Advertisment

চাপে পড়ে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার টুটু বসুর

গত কয়েক ঘণ্টায় পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে পড়ে যে, টুটু বসু ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন। বাংলা ও ইংরাজিতে মেইল পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করার সঙ্গেই বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tutu Bose

টুটু বসু (ছবি-ফেসবুক/শিলাদিত্য মিত্র)

আট বছর পর কলকাতা লিগ এসেছে মোহনবাগান তাঁবুতে। কিন্তু জয়ের আনন্দে কিছুটা হলেও ছেদ পড়েছে মোহনবাগান সভাপতি টুটু বসুর একটি লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মন্তব্যে। বাগানের এই বটবৃক্ষ লিগ জয়ের আবেগে ভেসে গিয়ে বলে ফেললেন এমন একটি কথা, যার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ক্লিপিংয়ের ঝড় উঠল। অগণিত মানুষের ফেসবুক টাইমলাইনে ঘুরছে টুটুর সেই বিতর্কিত বক্তব্যের ফুটেজ।

Advertisment

ঠিক কী ঘটেছিল গতকাল? আর কোন কথায় ফাঁসলেন টুটু? মোহনবাগান নিজেদের ঘরের মাঠে কলকাতা কাস্টমসের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল। এদিন জিতলেই লিগ চলে আসবে বাগানে। এরকম একটা ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ ছিল উর্ধ্বমুখী। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই বাগান সমর্থকরা এসেছিলেন মাঠে।

আরও পড়ুন: আট বছর পর লিগ পেল মোহনবাগান

প্রথমার্ধেই হেনরি কিসেকার জোড়া গোলে মোহনবাগান ২-০ গোলে এগিয়ে মাঠ ছেড়েছিল। জয় ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। লাইভ সম্প্রচারের মাঝে বিরতিতে চ্যানেলের সাংবাদিক টুটু বসুকে প্রশ্ন করেছিলেন, "মোহনবাগান তো লিগ জিততে চলেছে, কেমন লাগছে আপনার?" স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে টুটুর তাৎক্ষণিক উত্তর ছিল, "সাত বছর ধরে মেয়ে হচ্ছিল, হঠাৎ একটা ছেলে হলে যেমন আনন্দ হয়।" আর এই মন্তব্যের পরেই বিতর্কের ঝড় উঠে যায়।  

গত কয়েক ঘণ্টায় পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে পড়ে যে, টুটু বসু ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন। বাংলা ও ইংরাজিতে মেইল পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করার সঙ্গেই বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন তিনি। লিখলেন, "দীর্ঘ আট বছর পর লিগ জয়ের আনন্দে আমি আবেগে ভেসে গিয়েছিলাম। আর ম্যাচের বিরতিতে আবেগের বশবর্তী হয়েই কিছু কথা বলে ফেলেছিলাম। আমি কখনই কথাগুলো বলতে চাইনি। আনন্দের দিনে কাউকে আঘাত করার অভিপ্রায় আমার ছিলো না। আমার কথা আমার ভালোবাসার মানুষদের কষ্ট দিয়েছে। আমি দুঃখিত। আমি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কালকের লিগ জয়ের পর আবেগের মুহূর্তে, ওই প্রেক্ষাপটে বলা বক্তব্য নিয়ে আমার নিজেরই অনুশোচনা হচ্ছে। আমার বাড়িতে আমার পুত্রবধূরা আছে। নাতনি আছে। তাই কন্যাসন্তানদের গুরত্ব আমি জানি। আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, পুত্র বা কন্যা সন্তান যাই হোক না কেন, সবাই আমাদের পরিবারের আত্মজ। আমি আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করছি। শেষে আবারও বলছি কোন মানুষকে আমি কষ্ট দিতে চাইনি।"

Tutu Bose Mail টুটু বসুর পাঠানো মেইলের প্রতিলিপি

টুটু বসুকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন, "টুটুদাকে অনেকদিন ধরে চিনি। উনি ঘটি-বাঙাল বিষয়তেও মজার মন্তব্য করে থাকেন। এটা একেবারেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ। এটা বলতে পারি যে, এখানে মেয়ের ক্ষেত্রে ছেলেও বলতে পারতেন উনি। আমি নিশ্চিত, কোনও কিছু ভেবে উনি বলেননি কথাগুলো।"

ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, তিনি এই বিষয় কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। টুটু বসুর বক্তব্যের দায় টুটু বসুর নিজেরই। ইস্টবেঙ্গলের নীতুর সংযোজন, "আমাদের শেখানো হয় যে, নারী-পুরুষের কোনও ফারাক নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে এরকম মন্তব্য কখনই বুদ্ধিদীপ্ত বা শোভন নয়। একটু সংযত হওয়ার প্রয়োজন ছিল ওঁর।" টুুটু বসুর স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা ও চটুল মনস্কতার পরিচয় অবশ্য অতীত ঘাঁটলেও পাওয়া যাবে। এবারই প্রথম নয়।

FLAG ক্লাবে পতাকা উত্তোলন (ছবি: ফেসবুক)

অন্যদিকে এদিন লিগ জয়ের আনন্দে ক্লাবে পতাকা উত্তোলন করা হয়। মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী, অধিনায়ক শিলটন পাল ও ক্লাব কর্তারা ছিলেন অনুষ্ঠানে।

Mohunbagan tutu bose
Advertisment