বাংলা ক্রিকেটে দুই তারকা একসঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছেন। রাজনীতির ময়দানে আবার একে অন্যের প্রতিপক্ষ। একজন তৃণমূলে যোগ দেওয়া মনোজ তিওয়ারি। অন্যজন পদ্মশিবিরে নাম লেখানো অশোক দিন্দা। দুই তারকার বন্ধুত্ব এখনো অটুট। তবে শিবপুর কেন্দ্রে ঘাসফুলের প্রার্থী মনোজ তিওয়ারি জানিয়েছেন, রাজনীতির ময়দানে 'বন্ধু' অশোক দিন্দাকে ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
জাতীয় দলের হয়ে ১২টি একদিনের ম্যাচ এবং তিনটে টি২০ ম্যাচ খেলা মনোজ তিওয়ারি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, রাজনীতির ময়দানে লম্বা ইনিংস খেলাই তাঁর লক্ষ্য। আর স্ট্রেট ব্যাটেই দিন্দার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে চান।
রাজনীতিতে দুই মেরুর বাসিন্দা হওয়ার পরেই অশোক দিন্দার সঙ্গে তার সম্পর্কের সমীকরণ কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছেই। তবে হাওড়ার মনোজ বলে দিয়েছেন, দিন্দা বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বলেই বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যাবে এমনটা মোটেই নয়। ফোনে পিটিআই-কে মনোজ তিওয়ারি বলে দিয়েছেন, "নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো বন্ধুত্ব নয়, একথা সত্যি। আমরা একই কমপ্লেক্সে থাকি। তাই আমাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হলে নিশ্চয় কথাবার্তা হবে। তবে আমাদের আলোচনার মধ্যে রাজনীতি থাকবে না।"
আরো পড়ুন: সিরাজ-ইশান্তকে তুলোধোনা সুন্দরের বাবার! ছেলের সেঞ্চুরি না হওয়ায় ক্ষোভে বিস্ফোরণ
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই টিকিট পেয়ে গিয়েছেন নৈছনপুর এক্সপ্রেস দিন্দা। তিনি লড়ছেন ময়না কেন্দ্র থেকে। দিন্দার প্রসঙ্গেই বলতে গিয়ে মনোজ আরো বলে দেন, "বিজেপিতে যোগ দেওয়া সম্পূর্ণ ওঁর সিদ্ধান্ত। তবে আমিই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওঁর বিষয়ে ও-ই ভালো বলতে পারবে। তবে ওঁর প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল।" ৩৫ বছরের এই ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদ এরপরেই বলে দেন, রাজনীতির ময়দানে দিন্দার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে কুণ্ঠা করবেন না।
কীভাবে হঠাৎ রাজনীতির ময়দানে হাজির হলেন, সেই প্রসঙ্গে মনোজ জানালেন, "মরসুম শুরুর আগেই ইনজুরি ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইঞ্জেকশন নিয়েই মুস্তাক আলিতে নামি। ব্যথা কমলেও খেলার সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলাম না। সেই টুর্নামেন্টের পরেই ঠিক করে নিই খেলা বন্ধ রাখব। তাই বিজয় হাজারের স্কোয়াড থেকে নাম তুলে নিই।"
"এমন সময়েই মমতা দিদির ফোন পাই। উনি আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলেন। এর আগে ২০১৯ সালেও উনি আমাকে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তাব দেন। তবে সেই সময় ভোটে দাঁড়ানো হয়নি। এবারে এমন পরিস্থিতিতে প্রস্তাব পেয়ে এবার সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল। আমি বরাবরই মানুষের সেবা করতে চেয়েছি।" এমনটাই সংযোজন তারকা ক্রিকেটারের।
আর বিজেপির পরিবর্তে তৃণমূলে নাম লেখানোর কারণও খোলসা করেছেন তিনি। বলে দিয়েছেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন লড়াকু নেত্রী। সকলের কাছে সাক্ষাৎ অনুপ্রেরণা। আমি গভীরে যাচ্ছি না, তবে কর্মসংস্থানের ইস্যু দেখুন। বিজেপি কালো টাকা উদ্ধার করে প্রত্যেককে ১৫ লাখ টাকা দেবে বলেছিল। এসব বিষয়ে আমি বিরক্ত।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন