ভারতসেরা মোহনবাগান, উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী। মোহনবাগান তাঁবুতেই এদিন সাড়ম্বরে খেতাবজয়ীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিজয়ী দলের প্রত্যেক ফুটবলারের হাতে মিষ্টি ও উত্তরীয় তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর নিজের ভাষণে আগাগোড়া আবেগী মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন, তাঁর মা ছিলেন মোহনবাগানঅন্ত প্রাণ। মোহনবাগান আইএসএল ফাইনাল খেলার দিন ভোরেই জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। পাশাপাশি, খেতাবজয়ী ক্লাব মোহনবাগানকে এদিন ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ারও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা স্বপ্ন দেখেন যে, আগামী দিনে বিশ্বের সেরার শিরোপা উঠবে সবুজ মেরুনের মাথায়। সাফ জানিয়েছেন যে, মোহনবাগানের আগে এটিকে তাঁর না-পসন্দ।
মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল, নিজেকে কোনও দলেরই সমর্থক বলে মানতে ঘোর আপত্তি মুখ্যমন্ত্রীর। তবে সে আড়াল ভেঙে যান নিমেষেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে ছেলেবেলায় ডুব দেন। অনেক ছোট থেকেই যে তাঁর পরিবারের সঙ্গে মোহনবাগের যোগযোগ তা তুলে ধরে তৃপ্ত কন্ঠে বলেন, 'আমার বাবা স্বাধীনতার আগে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাই ফুটবলের সঙ্গে আমার পরিবার জড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। মোহনবাগানের খেলা হলে কালী বাড়িতে পুজো দিতে যেতেন আমার মা। যে দিন আইএসএল ফাইনাল ছিল, সেই দিন ভোরবেলা স্বপ্ন দেখি, মোহনবাগান জিতে গিয়েছে। খেলা শুরুর আগেই যে স্বপ্নটা দেখেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। আমি অরূপকে এসএমএসে সবটা জানিয়েও ছিলাম।'
নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি মমতা। তাঁর কথায়, 'আমি জানতাম, মোহনবাগান ফাইনালে উঠেছে মানে জিতেই ফিরবে। কারণ বাংলা এতদূর এসে হেরে যেতে পারে না। এই মোহনবাগানই একদিন বিশ্বের দরবারেও সেরার সম্মান জিতবে।'
ভারসেরা হওয়ার উপহার হিসাবে এদিন মোহনবাগানকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, 'আমি চাই, আগামী দিনে এইভাবেই আরও এগিয়ে যাক মোহনবাগান। আমি সবসময় বাংলার ফুটবলের পাশে থেকেছি। মোহনবাগান ক্লাব যাতে পরিকাঠামোর দিক থেকে উন্নতি করতে পারে, তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদানের ঘোষণা করছি।'
আরও পড়ুন- ‘মোহনবাগান আগেই খেলে দিয়েছে, বেচারা ইস্টবেঙ্গল’, মমতা বলতেই করতালির বন্যা
এটিকে উঠে গিয়েছে মোহনবাগানের সামনে থেকে। এবার থেকে শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব আইএসএল খেলবে 'মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস' হিসাবে। ক্লাবের আগে এটিকে পছন্দ ছিল না মুখ্যমন্ত্রীরও। তা জানিয়ে মমতা বলেছেন, 'এটিকে মোহনবাগান নয়, এখন ক্লাবের পরিচয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। আমি অরূপকে বলেছিলাম, এটিকে শুনতে ভালো লাগে না।'
মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন, 'মোহনবাগান আমাদের পথ দেখিয়েছে। আগামী দিনে চাইব, মোহনবাগান বিশ্বের সেরা ক্লাব হোক। একদিন মোহনবাগান কেন ব্রাজিলের সঙ্গে খেলবে না? খেলতে হবে ও বিশ্বজয় করতে হবে।'
মোহনবাগানের উৎসবের দিনেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'ওরা যখন টিমটা তৈরি করেছে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভাল খেলোয়াড় পায়নি। মোহনবাগান সেই খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছিল।'