বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে দেশের জার্সিতে খেলছিলেন মহম্মদ সিরাজ। আর সিরিজ শেষে বীরের মর্যাদা পেয়ে দেশে ফিরছেন তিনি। মহম্মদ শামি চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পর সিরাজ সুযোগ পেয়েছিলেন দ্বিতীয় টেস্টে। অভিষেক ঘটে মেলবোর্নে। আর চতুর্থ টেস্টে যখন তিনি নামছেন, দলের 'সিনিয়র মোস্ট' বোলারের তকমা তাঁর জার্সিতে।
ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরা, রবীন্দ্র জাদেজা, উমেশ যাদব- দলের প্রথম সারির বোলিং ইউনিটটাই নেই। আর সিনিয়র বোলারের দায়িত্ব তিনি পালন করলেন একেবারে নিখুঁতভাবে। প্রত্যাশা ছাপিয়ে এল পারফরম্যান্স।
আরো পড়ুন: বিরাটকে সরিয়ে রাহানেকেই টেস্ট নেতা করা হোক, বিতর্ক উসকে বললেন সুপারস্টার
ব্রিসবেন টেস্টের পরে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনি। ৩ টেস্টে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। সবমিলিয়ে দুই দলের হিসাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি- প্যাট কামিন্স এবং।জোশ হ্যাজেলউডের পর। তবে সিরাজের এই শিরোনামে ওঠার দিনেই ব্যক্তিগত ক্ষতি জায়গা করে নিয়েছে। অজি সফরে আসার পরই তিনি খবর পান বাবা মারা গিয়েছেন। সেই সময় টিম ম্যানেজমেন্ট সিরাজের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে দেয়। তবে সিরাজ দলের সঙ্গেই থাকতে মনস্থির করে ফেলেন। তারপর টেস্ট সিরিজে তো রূপকথার উত্থান।
সিরাজ বাবা হারানোর কষ্ট ভুলেছিলেন মায়ের কাছেই। এমন কাহিনী শুনিয়েছেন তাঁর দাদা ইসমাইল। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে ইসমাইল বলেছেন, "সিরাজের এই পারফরম্যান্স আমাদের সকলকে খুশি করেছে। শুধু পরিবার নয়, গোটা দেশকে ও গর্বিত করেছে। বাবাকে হারানো সবথেকে বড় ক্ষতি। সেই ক্ষতি অপূরণীয়। তবে সিরাজকে এই দুঃখে সঙ্গ দেন আমার মা। প্রতিদিন মা সিরাজের সঙ্গে ২-৩ ঘন্টা কথা বলতেন। ওঁকে মোটিভেট করতেন মা। মা পাশে থাকায় দুঃখ অনেকটা সহ্য করার শক্তি পেয়েছিল সিরাজ।"
এর পাশাপাশি তিনি আরো বলেছেন, "পাঁচ উইকেট নেওয়া দারুণ কৃতিত্বের বিষয়। ম্যাচ জেতানোর মত পারফরম্যান্স। বিরাট কোহলি, জসপ্রীত বুমরাদের মত তারকাদের ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো বিশাল ব্যাপার। সিরাজ নিজের ফিটনেস এবং বোলিং নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছে। যখন আরসিবিতে ও খেলতে পারছিল না ওঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল আরসিবি। ওকে রিটেনও করে। ওঁর ওপর ভরসা দেখিয়েছিল ব্যাঙ্গালোর। এই পারফরম্যান্সের পর আরসিবি এবং বিরাট ভাইকে কৃতিত্ব দেব।"
সিরাজের এই কৃতিত্বে তাঁর বাবা নিশ্চয় খুশি!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন