ইস্টবেঙ্গল: ০
এটিকে মোহনবাগান: ৩ (রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো)
টোটাল ফুটবল। আর সেই ফুটবলেই খড়কুটোর মত উড়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। মান্ডবীর তীরে যা হওয়ার ছিল, কার্যত সেটাই হল। শ্রী হীন ইস্টবেঙ্গলকে বিধ্বস্ত করে ডার্বির রঙ সবুজ মেরুনে রাঙিয়ে দিলেন রয় কৃষ্ণরা।
প্ৰথমার্ধের ২০ মিনিট পেরোতে না পেরোতেই ৩-০। পঁচাত্তরের সেই মহালজ্জার পাল্টা মোহনবাগান দিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গেল ম্যাচের আড়মোড়া ভাঙার আগেই। তবে দুঃস্বপ্নের ফুটবল খেললেও সেই লজ্জার কলঙ্ক নিতে হচ্ছে না মানোলোর দলকে। ফার্স্ট কোয়ার্টারে তিন গোল জালে জড়ানোর পরে এটিকে এমবি গোটা ম্যাচে ব্যবধান বাড়াতে পারল না কৃষ্ণ বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে বসায়।
আরও পড়ুন: ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে বড়ে মিঞা-র স্মৃতি! বেনজির সাহায্য নিয়ে হাত বাড়াল ইস্টবেঙ্গল
জামশেদপুর ম্যাচে তা-ও বিস্তর গলদ সত্ত্বেও এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছিল মানোলোর দল। তবে হাবাসের ছেলেদের সামনে ইস্টবেঙ্গল যে সমস্যায় পড়বে তা জানাই ছিল।
ম্যাচের শুরু থেকেই সবুজ মেরুন ঝড়। বৌমাস, দীপক, মনবীররা মাঝমাঠ থেকে আপফ্রন্টের দখল নিয়ে গেলেন বাঁশি বাজার সময় থেকেই। একের পর এক আক্রমণের স্রোত। আর সেই স্রোতে ভেসে গেল ইস্টবেঙ্গলের যাবতীয় প্রতিরোধ।
১২ মিনিটেই গোল বন্যার সূচনা করে দেন রয় কৃষ্ণ। ডানদিক থেকে প্রীতম কোটাল ওভারল্যাপে উঠে অরক্ষিত থাকা কৃষ্ণকে বল বাড়িয়েছিলেন। সেখান থেকেই দুরন্ত ভলিতে ১-০।
আরও পড়ুন: মোহনবাগান থেকে ইস্টবেঙ্গলে! বেঞ্চারিফার স্টাফ যোগ দিলেন লাল-হলুদে
সেই গোলের হ্যাংওভার কাটার আগেই দ্বিতীয় গোল। এবার জনি কাউকোর থ্রু বল পেয়ে চমৎকার ফিনিশ করেন মনবীর। ম্যাচ কার্যত সেখানেই শেষ!
জোড়া গোল হজম করে হতোদ্যম হয়ে পড়েন অরিন্দমও। ২৩ মিনিটে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে মোক্ষম ভুল করে বসেন। ঠিকমত গ্রিপ করতে না পারায় হাত ফস্কে যায় বল। বক্সের মধ্যে অরিন্দমকে কাটিয়ে ৩-০ করে দেন লিস্টন। এরপরেই চোট পেয়ে বেরিয়ে যান অরিন্দম। তাঁর জায়গায় মাঠে নামেন শুভম সেন। শুভম অবশ্য বাকি ম্যাচে আর গোল হজম করেননি।
রক্ষণ, থেকে মাঝমাঠ এবং আক্রমণ- গোটা ম্যাচেই কোনও তালমিল নজর পড়ল না ইস্টবেঙ্গলের। টমিস্লাভ মার্সেলা, প্রেসিকে বারবার ডিফেন্ড করার সময় এক লাইনে চলে আসতে দেখা গেল। আইএসএলে শনিবারই প্ৰথম খেলতে নেমেছিলেন ড্যারেন সিডওয়েল। একদমই নজর কাড়তে পারলেন না। আক্রমণে বারবার একা হয়ে গেলেন পেরোসেভিচ। মাঝমাঠ থেকে কোনও সাহায্যই পেলেন না ক্রোট তারকা।
এসব ভুল শুধরে পরের ম্যাচে স্বমহিমায় ফিরতে পারবে মানোলোর ইস্টবেঙ্গল, সেটাই এখন দেখার।
ইস্টবেঙ্গল: অরিন্দম ভট্টাচার্য, টমিস্লাভ মার্সেলা, ফ্রানজো প্রেসি, রাজু গায়কোয়াড, জয়নার লৌয়েঙ্ক, লালরিনিয়ালা হামতে, বিকাশ জাইরু, ড্যারেন সিডওয়েল, মহম্মদ রফিক, নাওরেম মহেশ, আন্তোনিও পেরোসেভিচ
এটিকে মোহনবাগান: অমরিন্দর সিং, জনি কাউকো, কার্ল ম্যাকহিউ, হুগো বৌমাস, মনবীর সিং, রয় কৃষ্ণ, লিস্টন কোলাসো, শুভাশিস বোস, প্রীতম কোটাল, দীপক টাংরি, লেনি রদ্রিগেজ
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন