RCB in IPL 2024 playoffs: প্লে অফে ওঠার লড়াইয়ে আইপিএল ক্ল্যাসিক উপহার দিয়েছে আরসিবি বনাম সিএসকে ম্যাচ। শেষ ওভারে আরসিবি থ্রিলারে জয়ী হয়েছে অবশেষে। বৃষ্টির জন্য খেলায় ৪১ মিনিটের বিলম্ব হয়েছিল। তবে সেটাই শেষ পর্যন্ত টানটান ম্যাচে ফারাক গড়ে দিল। যেভাবে পরতের পর ম্যাচে নাটকের অবতারণা ঘটল দেখে নেওয়া যাক:
গল্পে টুইস্ট:
ফাফ দু প্লেসিস এবং বিরাট কোহলি আরসিবিকে দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিলেন। সেই সময়েই সিএসকেকে স্বস্তি দিয়ে বৃষ্টি বিরতি। তাড়াহুড়ো করে মাঠকর্মীরা কভারের নিচে হালকা আস্তরণ ঠিক মত মাঠের সর্বত্র মেলে দিতে পারেননি। এতে সুবিধা হল সিএসকে বোলারদের। নতুন করে খেলা চালু হওয়ার পর আর্দ্রতার কারণে বল সহজেই গ্রিপ করা যাচ্ছিল এবং টার্ন হচ্ছিল। মহেশ থিকসানা এবং মিচেল স্যান্টনার আরসিবির ব্যাটে লাগাম দিতে সফল হন। হঠাৎ করেই বাউন্ডারির খরা দেখা যায়। বৃষ্টির পর ম্যাচ পুনরায় শুরু হওয়ার পর তিন ওভারে আরসিবি যোগ করতে পেরেছিল মাত্র ১১ রান। তবে আরসিবির পক্ষে ভাল খবর, উইকেট হারাতে হয়নি তাঁদের।
আরসিবির প্রত্যাঘাত:
এই তিন ওভারে ভিজে মাঠে বল সেভাবে মুভ করতে পারছিল না। এমন অবস্থায় আরসিবিকে খাপ খুলতেই হত। রবীন্দ্র জাদেজা এরপরে আক্রমণে আসতেই আরসিবি চড়াও হয় তাঁর ওপর। বল টার্ন করা অবস্থাতেই কোহলি জাদেজাকে স্লগে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন। ডুপ্লেসিস-কোহলি গ্যাপ খুঁজে খুঁজে বাউন্ডারি হাকাচ্ছিলেন। সিএসকে এতে বলা শুকনো করে দিতে বাধ্য হয়।
ব্যাটে ঝড়:
পাথিরানা এবং মুস্তাফিজুরের মত বোলিং অস্ত্রকে হারানোর পর সিএসকের ডেথ ওভারের বোলিং পরিকল্পনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ষষ্ঠ স্ট্যাম্প বরাবর ফুল লেংথের বোলিং। তবে ভেজা বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন সিএসকে বোলাররা। শনিবার রাতে সিএসকে বোলাররা মোট ১৬টি ফুলটস করে বসেন। যা সরাসরি বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন আরসিবি ব্যাটাররা। দু প্লেসিস, কোহলির পর রানের গতি অব্যাহত রাখেন রজত পাতিদার, ক্যামেরন গ্রিন। পরে দারুণ ক্যামিও খেলে যান দীনেশ কার্তিক, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা।
ম্যাক্সওয়েল টাচ
সিএসকের ব্যাটিং লাইনআপে বাঁ-হাতি ব্যাটারদের আধিক্য থাকায় ম্যাক্সওয়েলকে আক্রমণে আনতেই হত আরসিবিকে। স্বপ্নিল সিং এবং করণ শর্মারা সেভাবে সুবিধা করতে না পারায় অনেক কিছুই নির্ভর করছিল ম্যাক্সওয়েলের ওপর। ম্যাড ম্যাক্স হতাশ করেননি। ইনিংসের প্রথম বলেই ফেরান রুতুরাজ গায়কোয়াডকে। এমনকি আরসিবি বোলারদের মধ্যে রাতের সবথেকে কৃপণতম বোলার ছিলেন অজি অলরাউন্ডার। এমনকি স্পিন সংহারক হিসাবে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া শিভম দুবেও সুবিধা করতে পারেননি ম্যাক্সওয়েলের সামনে। মাত্র ৯ রান খরচ করতে হয় অজিকে। ৪ ওভারে ম্যাক্সওয়েল দেন মাত্র ২৫ রান।
দু প্লেসিসের ক্ষিপ্রতা
অবিশ্বাস্য ক্যাচে দু প্লেসিস যখন মিচেল স্যান্টনারের ক্যাচ তালুবন্দি করলেন, তখন ভেবে নেওয়া হয়েছিল সিএসকের সেখানেই সব শেষ। সেই সময় সিএসকে ছিল ১২৯/৬। তবে আরসিবি পেসাররা এরপরে ভিজে বল সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায়। ধোনি-জাদেজা এই সুযোগেই প্লে অফের যোগ্যতা অর্জন করার স্কোরের কাছে, আরও কাছে নিয়ে যান দলকে। শেষ ওভারে সিএসকের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। ভেবে নেওয়া হয়েছিল বিদায় হতে চলেছে আরসিবির-ই। শেষ ওভারের প্ৰথম বলেই ধোনির বিশাল ছক্কার পর জয়ের জন্য সমীকরণ দাঁড়ায় ৫ বলে ১১। তবে ধোনির সেই ছক্কাতেই আসলে ম্যাচ হেরে গেল সিএসকে। কথা অদ্ভুত হলেও সেটা সত্যি।
আরও পড়ুন- কোহলিদের জন্য স্পেশ্যাল বার্তা দেশছুট বিজয় মালিয়ার, প্লে অফে RCB পৌঁছতেই এল বড় আপডেট
ভাগ্যের পরিহাসে বল বদল
ধোনির ছক্কা চিন্নাস্বামীর ছাদে আছড়ে পড়েছিল। ফলে আম্পায়াররা নতুন বল নিতে বাধ্য হন। নতুন বলে ইয়র্কার বরাবরের মত ঝুঁকিপূর্ণ। দয়ালকে সেই সময়েই ক্যাপ্টেন দু প্লেসিস কাটারের পরামর্শ দেন। দয়াল ব্যাক অফ দ্যা হ্যান্ড স্লোয়ার বল করেন। ধোনির শট আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসে ডিপ স্কোয়ার লেগ অঞ্চলে। তারপর দয়াল একের পর এক কাটারে ম্যাচ ফিনিশ করবেন। পুরোনো ভিজে বল হলে হয়ত সিএসকেই হাসতে হাসতে ফাইনালে উঠে যেত। ধোনির ছক্কায় বল বদলাতেই ভাগ্য বদলে গেল আরসিবির। ভাগ্যের পরিহাস ছাড়া একে আর কী-ই বা বলা যায়!