Advertisment

শতবর্ষের আমন্ত্রণে সাড়া দিলেন না অভিমানী কিংবদন্তি! শুরুর দিনেই তাল কাটল

ফোন ব্যবহার করেন না সচরাচর। যোগাযোগের ভরসা বাড়ির ল্যান্ডলাইন ফোন। অনেক কষ্টে গৌতম সরকারের মাধ্যমে যোগাযোগ করা গেল সত্তরের কিংবদন্তির সঙ্গে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
east bengal

শতবর্ষের আগেই তাল কাটল ইস্টবেঙ্গলের। আমন্ত্রণ পেয়েও সম্ভবত শতবর্ষে দেখা যাবে না প্রাক্তন ফুটবলার সুধীর কর্মকারকে। যা নিয়ে একপ্রস্থ বিতর্কের বাতাবরণ শতবর্ষের প্রাক্কালে। শতবর্ষে এবার শ্রেষ্ঠ অধিনায়কের সম্মান দেওয়া হচ্ছে সুধীর কর্মকারকে। সত্তরের দশকে লাল-হলুদের ত্রিমুকুট জয় সুধীর কর্মকারের নেতৃত্বেই। তারপর ক্লাবের জার্সিতে নিজেকে অপরিহার্য প্রমাণ করেছেন। হয়েছেন উঠেছেন কিংবদন্তি, সাক্ষাৎ ময়দানের মহীরূহ। তবে তিনি নেই শতবর্ষে। শতবর্ষে প্রায় সমস্ত প্রাক্তন ফুটবলারদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রথা মেনে। সেই মতো আমন্ত্রণ পত্র পৌঁছে গিয়েছিল সুধীর কর্মকারের রিষড়ার বাড়িতেও। তবে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি থাকছেন না ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে।

Advertisment

ফোন ব্যবহার করেন না সচরাচর। যোগাযোগের ভরসা বাড়ির ল্যান্ডলাইন ফোন। অনেক কষ্টে গৌতম সরকারের মাধ্যমে যোগাযোগ করা গেল সত্তরের কিংবদন্তির সঙ্গে। সেখানেই জানা গেল আসল সত্য। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সুধীর কর্মকার বলে দেন, "শরীর মোটেই ভাল নেই। তাই শতবর্ষে না-ও যেতে পারি। তাছাড়া নিজস্ব ব্যবসায়িক কাজেও একটু ব্যস্ত রয়েছি। কাটোয়ায় আমার ব্যবসা। তাই ক্লাবকে জানিয়ে দিয়েছি, আমি সম্ভবত আসছি না। যদি যেতেও হয়, তাহলে অল্প সময় কাটিয়েই চলে আসব।" ইস্টবেঙ্গলের হয়ে টানা ছ-বার কলকাতা লিগ জিতেছিলেন। ক্লাবের বহু সোনাঝরা অধ্যায়ের সঙ্গী ছিলেন তিনি। প্রিয় ক্লাবের শতবর্ষেই কিনা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কিংবদন্তি!

আরও পড়ুন কাঁধে ইঞ্জেকশন নিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে ‘ঐতিহাসিক উপহার’! শতবর্ষে ক্লাবই ভুলল সেই নায়ককে

শতবর্ষে নতুন অতিথি! আসিয়ান জয়ের নায়ককে বরণ করবে ইস্টবেঙ্গল

অভিমানের কারণ কী? ক্লাবে খোঁজ চালিয়ে জানা গেল, সুধীর কর্মকার ক্লাবমুখো প্রায় হন-ই না। শতবর্ষের আগে শীর্ষকর্তাদের তরফে প্রাক্তন ফুটবলারদের তরফে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে যাওয়া হয়েছে। সমরেশ চৌধুরি, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, গৌতম সরকারদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে ক্লাবে। তবে কোনও বৈঠকেই হাজির থাকেননি সুধীর কর্মকার। আসলে বরাবরই নিজস্ব বৃত্তে থাকতে ভালবাসেন তিনি। ময়দানি ফুটবল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন নিজেকে বহুদিন।

এটা তো প্রকাশ্য কারণ। আসল কারণ যদিও অনেক গভীরে। ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষে আমন্ত্রিতের তালিকায় নেই সোনার সময়ের কর্মকর্তা অজয় শ্রীমানী। এবং আসছেন না প্রবাদপ্রতিম গোলকিপার অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সত্তরের দশকে টানা চার বছর ফুটবল সচিব ছিলেন অজয় শ্রীমানী। সচিব অজয় শ্রীমানীর জমানাতেই টানা পাঁচটা কলকাতা লিগ, পিয়ং ইয়ং কে হারানো, মোহনবাগানকে পাঁচ গোলে বিদ্ধ করা! আর অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় তো বহুদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে। '৭২ সালে টানা ২৮ ম্যাচে তেকাঠির নিচে গোল হজম করেননি তিনি। যে রেকর্ড অবশ্য পরে নয়ের দশকে ছোঁবেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। এহেন শ্রীমানী কিংবা অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ই কিনা নেই ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষে। নিজের ফেলে আসা দিনে দুই পরিচিতের খবর নিয়েই ইস্টবেঙ্গলে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করছেন না সুধীর কর্মকার।

যাইহোক, ক্লাব কর্তারা ভেবেছিলেন, হয়তো ব্যক্তিগত মান অভিমান ভুলে ক্লাবের ঐতিহাসিক সেলিব্রেশনে শরিক হবেন তিনি। তবে শেষ মুহূর্তেই বেসুরো গেয়েছেন তিনি। ক্লাবের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করায় ঈষৎ বিরক্তও হয়েছেন ক্লাব কর্তারাও। সবমিলিয়ে বিতর্ক নিয়েই ইস্টবেঙ্গলে শুরু রঙিন মুহূর্ত।

East Bengal Kolkata Football
Advertisment