উত্তর কলকাতার আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মোহনবাগান নামটা। বলতে গেলে শহরের উত্তর প্রান্তটা সবুজ-মেরুন অধ্যুষিত এলাকা। এখানে ইস্টবেঙ্গল ফ্যানেদের অস্তিত্ব থাকলেও, দাপট কিন্তু গঙ্গাপারের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবেরই। ভারতীয় ফুটবলের বটবৃক্ষের মতো মোহনবাগান। ময়দানের এই ক্লাবের আঁতুড়ঘর উত্তর কলকাতাতেই। আর এখানেই বিরাজ করছে মোহনবাগান লেন ও মোহনবাগান রো।
মোহনবাগান লেন। ছবি-শশী ঘোষ।
মোহনবাগানের জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে মতান্তর রয়েছে। ভারতবর্ষের প্রাচীনতম ও এশিয়ার অন্যতম পুরনো ক্লাবটি ১৮৮৯ সালের ১৫ অগাস্ট উত্তর কলকাতার মোহন ভিলার মাঠে জন্ম নেয়। ক্লাবও সেটাকেই মান্যতা দিয়েছে। মোহনবাগান এখন ১২৯ বছর বয়সী শহরের এক ‘নাগরিক’। শোনা যায় মোহনবাগানের প্রথম সভা হয়েছিল ১৪ নম্বর বলরাম ঘোষ স্ট্রিটে ভূপেন্দ্র নাথ বসুর বসতবাটিতে।
ফড়িয়াপুকুর স্ট্রিট, আপার সার্কুলার রোড. কীর্তি মিত্র লেন ও মোহনবাগান লেন, এই ছিল মোহনভিলা ও তার খেলার মাঠের সীমান। কীর্তি মিত্র ছিলেন ভিলার মালিক। মোহনবাগান লেনের বাসিন্দাদের মতে এই খেলার মাঠেই এখন অ্যাপার্টমেন্ট গড়ে উঠেছে। ফলে মাঠ সম্বন্ধে তাঁদের ধারণাও অনেকটা শুনে আসা প্রবাদের মতো।
আরও পড়ুন: ভালবাসার নিদর্শন: ইস্টবেঙ্গল ভক্তের লাল-হলুদ বাড়ি
ঐতিহাসিক অমর একাদশ। ছবি-শশী ঘোষ।
১৮৮৭ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের মানচিত্রে মোহনবাগান রো ও মোহনবাগান লেন নামে দু’টি রাস্তার উল্লেখ রয়েছে। শোনা যায় মোহনবাগান প্রতিষ্টা হওয়ার দু’বছর পর এই ক্লাব চলে যায় শ্যামপুকুরে দুর্গাচরণ লাহাদের মাঠে। এটাই এখন লাহা কলোনির মাঠ বলে পরিচিত। শোনা যায় ওটাই ছিল বাগানের প্র্যাকটিস মাঠ। আর এই মোহনবাগান লেনেই রয়েছে আইএফএ শিল্ড জয়ী অমর একাদশের মূর্তি।
পথের সঙ্গে চলছে পথিকও। ছবি-শশী ঘোষ।
মোহনবাগান লেনের বাসিন্দারা ভীষণ গর্বিত যে, তাঁরা ক্লাবের নামাঙ্কিত গলিতে থাকেন। তরুণ থেকে প্রবীন সকলের চোখেমুখেই ফুটে ওঠে সেই ভাললাগা। কারোর মতে, লেন আর রো উঠে গিয়ে শুধুই থাক মোহনবাগান নামাঙ্কিত একটা রাস্তা। এই পাড়ায় থাকতে পেরে পরম গর্ব বোধ করেন বাসিন্দারা। হেলিকপ্টার থকে ফুল পড়া থেকে সেনাটহল এসব সোনালী ইতিহাস বুকে নিয়েই বেঁচে আছে মোহনবাগান লেন আর মোহনবাগান রো।