IPL 2023 GT vs CSK Final Match Report:
গুজরাট: ২১৪/৪ (২০ ওভার)
সিএসকে: ১৭১/৫ (১৫ ওভার)
পাঁচবারের মত আইপিএল চ্যাম্পিয়ন সিএসকে। সর্বাধিকবার আইপিএল জয়ের ক্ষেত্রে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই ছুঁয়ে ফেলল রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-কে। আর এই জয়ের নেপথ্য নায়ক সেই এমএস। টসে জিতেছিলেন। প্ৰথমে বোলিং।
স্কোরবোর্ডে গুজরাট ২১৫ তোলার পর মনে হয়েছিল ধোনির প্রথমে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়ত বুমেরাং হয়ে গেল। তবে দিনের শেষে ধোনিই বাজিগর, প্রমাণ হয়ে গেল।
দুর্ধর্ষ বোলিং করা মোহিত শর্মা, ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠা সাই সুদর্শন মাঠেই ভেঙে পড়লেন। দুর্ধর্ষ খেলেও তাঁরা পরাজিতের তালিকায়। ২৮ তারিখের ফাইনাল গড়াল ৩০ তারিখ পর্যন্ত। বৃষ্টিতে প্ৰথমে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়া, রিজার্ভ ডেতেও টানা বৃষ্টি। অন্তহীন অপেক্ষা। তারপর সেই চ্যাম্পিয়ন সিএসকে। কাছে এসেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ট্রফি ছুঁতে পারলেন না হার্দিক পান্ডিয়ারা। ট্রফি জেতার কাছে এসেও বুক ভাঙল টাইটান্স-এর।
সিএসকে রান চেজ করার সময় প্ৰথম ওভার থেকেই বৃষ্টি নামে। লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল ধোনিদের রান চেজ দেখার জন্য। বৃষ্টি থেমে গেলেও মাঠের প্র্যাকটিস পিচে কাদার জন্য ম্যাচ পুনরায় শুরু হয় মাঝরাতে। ওভার কমে আসে। ২০ ওভারে ২১৬-র জায়গায় সিএসকের জন্য ১৫ ওভারে টার্গেট দাঁড়ায় ১৭১-এ।
বৃষ্টিতে কার্যত থমকে যাওয়া ম্যাচেই ঝড় তোলেন সিএসকের দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড (২৬ বলে ১৬) এবং ডেভন কনওয়ে (২৫ বলে ৪৭)। গুজরাট বোলারদের ওপর চড়াও হয় দুজনেই ৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। দুজনে পাওয়ার প্লে-র পরেই আউট হয়ে যান। তবে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা।শিভব দুবে (২১ বলে ৩২) এবং অজিঙ্কা রাহানে (১৩ বলে ২৭)।
শেষ তিন ওভারে সিএসকের দরকার ছিল ৩৮ রান। ১৩ তম ওভারে টুইস্টের ইঙ্গিত ছিল মোহিত শর্মা সেই ওভারেই আম্বাতি রায়ডু এবং ধোনিকে আউট করে গুজরাটকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।
তবে শেষ মুহূর্তে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন জাদেজা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৩ রানের। প্ৰথম চার বলে মাত্র ৩ রান খরচ করেন মোহিত শর্মা। তবে নাটকীয়ভাবে শেষ দুই বলে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন রবীন্দ্র জাদেজা।
টসে জিতে প্ৰথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। হার্দিক পান্ডিয়া যদিও বলে গিয়েছিলেন টসে জিতলে তিনি ব্যাটিং-ই নিতেন। গুজরাট রানের পাহাড় তোলার পরে মনে হয়েছিল ধোনির এই সিদ্ধান্ত মনে হয়েছিল বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে। তবে ধোনি জানতেন বৃষ্টি হবে। বৃষ্টিতে ওভার কমে গিয়ে স্বল্প ওভারে হিসেবি রান চেজ করতে হবে। সেটাই হল।
গুজরাট ফাইনালে বেশ সতর্কভাবে শুরু করেছিল ঋদ্ধিমান সাহা-শুভমান গিল যদিও রান তোলার গতিতে লাগাম টানেননি। ঋদ্ধি-গিলের ওপেনিং জুটিতেই ৬৭ রানের পার্টনারশিপ তুলে ফেলে টাইটান্সরা। তবে স্ট্যাম্পের পিছনে মহেন্দ্র সিং ধোনির তুখোড় স্কিলে মাত্র ৩৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়।
ঋদ্ধিমান অন্যপ্রান্তে হাফসেঞ্চুরি করলেও রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হতে হয় তাঁকে। এরপরে পুরোটাই সুদর্শন পার্টনারশিপ। সাই সুদর্শনের সঙ্গে ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া ৩৩ বলে ৮৮ করে গুজরাটের রান তোলার গতিতে ঝড়ের আমদানি করে যান। পার্টনারশিপের অধিকাংশ রানই আসে সুদর্শনের ব্যাট থেকে। মাত্র ৪ রানের জন্য শতরান হাতছাড়া হয়ে সুদর্শনের। ৪৭ বলে ৯৬ করে শেষ ওভারে ফিরতে হয় সুদর্শনকে। নিজের ইনিংসে হাঁকালেন ৮ বাউন্ডারি, হাফডজন ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। তবে তার আগে দলকে ২১৫ রানের বিশাল পাহাড়ে পৌঁছে দেন। বিশ্বক্রিকেটে আনক্যাপড প্লেয়ারদের মধ্যে কেন সুদর্শনকে অন্যতম সেরা প্রতিভা ধরা হয়, তা তিনি প্রমাণ করে গেলেন ফাইনালে। হার্দিক পান্ডিয়া ১২ বলে ২১ করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান।
ফাইনালে পাথিরানা, দীপক চাহাররা সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারলেন না। সিএসকে বোলারদের মাঠের সমস্ত বাউন্ডারিতেই আছড়ে ফেলেন গুজরাট ব্যাটাররা। দীপক চাহার, রবীন্দ্র জাদেজা একটা করে উইকেট নেন। শেষ ওভারে পাথিরানা জোড়া উইকেট শিকার করেন।