মোহনবাগান-৩ (চামারো ৪২', ভিপি সুহের ৯২', ৯০+২২')
রিয়াল কাশ্মীর-১ (ক্রিজো ৯২')
বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও রিয়াল কাশ্মীর। ঘণ্টাখানেক আগে এই মাঠেই গোকুলাম কেরালার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ছিটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফলে বাংলা ডুরান্ড জয়ের স্বপ্ন বিভোর হয়েছিল মোহনবাগানকে ঘিরেই। বাংলার আরেক দল মহামেডান আগেই বিদায় নিয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে।
শেষ ভরসা ছিল বাগান। প্রায় হাজার দশেক সমর্থক এসেছিলেন এদিন বাগানকে ফাইনালে দেখার জন্য়। আর তাঁদের হতাশ করলেন না কিবু ভিকুনার শিষ্য়রা। আগামী শনিবার এই যুবভারতীতে গোকুলামকে হারাতে পারলেই মোহনবাগান ১৪ বারের জন্য় ডুরান্ড চ্য়াম্পিয়ন হয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চবার বিজয়ীর শিরোপা ছিনিয়ে নেবে। ১৮৮৮ সালে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টে ইস্ট-মোহন যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ ১৩ বার জয়ী হয়েছে।
আরও পড়ুন- উবেইদের হাতে থেমে গেল ইস্টবেঙ্গলের ডুরান্ড জয়ের স্বপ্ন
প্রথম ৪০ মিনিট যুবভারতীর গ্য়ালারি গলা ফাটানোর কোনও রসদ পায়নি। কিন্তু বিরতির তিন মিনিট আগে সালভা চামারো মাতিয়ে দিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদরে। বাগান অধিনায়ক গুরজিন্দর কুমারের দুরন্ত টার্নে বাঁ-পায়ে অসাধরাণ ক্রস বাড়ান চামারোকে। চামারো ততধিক সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ডান পায়ে বুলেট শটে স্কোরলাইন ১-০ করেন। এই গোলের পিছনে অবদান রয়েছে ফ্রান্সিসকো মোরান্তেরও। অনবদ্য় ডামি দিয়েছিলেন তিনি। কাশ্মীরের গোলরক্ষক ফুরবা টেম্পা লাচেনপার কিছু করারই ছিল না।
আর এই চামোরার গোলেই কিন্তু গত ৩ অগাস্ট ডুরান্ডের প্রথম ম্য়াচে এই মাঠেই মহামেডানকে হারিয়েছিল মোহনবাগান। বার্সেলোনা বি দলে খেলা আসা ফুটবলার একাই করেছিলেন ম্য়াচের জোড়া গোল। কাশ্মীরের বিরুদ্ধেপ্রথমার্ধে চামোরার গোল ছাড়া বলার মতো ছিল বেইতার ১৪ মিনিটে একটা দুরন্ত গোলমুখী শট। যা কাশ্মীরি গোলরক্ষক রুখে দিয়েছিলেন।
গোলের পর চামোরার সেলিব্রেশন
আরও পড়ুন-কেন ডুরান্ডে নেই মিনার্ভা পাঞ্জাব? রিজার্ভ টিম নিয়ে নামছে আইএসএল ক্লাবগুলো
খেলার প্রায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অগ্রগমন ধরে রেখেও মোহনবাগান পারল না। অধিনায়ক লাভডে এনিনায়ার ক্রস থেকে ক্রিজো দুরন্ত হেডে গোল করে ম্য়াচে সমতা ফিরিয়ে আনলেন। বলতে গেলে প্রায় বাগান ডিফেন্ডার হাঁ করে সেই গোল দেখলেন। খেলার গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন ইস্টবেঙ্গল-গোকুলাম ম্য়াচেরই রিপিট টেলিকাস্ট হতে চলেছে। কিন্তু এক্সট্রা টাইমের দু মিনিটের মধ্য়ে গোল করে ম্য়াচের রং বদলে দিলেন ভিপি সুহের। বাগানকে ২-১ গোলে এগিয়ে দিলেন তিনি। অতিরিক্ত সময়ের বিরতিতে বাগান ২-১ এগিয়ে থাকে। বিরতির পর ফের জ্বলে উঠলেন সুহের। গঞ্জালেজের পাস থেকে অনবদ্য় গোল করে কাশ্মীরের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিলেন তিনি। আর এই গোলই বাগানকে উপমহাদেশের প্রাচীনতম ও বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন টুর্নামেন্টের আরও একটা ফাইনালে নিয়ে গেল।
মোহনবাগান: নংদাম্বা নাওরেম, লালচাওয়ানকিমা, শঙ্কর রায়, গুরজিন্দর কুমার, সালভা চামারো, ফ্রান্সিসকো মোরান্তে, এসকে সহিল, সুরাবুদ্দিন মল্লিক. রোমারিও জেসুরাজ, জোসেবা বেইতা (ফ্রাঞ্জ গঞ্জালেজ) ও আশুতোষ মেহতা।
রিয়াল কাশ্মীর: ফুরবা লাচেনপা, ফারহান গানি, মহম্মদ হামাদ, লাভডে এনিনায়া, খালিদ কোয়াওম, দানিশ ফারুক, ঋত্ত্বিক দাস, সুভাষ সিং, বেজি আর্মান্দ, চেস্টারপুল লিংডো (ব্রায়ান মাসকারেনহাস) ও আলতামাস সইদ।