/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/Lata_India.jpg)
কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। কোভিডের সেই যুদ্ধ আর জিততে পারলেন না তিনি। গায়িকা হিসাবে গোটা বিশ্বে সমাদৃত হলেও ক্রিকেটের প্রতি তাঁর প্রেম নতুন কোনও বিষয় নয়। মুম্বইয়ের ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। স্রেফ খেলা দেখাই নয় , সিসিআই-তে ক্রিকেট বিষয়ক যে কোনও আলোচনায় শ্রোতার ভূমিকায় পাওয়া যেত মহাগায়িকাকে। মাঠে খেলা দেখতে প্রায়-ই হাজির থাকতেন তিনি।
৭০-৮০'র দশকে ওয়াংখেড়েতেও অবাধ যাতায়াত ছিল তাঁর। টেস্ট খেলা থাকলেই ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরে সঙ্গে হাজির হয়ে যেতেন ওয়াংখেড়েতে।
১৯৮৩-তে কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারত প্ৰথমবার বিশ্বকাপ জয়ের পর দেশে ক্রিকেটের মানচিত্রই বদলে যায়। তবে সেই সময় এখনকার মত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ধনী ছিল না। নিয়মিত খেলার জন্য ক্রিকেটারদের অর্থ যোগান দিতেই হিমশিম খেত বিসিসিআই।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ধোনিদের জয়ের জন্য গোটা ম্যাচে উপবাস! লতার রক্তেই ছিল ক্রিকেট-প্রেম
এমন আর্থিক দৈন্যতার মধ্যেই ভারতের বিশ্বকাপ জয় নতুন সমস্যা হিসাবে হাজির হয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কাছে। আর্থিক প্রতিকূলতার জন্য বোর্ড কীভাবে ঐতিহাসিক এই জয়ে অবদানকারী ক্রিকেটারদের পুরস্কার তুলে দেবে, তা নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিল না বিসিসিআইয়ের।
Just found this. #LataMangeshkar night IGI stadium in Delhi after we won the World Cup in 1983. pic.twitter.com/p4DDYiyQZh
— Kirti Azad (@KirtiAzaad) February 6, 2022
সেই সময় ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বেসর্বা ছিলেন রাজ সিং দুঙ্গারপুর। তিনি সমাধান হিসাবে নতুন উপায় বের করলেন। তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ লতা মঙ্গেশকরকে অনুরোধ করেন দিল্লির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে কনসার্ট করার জন্য। বন্ধুর আবেদনে সাড়া দিয়ে লতা মঙ্গেশকর ২ ঘন্টা ব্যাপী কনসার্ট আয়োজন করলেন।
লতার কনসার্টের সৌজন্যে বোর্ড শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপজয়ী প্রত্যেক ক্রিকেটারকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দিতে সমর্থ হয়। সেই কনসার্টের জন্য এক টাকাও নেননি সুরসম্রাজ্ঞী।
আরও পড়ুন: ‘২০ বছরের লেডি নেই, বিশ্বাসই হচ্ছে না’, সুরসম্রাজ্ঞীর প্রয়াণে মুষড়ে পড়লেন সৌরভ
১৯৮৩-এ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য সুনীল ওয়ালসন পিটিআই-কে বলেন, "সেই সময় এক লক্ষ টাকা যথেষ্ট বড় অঙ্কের ছিল। নাহলে আমরা সফর থেকে জমানো টাকা এবং দৈনিক ভাতা মিলিয়ে ৬০ হাজার টাকা সাকুল্যে পেতাম। সেই সময় মনে রয়েছে, কেউ কেউ আমাদের বলত, ৫০০০ দেওয়া হবে, কেউ বলত ১০ হাজার! রীতিমত অসম্মান বোধ করতাম আমরা। তারপরেই কনসার্টে লতাজি গান করলেন। ওঁকে লাইভ কনসার্টে দেখার অন্যতম সেরা মুহূর্ত ছিল সেটা।"
লতাজির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য বিসিসিআই দেশের প্রত্যেক ম্যাচে দুটো করে ভিভিআইপি টিকিট সংরক্ষিত করে রাখা শুরু করে। কিংবদন্তি গায়িকার প্রয়াণে ভারত রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন