আইপিএলে তুখোড় ফর্মে রয়েছে সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান রয়্যালস। প্রথমবারের আইপিএল জয়ীরা নতুন মরশুমে চারটে ম্যাচের তিনটেতেই জিতে লিগ তালিকার শীর্ষে রয়েছে। রান রেটও বেশ ভালো। লখনৌ সুপার জাযান্টসের বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালস ডেবিউ ক্যাপ দিয়েছিল কুলদীপ সেনকে।
কুলদীপ সেন আবির্ভাবেই হিট। নিজের ৪ ওভারের কোটায় ৩৫ রান খরচ করে তুলে নিয়েছিলেন সেট ব্যাটসম্যান দীপক হুডাকে। দুরন্ত আইপিএল অভিষেকের পর কুলদীপের বাবা জানিয়েছেন, ক্রিকেট খেলার ঝোঁকের কারণে আগে কুলদীপ তাঁর কাছে মার-ও হজম করেছে। সেই পুত্রই আপাতত তাঁকে গর্বিত করেছে।
আরও পড়ুন: শেষ ওভারে ম্যাচ বাঁচিয়ে রাজস্থান নায়ক কুলদীপ সেন! কে এই উঠতি তারকা, চিনে নিন
পেশায় নাপিত কুলদীপের বাবা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছেন, "আজ খাবার সময়ও পাইনি। আজ বহু খদ্দের দোকানে ভিড় করেছে। ৩০ বছর ধরে এটাই আমার পেশা। আজ নিজের পুত্রের জন্য ভীষণ ভালো লাগছে। ও আমাকে গর্বিত করেছে। এর আগে ওঁর ক্রিকেট খেলার প্যাশনকে কখনই সমর্থন করিনি। স্কুলে পড়ার সময় ক্রিকেট খেলার জন্য ওঁকে কত মারধোর, বকাঝকা করেছি। তবে ও কখনও নিজের স্বপ্নকে ছেড়ে দেয়নি।"
শেষ ওভারে লখনৌয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। ক্রিজে ছিলেন ফিনিশার মার্কাস স্টোয়িনিস। এমন অবস্থাতেই কুলদীপের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন রাজস্থান ক্যাপ্টেন সঞ্জু স্যামসন। শেষ দু-বলে চার-ছক্কা হাঁকালেও স্টোয়িনিস ম্যাচ জেতাতে পারেননি।
রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে কুলদীপের বল শুরুতে ফেস করতে হয়েছিল আবেশ খানকে। প্ৰথম বলে আবেশ খান সিঙ্গলস নেওয়ায় স্ট্রাইকিং এন্ডে যান মার্কাস স্টোয়িনিস। শেষ সময় জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৫ রান। দ্বিতীয় বলে কুলদীপ ওয়াইড লেংথে পিচ করেন। স্টোয়িনিস বল কানেক্ট করতে পারেননি। তখনও ৪ বল বাকি ছিল।
আরও পড়ুন: টানা চার হার আইপিএলে, মুম্বইকে বাঁচাতে এবার ‘মাঠে নামলেন’ নীতা আম্বানি
কুলদীপ আগেই নিজের প্ল্যানিং সেরে ফেলেছিলেন। তা আগেভাগে আঁচ করেই অফস্ট্যাম্পে সরে গিয়ে কুলদীপ স্কুপ করতে যান। তবে পেসের তারতম্য ঘটিয়ে কুলদীপ বিভ্রান্ত করেন অজি অলরাউন্ডারকে। নিজের প্ল্যান অনুযায়ী বল করে কুলদীপ টানা তিনটে ডট বল করে যান। কার্যত জয়ের দোরগোড়ায় ছিল রাজস্থান।
শেষ দু-বলে স্টোয়িনিস একটা বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে পারেননি। সবমিলিয়ে গোটা ওভারে ১১ রান খরচ করে নায়কের মর্যাদায় অবতীর্ণ হন কুলদীপ।
কুলদীপের পেস ম্যাচে নজর কেড়ে নিয়েছিল। লখনৌ ম্যাচে ১৪৬ কিমি গতিতেও আগুন ঝড়িয়েছেন কুলদীপ। ম্যাচের পরে রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্বীকার করলেন শেষ ওভারে কুলদীপকে দেওয়ার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। ম্যাচের পরে সঞ্জু জানিয়ে দেন, “জানতাম ও আগে ভালো করেছে। ও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। অফ সিজনে ওয়াইড ইয়র্কার নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছে। সৈয়দ মুস্তাক আলিতে ওঁকে দেখেছি। দারুন সমস্ত ওয়াইড ইয়র্কার দিচ্ছিল।”