কাশ্মীর প্রসঙ্গে পরোক্ষে মোদি সরকারের পাশেই দাঁড়ালেন ইরফান পাঠান। কাশ্মীরে পরিস্থিতি বেশ বিপজ্জনক। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে উপত্যকায়। পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের বিপক্ষে আটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। তারপরেই ইরফান পাঠান সরাসরি জানালেন, দেশের সেনাবাহিনীর জন্য তাঁর হৃদয় কাঁদছে।
রবিবারেই কাশ্মীর থেকে চলে এসেছেন দেশের একসময়ের সাড়া জাগানো অলরাউন্ডার। কাশ্মীর ক্রিকেট দলের সঙ্গে মেন্টর কাম ক্রিকেটার হিসেবে যুক্ত ছিলেন বরোদার তারকা। প্রাক মরশুম প্রস্তুতি চলছিল উপত্যকায়। তবে আচমকা পরিস্থিতির অবনমন ঘটায় সরাসরি সমস্ত ক্রিকেটারদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে ফিরেই ইরফানের টুইট, "অমরনাথ যাত্রীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ, বিষয়টি আশঙ্কার। এই কারণেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিজেদের ভ্রান্ত ধারণা বদলান। সমস্ত কথায় ধর্মকে টেনে আনবেন না। প্রতিটি কথায় প্রমাণ চাওয়া বন্ধ করুন।"
আরও পড়ুন কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ পাঠানকে! উপত্যকায় ঘনাচ্ছে বড়সড় বিপদ
কেকেআরের মন্দ-ভাগ্য! দুই ক্রিকেটার ছাড়ার মুখে নাইট-সংসার
ধাওয়ানের স্ত্রী-র মাথায় কেন সবসময়েই টুপি! কারণ জেনে রাখুন
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ৩৭০ ধারাও রদ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্য়ান্য অঙ্গরাজ্যের মতোই সমান সুবিধা দেওয়া হবে জম্মু-কাশ্মীরকে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই বিরোধী রাজনৈতিক দল সরব হয়েছে। মোদি সরকারের অতিসক্রিয়তা নিয়ে সরব হয়েছে তাঁরা। পরোক্ষে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একহাত নিয়ে পাঠানের এই ট্যুইট। এমনটাই ভাবছে ওয়াকিবহাল মহল।
দ্বিতীয় টুইটে পাঠান আরও জানিয়েছেন, "ওখানকার সেনাবাহিনী এবং ভারতীয় কাশ্মিরী ভাই-বোনদের জন্য় আমার হৃদয় এবং মন এখনও কাশ্মীরে পড়ে রয়েছে।" বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিদের উদ্দেশ্যে ইরফান পাঠানের এই টুইট-বার্তা গোটা দেশের মন কেড়ে নিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হানার আশঙ্কা ছিল। তাই দ্রুত উপত্যকা ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ইরফান পাঠানকে। শুধু ইরফান পাঠানই নয়, জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত ক্রিকেটার থেকে সাপোর্ট স্টাফ, যাঁরা কাশ্মীরের বাসিন্দা নন, তাঁদেরই আপাতত ভূস্বর্গ ছাড়তে বলা হয়েছিল। সামনেই ঠাসা ঘরোয়া ক্রিকেট মরশুম। চলতি মাসের ১৭ তারিখ থেকেই শুরু হচ্ছে দলীপ ট্রফি। তারপরে সর্বভারতীয় একদিনের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা বিজয় হাজারে শুরু হবে। রঞ্জি শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরের ৯ তারিখ থেকে। এমন অবস্থাতেই আতান্তরে জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেট।
সর্বভারতীয় এক প্রচারমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট বোর্ডের সিইও সৈয়দ আশিক হুসেইন বুখারি জানিয়েছেন, “জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি পাঠান সহ বাকি সাপোর্ট স্টাফদেরও কাশ্মীর ছেড়ে যেতে বলেছে। রবিবারেও ওরা উপত্যকা ছাড়ছে। যে সমস্ত নির্বাচকরা এই এলাকার নন, তাঁদেরও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
গত মরশুম থেকেই ইরফান পাঠান জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট দলের সঙ্গে মেন্টর এবং ক্রিকেটার হিসেবে যুক্ত। ইরফান পাঠানের সঙ্গে কোচ মিলাপ মেওয়াদা এবং ট্রেনার সুদর্শন ভিপি-ও রবিবারে কাশ্মীর ছাড়ছেন। এমনিতেই কাশ্মীরে বড়সড় নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। অমরনাথ যাত্রাও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকেও ক্রিকেট সংক্রান্ত সমস্ত কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। শ্রীনগরের শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামে ১০০-এর বেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্যাম্প করা হচ্ছিল। তাঁদেরও বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।