ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে আগেই জানানো হয়েছিল মোহনবাগানের হয়ে আইএসএল জয়ী ডিফেন্ডার স্লাভকো দামজানোভিচের ঠিকানা হতে চলেছে বেঙ্গালুরু এফসি। সেটাই হল। বুধবার ব্লুজদের তরফে সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, সেন্টার-ব্যাক স্লাভকোর সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করছে বেঙ্গালুরু।
কলকাতা ছেড়ে যাওয়া মন্টিনেগ্রিয়ান ডিফেন্ডার বুধবার সরকারি বিবৃতিতে বলেছেন, "বেঙ্গালুরু এফসি পরিবারের অংশ হতে পেরে দারুণ লাগছে। ক্লাব এর আগে দুটো দুর্দান্ত মরশুম কাটিয়েছিল। তবে ভাগ্য সহায় না হওয়ার কারণে আইএসএল খেতাব জিততে পারেনি। সতীর্থ, কোচিং স্টাফ এবং সমর্থকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। লক্ষ্য একটাই দলকে আইএসএল ট্রফি এনে দেওয়া। এমন একটা দলের অংশ হতে চাই, যে দল সাফল্যে বলীয়ান হয়ে উঠবে।"
মন্টিনেগ্রোর নিকসিচে জন্মগ্রহণ করা তারকা সাবেক যুগস্লোভাকিয়ার ফুটবলে খেলেছেন। সেলিক নিকসিচ, মগ্রেন, সুজেতস্কা নিকসিচ এবং মরনারের মত ক্লাবে খেলেছেন। এরপরে মন্টিনেগ্রো ছেড়ে সার্বিয়ান লিগে খেলেছেন স্পর্তাক সাবোটিকা, বাস্কা ১৯০১-এর হয়ে। ২০২১-এ চেন্নাইয়িন এফসিতে নাম লেখানোর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা, হাঙ্গেরি এমনকি উজবেকিস্তান লিগেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে স্লাভকোর।
বেঙ্গালুরুর হেড কোচ সাইমন গ্রেসন তারকা স্টপারকে সই করিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে দিয়েছেন, "এটিকে মোহনবাগানের জার্সিতে গত বছর আইএসএল-এ অনবদ্য ফুটবল উপহার দিয়েছে স্লাভকো। দলে ও জয়ের মানসিকতা নিয়ে আসবে। দলের রক্ষণভাগে ভারসাম্য যেমন আরও জোরালো হবে, তেমন শক্তিও বাড়বে। সন্দেশকে হারানোর পর রক্ষণে আমাদের স্লাভকোর মত অভিজ্ঞ কাউকে প্রয়োজন ছিল। তাই ওঁকে সই করাতে পেরে ভালো লাগছে। ওঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।"
গত সিজনে সেন্ট্রাল ব্যাক বোঝাই স্কোয়াড গড়েছিল এটিকে মোহনবাগান। একসঙ্গে চোট পাওয়া তিরিকে ধরে রেখে কার্ল ম্যাকহিউ, ফ্লোরেন্টিন পোগবা, ব্রেন্ডন হ্যামিলকে রাখা হয়েছিল বাগানের রক্ষণের দায়িত্বে। তবে বাগান যে শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন হল তাঁর সিংহভাগ কৃতিত্বই ছিল জরুরিকালীন ভিত্তিতে সই করা মন্টিনেগ্রোর সেন্ট্রাল ব্যাক স্লাভকো দামজানোভিচের।
পোগবা, জনি কাউকো এবং তিরি তিন তারকা চোটের খাতায় মরসুমের মাঝপথে নাম লেখাতেই তড়িঘড়ি বাগান কোচ নিয়ে আসেন স্লাভকোকে। বাকিটা ইতিহাস।
আরও পড়ুন: কামিন্সকে সই করিয়ে মুখ খুললেন ফেরান্দো, অজি তারকাকে বাছাই করার আসল কারণ ফাঁস
টুর্নামেন্ট শেষে লিগের অন্যতম সেরা স্টপার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।ক্যাপ্টেন প্রীতম কোটালের সঙ্গে রক্ষণে পার্টনারশিপে বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ফয়সালা করে দিয়েছেন স্লাভকো। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির সেন্টার ব্যাক বিপক্ষে আক্রমণ যেমন ছিন্নভিন্ন করেছেন, তেমন ডিপ ডিফেন্স থেকেই আক্রমণের সূচনা হয়েছে তাঁর পা থেকে। নিজের উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে সেট পিস থেকে মস্তানি দেখিয়ে গিয়েছেন।
এর আগেও অবশ্য চেন্নাইয়িন এফসিতে খেলে গিয়েছিলেন। তবে এরকম মারণ-ফর্মে আবির্ভুত হননি তিনি। কোচ ফেরান্দোর হাতে পড়ে ঝকঝকে করেছেন স্লাভকো লিগের বাকি সিজনে। বাগানের কাছ থেকে মরসুমের মাঝে অফার পান, তখন তিনি সার্ব লিগের নামি ক্লাব নোভি পাজারের হয়ে।
কলকাতা ডার্বিতে গোল করার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ময়দানে তখনও ‘অপরিচিত’ স্লাভকোকে। সঙ্গেসঙ্গেই ফ্যান-ফেভারিট হয়ে যান তিনি। আর সেই গ্র্যান্ড ফাইনালে স্লাভকো নির্বিষ করে দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর দুই তারকা ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রী এবং রয় কৃষ্ণকে।