দিল্লি ক্যাপ্টেন। সেই রমনদীপ সিংয়ের বলেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় পন্থকে। শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ১০ বলে ১৯ করে দলকে ১৫০ রানের মার্ক পার করিয়ে দেন। মুম্বইয়ের হয়ে বুমরা চার ওভারের কোটায় ২৫ রান খরচ করে তিন উইকেট তুলে নেন। রমনদীপ সিং ২৯ রানের বিনিময়ে নেন জোড়া উইকেট।