জ্যাং-কুন লি। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানের এই কাবাডি খেলোয়াড় গত সাত বছরে প্রায় অর্ধেক ভারতীয় হয়ে গিয়েছেন। সৌজন্যে প্রো-কাবাডি লিগ (পিকেএল)। এই টুর্নামেন্টের প্রথম ছ'মরসুম তিনি বাংলার টিম বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের হয়েই খেলেছেন। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল বিদেশি রেইডারের তকমা ছিনিয়ে নেন বছর ছাব্বিশের লি ।
সম্প্রতি লি খেলে গেলেন নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। কাবাডির এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক লিগের সপ্তম সংস্করণের কলকাতা চ্যাপ্টারে পাওয়া গেল ছ'ফুটের কোরিয়ানকে। লি এখন আর এই শহরের নন। দল বদলেছেন তিনি। এখন তাঁর নতুন আস্তানা পাটনা পাইরেটস। ৪০ লক্ষ টাকায় তাঁকে নিলামে নিয়েছে পাটনার ফ্র্যাঞ্চাইজি। বাংলার মানুষ তাঁকে ভালবেসে নাম দিয়েছিলেন 'বাবুমশাই অফ বেঙ্গল'। পাটনাতে গেলেও তাঁর মন কিন্তু এখনো পড়ে রয়েছে কলকাতাতেই। 'রসগোল্লা'য় মজে রয়েছেন তিনি। এখনও লি-র কানে বাজে 'আমি তোমাকে ভালবাসি।'
আরও পড়ুন: ইরানিয়ান অলরাউন্ডারে শক্তিশালী বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স, রেডারদের জন্য় গর্ব কোচের
জয়পুরের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে লি
গত ১২ সেপ্টেম্বর ছিল প্রো কাবাডি লিগে কলকাতা সংস্করণের শেষ দিন। লি-র পাটনা পাইরেটেস খেলেছিল জয়পুর পিঙ্ক প্যান্থার্সের বিরুদ্ধে। আগুনে ফর্মে ছিলেন তাঁদের স্টার রেডার লি। ম্যাচটা পাটনা ৩৬-৩৩ জিতে নিয়েছিল। আর এই ম্যাচের পরেই লি একান্তে কথা বললেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে। সাংবাদিক বৈঠকের পরে একদম খোলামেলা মেজাজে পাওয়া গেল তাঁকে। কথোপকথনের কিছু নির্বাচিত অংশ দেওয়া রইল এখানে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় প্রো কাবাডির ইতিহাস প্রদীপের, ইন্ডোরে আসছেন হাজার-হাজার মানুষ
বাংলার বদলে এখন পাটনার হয়ে খেলেছেন, কলকাতার সমর্থকদের কি মিস করেন?
অবশ্যই আমি কলকাতার সমর্থকদের মিস করি। প্রচুর সমর্থক এসেছেন। আমার হয়ে গলা ফাটালেন তাঁরা। ওনাদের জন্যই খেলার আরও সাহস পেলাম। আমাকে শক্তি জোগাল কলকাতা।
আপনি কি আদতে মার্শাল আর্টের মানুষ?
আমি জুডো খেলতাম। ১০ বছর বয়সেই জুডো শেখা শুরু করি। জুডোর ফলে কাবাডিতে, ক্যাচ গ্রিপ, স্টেপ, বডি কনট্যাক্ট অনেক ভাল হয়েছে।
জুডো থেকে কাবাডিতে এলেন কী করে?
২০১১-তে কাবাডি শুরু করি। তখন আমার বয়স ছিল ১৯। কোরিয়াতে কবাডি নতুন খেলা ছিল তখন। ভীষণ জনপ্রিয় খেলা হয়ে ওঠে ওখানে। বাবা-মা'ও সমর্থন জুগিয়েছিলেন আমাকে। ভাবলাম কাবাডিটাই শুরু করি।
গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস
বাংলার কোন কথা আর খাবারের কথা লি-র মনে পড়ে?
সেভাবে মনে করতে পারছি না এখন। কিন্ত আপনারা আই লাভ ইউ-কে বলেন আমি তোমাকে ভালবাসি। এটা আমার খুব মনে পড়ে। এটাই শুধু মনে আছে। খাবার বললেই রসগোল্লার কথা মনে পড়ে। ভীষণ সুস্বাদু।
গত বছর এশিয়ান গেমসে রুপো পেয়েছিলেন? দেশের হয়ে কোন কোন টুর্নামেন্টে নামতে চলেছেন?
বিচ কাবাডি, বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমস রয়েছে। সেগুলো নিয়েই ভাবছি।
বাংলার বদলে পাটনায় কেন এলেন?
আমি নতুন অভিজ্ঞতার জন্য দল বদলাতে চেয়েছিলাম। পাটনার দল, কোচ, ম্যানেজার ভীষণ ভালো। ওঁদের থেকে ভালবাসা, আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এগিয়ে যাচ্ছি।