২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ যুবরাজ সিংয়ের কাছে কার্যত অভিশাপ বয়ে এনেছিল। মন্থর ইনিংসে চূড়ান্ত সমালোচিত হতে হয়েছিল ২০০৭ টি২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ বিশ্বকাপের নায়ককে। জোড়া বিশ্বকাপে দেশকে গর্বিত করলেও ২০১৪-য় তারকা ক্রিকেটার নিজের প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স মেলে ধরতে পারেননি। সেই ঘটনার প্রায় আট বছর পরে তারকা ক্রিকেটার মুখ খুলে জানিয়ে দিলেন, টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে কোনও সমর্থনই পাননি সেই সময়।
স্পোর্টস-১৮'এ হোম অফ হিরোজ-এ যুবরাজ সিং জানিয়েছেন, পুরো টুর্নামেন্টাই তিনি আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছিলেন। যে কারণে মানসিকভাবে ধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। "টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের সময় প্রবল আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগেছিলাম। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যেন আমাকে বাদ দেওয়া হয় পারে। কোনও অজুহাত দিচ্ছি না। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সেই সময় একদমই আমার পাশে দাঁড়ায়নি। গ্যারির (কার্স্টেন) সময় তো বটেই ডানকানের (ফ্লেচার) সময়েও জাতীয় দলে খেলেছি। তবে সেই সময় গোটা পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছিল।"
আরও পড়ুন: ক্যাপ্টেনশিপ চামচ দিয়ে খাইয়ে দেওয়া যায় না! জাদেজার কাছ থেকে নেতৃত্ব নিয়েই বিষ্ফোরক ধোনি
এমন প্রেক্ষাপটেই যুবরাজ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিজের ২১ বলে ১১ রানের কুখ্যাত ইনিংসের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। ভারত মাত্র ১৩০/৪ তুলেছিল স্কোরবোর্ডে। শ্রীলঙ্কা সেই টার্গেট অনায়াসে পেরিয়ে যায় হাতে হাফডজন উইকেট এবং ১৩ বল বাকি থাকতে।
যুবরাজ জানাচ্ছেন, "ফাইনালে বল হিট করতেই পারছিলাম না। অফস্পিনারকে টার্গেট করে দেখলাম হচ্ছে না। পরের পর ডট বল খেলছিলাম। এমনকি আউট হওয়ারও চেষ্টা করে দেখি। তবে যা হয়নি। সেই ঘটনার পরে অনেকে ভেবেছিল আমার কেরিয়ার শেষ। তবে এটাই জীবন। এটাই মেনে নিতে হয় শেষ পর্যন্ত। গর্বের জিনিস যেমন মেনে নিতে হয়, তেমন খারাপ জিনিসও স্বীকার করে নেওয়া প্রয়োজন। এভাবেই এগিয়ে যেতে হয়।"
যুবরাজ মনে করছেন ধোনির মত খুব কম ক্রিকেটারই সৌভাগ্যবান যাঁরা কোহলি এবং রবি শাস্ত্রীর সাপোর্ট পেয়েছিলেন। এবং এই দুজনের সমর্থনের জন্যই ধোনি ২০১৯ বিশ্বকাপেও সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর আরও বক্তব্য, ২০১১ বিশ্বকাপের পরে দলের পরিবেশ অনেক বদলে গিয়েছিল। বীরেন্দ্র শেওয়াগ, ভিভিএস লক্ষ্মণের মত গ্রেটরাও জাতীয় দলের সমর্থন পাননি।
আরও পড়ুন: সেরা পেসারের ওপরেই ক্ষেপে লাল ঠান্ডা মাথার ধোনি, দেখুন শেষ ওভারের টানটান ভিডিও
"কোচ এবং অধিনায়কের সমর্থন থাকলে তো কথাই নেই। ধোনির দিকেই দেখা যাক, ওঁর কেরিয়ারের শেষের দিকে কী হয়েছিল। ওঁরা ওঁকে ওয়ার্ল্ড কাপেও খেলার সুযোগ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পেরেছিল। ৩৫০টা ম্যাচ খেলারও কৃতিত্ব অর্জন করা সম্ভব হয়। সমর্থন ক্রিকেটে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জ ভারতীয় ক্রিকেটে সবাই পায়না।"
"হরভজন, শেওয়াগ, লক্ষ্মণ, গৌতম গম্ভীরের মত আরও অনেক গ্রেট প্লেয়ার দলে ছিল। তবে সকলেই কিন্তু ব্যাকিং পায়নি। এরকম অবস্থায় ক্রিজে নেমে কীভাবে মনোযোগ দিয়ে ব্যাটিং করা, নিজের সেরাটা দেওয়া সম্ভব! কোনও অজুহাতের বিষয় বই তবে ২০১১-র পরে কোচ বদল এবং সময় পুরো সবকিছু পাল্টে দিয়েছিল।"