Radhika Yadav Murder Case: তরুণ টেনিস তারকা রাধিকা যাদবের (Radhika Yadav) মৃত্যুর পর এখন ইন্টারনেটে রাধিকা ও তাঁর কোচ অজয় কুমারের মধ্যে কয়েক মাস আগে হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ভাইরাল হচ্ছে। সেই চ্যাটে রাধিকা লিখেছিলেন, তিনি কিছু সময়ের জন্য মুক্তভাবে বাঁচতে চান। তিনি কিছুদিনের জন্য দেশের বাইরে যেতে চান, কিন্তু বাড়ির লোকজন তা অনুমতি দেননি। এই চ্যাট গত বছর নভেম্বরের।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া চ্যাটে রাধিকা তাঁর কোচকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। তিনি লিখেছিলেন, বাড়িতে তাঁর উপর অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। তিনি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কিছুদিন স্বাধীনভাবে বাঁচতে চান। তখন অজয় তাঁকে চিনে সেটআপ করার কথা বলেন, কিন্তু রাধিকা তাতে রাজি হননি।
অস্ট্রেলিয়া যেতে চেয়েছিলেন রাধিকা: অজয় কুমার
রাধিকা লেখেন, চিনে তিনি থাকতে পারবেন না, কারণ সেখানকার খাবার-দাবার ভাল লাগবে না। তিনি দুবাই বা অস্ট্রেলিয়ার কথা বলেন। তিনি লেখেন, অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর কিছু আত্মীয় রয়েছেন আর দুবাইতে আছেন অজয় কুমার নিজে। অজয় তাঁকে ভয়েস মেসেজে উত্তর দেন। এরপর রাধিকা লেখেন, তিনি এক-দুই মাস পর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যেতে চান।
চ্যাটে রাধিকা আরও বলেন, বাড়ির লোকেরা ঠিকই আছেন, কিন্তু কিছু সময় স্বাধীনভাবে থাকতে চান। জীবনটা উপভোগ করতে চান। এখানে অনেক নিয়ম-কানুন আরোপ করা হয়েছে। তিনি আরও লেখেন, লক্ষ্য তো এটাও যে সামান্য কিছু কোর্সও করে নেবেন। আরেকটি চ্যাটে রাধিকা অজয়কে বলেন, তিনি বাবার সঙ্গে কথাও বলেছেন, কিন্তু বাবা রাজি হননি। রাধিকা লেখেন, “পাপার সঙ্গে কথা বলেছিলাম, উনি সব শুনে না করে দিয়েছেন।”
আরও পড়ুন মিউজিক ভিডিওর 'ঘনিষ্ঠ দৃশ্য', মুসলিম গায়কের মাখামাখি! রাধিকার মৃত্যু রহস্যে চাঞ্চল্যকর মোড়
২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত কোচিং দিয়েছিলেন অজয় কুমার
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোচ অজয় কুমার জানান, তিনি ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাধিকাকে কোচিং দিয়েছিলেন। রাধিকা তাঁকে বড় দাদার মতো সম্মান করতেন। রাধিকার কেরিয়ারের জন্য তাঁর বাবা অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। তিনি বুঝতে পারছেন না, যে বাবা মেয়ের কেরিয়ারের জন্য সব কিছু বাজি রেখেছিলেন, সেই বাবা কীভাবে নিজের মেয়েকেই শেষ করে দিলেন!
রাধিকার বান্ধবীর দাবি, বাড়িতে অনেক বিধিনিষেধ ছিল
রাধিকার মৃত্যুর পর তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীও সামনে এসেছেন। হিমাংশিকা সিং রাজপুত রাধিকা ও তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে রাধিকার ছবি ও ভিডিও ফুটেজও রয়েছে।
হিমাংশিকার দাবি, রাধিকা বাড়িতে দমবন্ধ পরিস্থিতিতে থাকতেন। তার উপর অনেক নিয়ম-কানুন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারও সঙ্গে কথা বললেও তাঁকে বাড়িতে জানাতে হত। হিমাংশিকা বলেন, তিনি রাধিকার সত্যিকারের জীবনটা জানতেন। রাধিকা তাঁর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলেন। তাঁরা গত আট-দশ বছর ধরে খুবই ক্লোজ ছিলেন। তিনি বলেন, তিনি ভাবেননি এত তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে কথা বলতে হবে, কিন্তু তার আর কোনও উপায় ছিল না।
রাধিকা খুব ভাল স্বভাবের ছিল: হিমাংশিকা
হিমাংশিকা বলেন, রাধিকা খুবই ভাল স্বভাবের এবং নির্দোষ ছিল। ১৮ বছর ধরে টেনিস খেলছিলেন। ছবি তুলতে আর ভিডিও করতে তার খুব ভাল লাগত। ধীরে ধীরে এসব বন্ধ হয়ে যায়। বাবা-মা সবসময় চিন্তিত থাকতেন, “লোক কী বলবে?” তাঁদের উপর সমাজের চাপ ছিল। তাঁরা আগে থেকেই রক্ষণশীল ছিলেন, তাই সবকিছুতেই নিয়ন্ত্রণ ছিল। হিমাংশিকা বলেন, তিনি বহু জায়গায় রাধিকার সঙ্গে গিয়েছেন, কিন্তু কখনও কাউকে রাধিকার সঙ্গে কথা বলতে দেখেননি। তিনি সবসময় বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতেন।
হিমাংশিকা বলেন, ভিডিও কলে কথা বললেও রাধিকাকে দেখাতে হত যে সে সত্যিই হিমাংশিকার সঙ্গে কথা বলছে। এমনকি বাড়ি ফেরার সময়ও নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়া ছিল।