লিওনেল আন্দ্রেস মেসি আরও একবার হাওয়ায় উড়লেন। নীচে তাঁকে স্পর্শ করে দাঁড়িয়ে থাকলেন তাঁর নীল সাদা কমরেডরা। মেসি উড়লেন, আবার ধরা দিলেন সতীর্থদের বাহুতে! এভাবেই উইম্বলডনের মাঠ মায়াবী রূপকথার সাক্ষী থাকল।
কোপা আমেরিকার পর একই বছরে ফের একবার লিওনেল মেসির হাতে ফাইনালিসমার ট্রফি। কোহিনুরে চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া ক্লাব কেরিয়ারের পর এবার আন্তর্জাতিক স্তরেও ঈশ্বরের রাজ্যপাট বিস্তৃত হচ্ছে। নীল সাদা জার্সির অভিশাপ ফিকে হচ্ছে ধীরে ধীরে। দেরিতে হলেও।
আরও পড়ুন: যুব বিশ্বকাপে খেলা ডিফেন্ডারকে নেওয়ার পথে ইস্টবেঙ্গল! কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত
দুই মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নদের দ্বৈরথের ফাইনালিসমা ট্রফি প্ৰথমবার আর্জেন্টিনার। ইটালিকে ৩-০ গোলে চূর্ণ করলেন মেসিরা। জাতীয় দলের হয়ে কোপা জিতেছিলেন গত জুলাইয়ে। তারপরে জুনের প্ৰথম দিনে মহাতারকার হাতে। সোনালী রাতে ৩৪ বছরের কিংবদন্তি জোড়া এসিস্ট করলেন। ১৬১তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ আসলে হয়ে থাকল মেসির রাত।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেসি বলে দিলেন, "অপূর্ব অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলাম আমরা। জানতাম দুর্ধর্ষ ম্যাচ হতে চলেছে। দুরন্ত এই পরিবেশে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মজাই আলাদা।"
একক ঝলকে মেসি এগিয়ে দিয়েছিলেন। জিওভানি ডি লরেঞ্জ আটকাতেই পারেননি মেসিকে। মেসি ফাইনাল পাস বাড়িয়েছিলেন লাউতারো মার্টিনেজকে। সেখান থেকে ডোনারুম্মাকে পেরিয়ে গোল করতে সমস্যা হয়নি মার্টিনেজের।
প্ৰথম গোলের নায়ক মার্টিনেজের আবার দ্বিতীয় গোলের আবহ তৈরি করলেন জর্জিও চিয়েলিনিকে টপকে। তাঁর এসিস্ট থেকে দ্বিতীয় গোল করে যান এঞ্জেল ডি মারিয়া। এদিনই ইতালির জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেললেন চিয়েল্লিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে ১১৭ তম ম্যাচই হয়ে থাকল চিয়েলিনির শেষ আন্তর্জাতিক স্টপেজ।
প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে খেলা ফিনিশ হয়ে যায় মেসির স্কিলের দ্যুতিতে। মাঝমাঠে বলের পজেশন পেয়েছিলেন। সেখান থেকে দ্রুত গতিতে আক্রমণ শানিয়েছিলেন ইতালিয়ানদের বক্সে। ডি লোরেঞ্জ এবারেও সামলাতে পারেননি মেসিকে। পরিবর্ত হিসাবে নামা পাওলো দিবালাকে পাস বাড়িয়ে দেন মেসি। লো স্ট্রাইকে দিবালা ৩-০ করেন স্কোরলাইন।
ওয়েম্বলিতে মেসি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রফি জিতলেন। ২০১১-য় মেসি প্ৰথমবার উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব জিতেছিলেন বার্সেলোনার হয়ে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে।
আরও পড়ুন: সন্তোষের দুর্ধর্ষ কোচ এবার লাল-হলুদের দায়িত্বে! বড় ঘোষণার পথে ইমামির ইস্টবেঙ্গল
গত বছর ইউরো জেতার পরে ইতালিয়ানদের উইম্বলডন প্রত্যাবর্তন মোটেই ভালো হল না। বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর এই নিয়ে পরপর স্বপ্নভঙ্গের সাক্ষী থাকল ইতালি।
মহাদেশীয় জোড়া ইতিহাস গড়ার পরে এবার কাতারে মেসি এন্ড কোং রওনা দিচ্ছে বিশ্বকাপ দখলের উদ্দেশ্যে। মেসি সেখানে সেরার সেরা খেতাব জিতবেন, অপেক্ষা আপাতত তারই।