সিএসকে রিলিজ করে দিল রবীন্দ্র জাদেজাকে। আপাতত বাকি ম্যাচে খেলার বদলে জাদেজা বাড়িতে ফিরছেন। তবে সিএসকে সিইও কাশি বিশ্বনাথন জানালেন, পাঁজরে চোট লাগায় চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তারকা অলরাউন্ডারকে।
ঘটনা হল, সিএসকের অন্দরমহলের পরিবেশ নিয়ে এর মধ্যেই জল্পনা চালু হয়ে গিয়েছে। বুধবার সিএসকের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল আনফলো করে দেয় জাদেজার একাউন্ট। এরপরেই জাদেজার সঙ্গে সিএসকের সংঘাত নিয়ে চরম জল্পনা ছড়ায়। যদিও চেন্নাইয়ের সিইও পুরোপুরি এই বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
কাশি বিশ্বনাথন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়ে দিয়েছেন, "সোশ্যাল মিডিয়ায় কী হচ্ছে, তা মোটেই আমি ব্যক্তিগতভাবে ফলো করি না। তবে ম্যানেজমেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নিশ্চিত করতে পারি, কোনওরকম সমস্যা নেই। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ঘটছে, তা নিয়ে আমি মোটেই অবহিত নই। ভবিষ্যতে জাদেজাকে চেন্নাইয়ের পরিকল্পনায় বরাবর থাকবে।"
আরও পড়ুন: ক্যাপ্টেনশিপ চামচ দিয়ে খাইয়ে দেওয়া যায় না! জাদেজার কাছ থেকে নেতৃত্ব নিয়েই বিষ্ফোরক ধোনি
জাদেজার চোট নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "আরসিবি ম্যাচে জাদেজার চোট লাগে। তারপরে দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচেও ও খেলেনি। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে আপাতত ঠিক করা হয়েছে ওঁকে ছাড়াই খেলবে চেন্নাই। ওঁকে রিলিজ করার পরে বাড়ি ফিরে যাবে।"
সিএসকের তরফেও বিবৃতিতে জানানো হয়, "রিপোর্টে জাদেজার পাঁজরে চোটের হদিশ মিলেছে। রবিবার দিল্লি ম্যাচেও ও খেলতে পারেনি। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ও রয়েছে। আর পরামর্শ মেনেই ও আপাতত বাকি লিগে আর খেলতে পারবে না।"
মরশুম শুরুর আগেই ধোনি অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে জাদেজাকে ফ্র্যাঞ্চাইজির উত্তরসূরি বেছেছিলেন। এমনকি নিলামের আগে জাদেজা শীর্ষ রিটেনশন ১৬ কোটি এবং ধোনি ১২ কোটির প্রাপ্তিতেও অনুমোদন ছিল মাহির। পুরো বিষয়ের লক্ষ্য ছিল একটাই যাতে ধোনি পরবর্তী নেতাকে নিজের হাতে গ্রুম করে যেতে পারেন। জাদেজাও মাঠে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় ধোনির পরামর্শ নিতে কার্পণ্য করতেন না।
তবে নেতৃত্বের চাপ সামলাতে পারেননি তারকা। ব্যাটে-বলে দুই বিভাগেই শোচনীয় ফর্মে ছিলেন তারকা। শেষমেশ ধোনিকে নেতৃত্বের ব্যাটন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন জাড্ডু।
আরও পড়ুন: সেরা পেসারের ওপরেই ক্ষেপে লাল ঠান্ডা মাথার ধোনি, দেখুন শেষ ওভারের টানটান ভিডিও
পরে ধোনি জাদেজার নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। বলে দেন, "চামচ করে খাইয়ে দেওয়া অধিনায়কদের মোটেই সাহায্য করে না। মাঠে নিজেকেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সেই সিদ্ধান্তের জন্য ক্যাপ্টেনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। একবার ক্যাপ্টেন হলে অনেক কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। নিজের খেলার তো বটেই।”
"মনে হচ্ছিল, অধিনায়ক হওয়ার পরে ওঁর খেলায়, সেটা অনুশীলন হোক বা ব্যাট করার সময়ে তা প্রভাব ফেলছিল। জাদেজাকে একজন ব্যাটসম্যান, বোলার, ফিল্ডার হিসাবে ফেরানোটা জরুরি ছিল। অধিনায়কত্ব ছেড়ে যদি সেরা ফর্মের জাদেজাকে পাওয়া যায়, সেটাই আমরা চাই।”
“জাদেজা এবং আমার মধ্যে প্ৰথম থেকেই ঠিক ছিল। গত বছর থেকেই ও জানত যে ও ক্যাপ্টেন হতে চলেছে। অনেকদিন আগেই ওঁকে জানানো হয়েছিল, যাতে ও নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে পারে। এভাবেই রূপান্তর পর্ব সারতে চেয়েছিলাম আমরা।”
আরও পড়ুন: আর কোচ থাকছি না! কেকেআরকে জানিয়ে দিলেন ম্যাককালাম
“প্ৰথম দুই ম্যাচে জাদেজার কাছে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল। তারপর থেকে ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ওঁকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দিই। কারণ পাঁচ ম্যাচ পরে কারোর যেন মনে না হয়, যে স্রেফ টস করতে নামছি, অধিনায়ক তো অন্য জন! এভাবেই ধীরে ধীরে ট্রান্সজিশন পর্বে ঠিক করা হয়েছিল ফিল্ডিং সাজানো হোক বা বোলিং পরিবর্তন- প্ৰথম দুই ম্যাচে স্রেফ ওঁকে দেখিয়ে দেব। তারপরে থেকে ও নেতৃত্বের বিষয়টি ঠিক করে নেবে।”