রবিবার ভারতীয় ফুটবলে চরম দুঃসংবাদ। চলে গেলেন সৈয়দ শাহিদ হাকিম। শেষবার যে জাতীয় দল অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিল, সেই রোম অলিম্পিকের স্কোয়াদেই দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। প্রাক্তন সেই তারকা ফুটবলারই গুলমার্গের এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।
কয়েকদিন আগেই স্ট্রোকের শিকার হন তিনি। তারপরেই গুলমার্গের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শেষমেশ রবিবারর প্রয়াত তিনি, ৮২ বছর বয়সে।
ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে হাকিম সাবের নাড়ির যোগ পাঁচ দশকের বেশি সময়। ধ্যানচাঁদ এবং দ্রোনাচার্যে ভূষিত তারকা ১৯৮২-এ এশিয়ান গেমসের সময়ে পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহকারী কোচের ভূমিকা পালন করেছেন জাতীয় দলে। মারডেকায় একটি টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের কোচের হটসিটেও বসেছিলেন তিনি।
কোচ হিসাবে সোনার সময় কাটিয়েছেন মাহিন্দ্রা এন্ড মাহিন্দ্রায়। ১৯৮৮ সালের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে মাহিন্দ্রা সেবার ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়। সালগাঁওকারের কোচ হিসেবেও দেখা গিয়েছে হাকিমকে। ২০০৪-০৫ সালে শেষবার কোচিং করিয়েছিলেন বেঙ্গল মুম্বই এফসিকে।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের দুয়ারে এবার স্পোর্টিং রাইটস! বিচ্ছেদের পথেই হয়ত হাঁটছে শ্রী সিমেন্ট
কোচিংয়ের পাশাপাশি আলো ছড়িয়েছেন ম্যাচ রেফারি হিসেবেও। ফিফার অনুমোদনপ্রাপ্ত তিনি দেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি ছিলেন। ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন সৈয়দ হাকিম। সাইয়ের রিজিওনাল ডিরেক্টরের ভূমিকাতেও পাওয়া গিয়েছে তাঁকে। ২০১৭-য় ভারতের মাটিতে যুব বিশ্বকাপের আগে স্কাউটিংয়ের প্রজেক্ট ডিরেক্টরও ছিলেন।
খেলতেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ড পজিশনে। রোম অলিম্পিকের সময় বাবা কিংবদন্তি সৈয়দ আবদুল রহিম জাতীয় দলের কোচ হলেও, বেশি ম্যাচ টাইম পাননি। রোম অলিম্পিকে স্কোয়াডে থেকেও খেলার সুযোগ পাননি। তারপরে জাতীয় দল থেকেও বাদ পড়তে হয়। ১৯৬২-এ এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী দলের সদস্য হওয়ার সুযোগও হাতছাড়া হয় তাঁর। যা নিয়ে আজীবন আক্ষেপের শেষ ছিল না তাঁর।
ষাটের দশকে দেশের অন্যতম সেরা হাফ ব্যাক ছিলেন। তবে রাম বাহাদুর, মারিয়াপ্পা কেম্পাইয়া, প্রশান্ত সিনহা অথবা ফ্র্যাংকোর সঙ্গে জাতীয় দলের সুযোগ পাওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে গিয়েছেন। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে ভারত দুজন হাফ ব্যাককে নিয়ে দল সাজাত। তবে রাম বাহাদুরদের টপকে নিয়মিত হতে পারেননি এসএস হাকিম সাব।
কথিত রয়েছে, অলিম্পিকে গিয়ে ভারত পরপর দু ম্যাচে হাঙ্গেরি এবং ফ্রান্সের কাছে হেরে বসেছিল। তৃতীয় ম্যাচে হাকিম সাবকে নামানোর জন্য তাঁর পিতা কোচ হাকিমকে অনুরোধ করেন স্বয়ং চুনী গোস্বামী। তবে বিনয়ের সঙ্গে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন সৈয়দ হাকিম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন