দিন রাতের টেস্টের শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। সর্দার প্যাটেলের নাম সরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নামে স্টেডিয়ামের নামকরণের পরেই বিরোধী দলের আক্রমণের মুখে কেন্দ্রীয় শাসক দল। খেলা শুরু হওয়ার পরে আর একপ্রস্থ বিতর্ক। মাঠের দুই বোলিং প্রান্তের নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে রিল্যায়েন্স এবং আদানি এন্ড!
নেটিজেনরা তো বটেই বিরোধীরাও এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ শানাচ্ছে একযোগে। বলে হচ্ছে সর্দার প্যাটেলকেই এর মাধ্যমে অপমান করে বসেছে বিজেপি।
আরো পড়ুন: জাতীয় দলে বাদ পড়তেই ব্যাটে বিস্ফোরণ পৃথ্বী-র! তছনছ রেকর্ড বই
তবে ঘটনা মোটেই এমন নয়। জানা গিয়েছে শুধুমাত্র স্টেডিয়ামের নাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে। বাকি স্পোর্টস কমপ্লেক্স (অলিম্পিক মাপের সুইমিং পুল, স্কোয়াশ এরিনা, ব্যাডমিন্টন এবং টেনিস কোর্ট সহ বাকি অংশ) সর্দার প্যাটেলের নামাঙ্কিত ই থাকছে।
কিন্তু ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুই এন্ডে কীভাবে দুই শিল্পপতির ছোয়া? টাইমস নাও ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নবনির্মিত মোতেরা স্টেডিয়ামে আদানি এবং আম্বানি দুই শিল্পপতিই বিশাল পরিমাণ অর্থ দান করেছেন। শুধু ডোনেশনই নয়, মাঠের দুই কর্পোরেট বক্স-ও ২৫ বছরের মালিকানায় কিনেছেন আদানি এবং আম্বানি। এক একটি কর্পোরেট বক্সের দাম ২৫০ কোটি টাকা (প্লাস জিএসটি)। সূত্রের খবর বলা হয়েছে, দানের প্রাথমিক চুক্তিতেই বলা হয়েছিল, তাঁদের নামেই দুই প্রান্তের নামকরণ করতে হবে।
আরো পড়ুন: ছেড়ে কথা নয়! কোহলির তোপের সামনে এবার স্টোকস, নাজেহাল করা ভিডিও দেখুন
গুজরাটে কংগ্রেস জমানা চলার সময়েই আদানির সঙ্গে এই প্রান্তের নামকরণ নিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন চিমনভাই প্যাটেল। অন্যদিকে রিল্যায়েন্স ডোনেশন করে বিজেপি শাসনের সময়।
জানা গিয়েছে স্টেডিয়ামের পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্তের আরো কর্পোরেট বক্স বিক্রি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের মোট কর্পোরেট বক্সের সংখ্যা ৭৬টি।
আরো পড়ুন: মাঠেই নিষিদ্ধ কর্ম স্টোকসের! লাল চোখে হুঁশিয়ারি দিলেন আম্পায়ারও
৬৩ বিঘা জমির উপর ৮৩০ কোটি টাকা খরচ করে এই স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। মোট দর্শকাসনের সংখ্যা ১ লাখ ৩৩ হাজার। এর আগে বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়াম ছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। দর্শক আসন ছিল ৯৩ হাজার। মাঠের এই দৈত্যাকৃতি আকার নিয়ে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো-র তরফে বলা হয়েছে, ৩২টি অলিম্পিক সাইজের ফুটবল মাঠের সমান।
আরো পড়ুন: ভারতকে টেনে খেলাচ্ছেন আম্পায়ার! বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরাসরি নালিশ ইংল্যান্ডের
২০১৫ সালে মোতেরা স্টেডিয়াম পুনর্নির্মানের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই স্টেডিয়াম সাক্ষী থেকেছে অনেক ক্রিকেট কীর্তির। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুনীল গাভাস্কার এই মাঠেই টেস্টে ১০ হাজার রানের মাইলফলক গড়েন। ১৯৯৪ সালে রিচার্ড হেডলিকে পেরিয়ে টেস্টের তৎকালীন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন কপিল দেব (৪৩২তম)।
অস্ট্রেলিয়ার স্থাপত্য সংস্থা পপুলাস মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠ নির্মাণ করেছিল। মোতেরার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম নির্মাণের পিছনেও তাদের অবদান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন