ফুটবল ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ফেললেন দুই বঙ্গ সন্তান। ব্যারাকপুরের প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় ও সোদপুরের অসিত সরকার। গ্রুপ-সি-তে ইরান বনাম কম্বোডিয়া ম্যাচ পরিচালনা করলেন প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায়। সহকারীর রেফারির ভূমিকায় ছিলেন আবার অসিত সরকার এবং টনি জোসেফ লুই।
ইরানে এই ম্যাচ ঘিরেই দেশ জুড়ে প্রায় উৎসবের চেহারা নিয়েছিল। কারণ ৪০ বছর পরে মহিলাদের কোনও ফুটবল মাঠে দর্শক হওয়ার অনুমতি মিলেছিল। ইরানের ফুটবল মাঠে মহিলাদের প্রবেশ একদমই নিষিদ্ধ। এক সপ্তাহ আগেই পুরুষের ছদ্মবেশে এক মহিলা ফুটবল স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন। তবে তিনি ধরা পড়ে যান। সরকারের রোষ থেকে বাঁচতে গায়ে আগুন লাগিয়ে রেহাই মিলেছিল তাঁর। তারপর বয়ে গিয়েছে অনেক জল। গোটা ঘটনে বিশ্বের শিরোনামে উঠে আসায় কড়া হয়েছিল ফিফা।
ফিফার চাপে পড়েই ইরানের ফুটবল সংস্থা ফুটবল স্টেডিয়ামে মহিলাদের প্রবেশে অনুমতি দিয়েছিল। ফলে গোটা দেশেই সাজো সাজো রব ছিল। আলাদা করে মহিলাদের জন্যই চার হাজারের কাছাকাছি টিকিট ছাপিয়েছিল ইরান ফুটবল ফেডারেশন। ইরানের পতাকা হাতে তেহরানের স্টেডিয়ামের বাইরে মুখে দেশের পতাকার রং লাগাতে দেখা গিয়েছিল মহিলাদের।
এই ঐতিহাসিক ম্যাচ পরিচালনা করেই নজির গড়লেন দুই বঙ্গসন্তান প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসিত সরকার। শিরোনামে উঠে আসা এই ম্যাচ ইরান কম্বোডিয়াকে ১৪-০ গোলে হারিয়েছে। ম্যাচের সময় আধঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই চার-চারটে গোল করে ফেলেছিলেন ইরানি ফুটবলাররা। নব্বই মিনিটের শেষে স্কোরবোর্ডে ১৪ গোল। ঐতিহাসিক ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতেই যেন প্রতিপক্ষকে গোলের ঢেউয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন সর্দার আজমুনরা।
কেমন লাগল ঐতিহাসিক ম্যাচের সাক্ষী থাকতে পেরে? প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় তেহরান থেকে দোহা-কাতার হয়ে ভারতের ফ্লাইট ধরার মাঝে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বললেন, ফিফা রেফারি হিসেবে তিনি মিডিয়ার কাছে জানাতে পারবেন না। ঘটনা যাই হোক, ডার্বি ম্যাচ খেলাতে ভিন রাজ্য থেকে রেফারি আনা হয়েছিল। তবে বিদেশে স্মরণীয় ম্যাচে সদম্ভ উপস্থিতি ব্রাত্য বঙ্গ রেফারিদেরই। আইএফএ-র কর্তারা কী শুনছেন?