Rahul Dravid on biopic: উপযুক্ত পারিশ্রমিক পেলে তাঁর বায়োপিকে অভিনয় করতে রাজি টি২০ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। সিয়েট (CEAT) ক্রিকেট পুরস্কার অনুষ্ঠান চলাকালীন এক প্রশ্নোত্তর পর্বে দ্রাবিড়কে বায়োপিক-এ অভিনয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তখনই দ্রাবিড় মজা করে উত্তর দেন, 'যদি ভালো পারিশ্রমিক পাই, তবে আমি নিজে অভিনয় করতে রাজি।'
দ্রাবিড় বলেছেন, খেলোয়াড় জীবনে তিনি কখনও দেশে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাননি। কোচ হিসেবে তাঁর সেই সাধ পূরণ হয়েছে। আর, বিশ্বকাপের সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘোরারও সুযোগ হয়েছে। তাতে ভক্তদের আবেগ উপলব্ধি করতে পেরেছেন। যা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিয়েছে বলেই তিনি জানিয়েছেন।
ভারতীয় দলের প্রাক্তন প্রধান কোচ তথা এই ব্যাটিং কিংবদন্তি, একটি সম্ভাব্য বলিউড গিগ সম্পর্কেও মুখ খুলেছেন। দ্রাবিড় এমনিতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ হাতে না তোলা সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে বিবেচিত। কোচ হিসেবে তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। টি২০ বিশ্বকাপের রোমাঞ্চকর ফাইনালে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাত রানে পরাজিত করে ট্রফি ঘরে তুলেছে। ১১ বছরের আইসিসি শিরোপা খরা কাটিয়েছে। এরপরই রাহুল দ্রাবিড় ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে তাঁর কেরিয়ারে ইতি টেনেছেন।
৫১ বছর বয়সি দ্রাবিড় তাঁর ক্রিকেট এবং কোচিং কেরিয়ারজুড়ে অসংখ্য ক্রিকেট ভক্ত এবং পণ্ডিতদের হৃদয় জয় করেছেন। তাঁর ব্যাটিংয়ের নির্ভরযোগ্যতার মতই সংযম এবং ড্রেসিংরুমে সহায়ক কোচ হিসেবে তিনি খেলোয়াড়দের মন জয় করে নিয়েছেন। ড্রেসিংরুমে তিনি একটি ইতিবাচক, সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। টিম সিয়েট (CEAT) ক্রিকেট পুরস্কার অনুষ্ঠান চলাকালীন একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে দ্রাবিড়কে মন খুলে কথা বলতে সোনা গিয়েছে। সেখানেই তাঁর বায়োপিক তৈরির ব্যাপারে প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন। কার্যত মজা করে দ্রাবিড় বলেছেন, 'যদি যথেষ্ট টাকা পাই, আমি নিজেই অভিনয় করব।'
গত বছর ৫০-ওভারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হৃদয়বিদারক হারের আগে পর্যন্ত ভারত একদিনের ওই বিশ্বকাপে অপরাজিত ছিল। এবছর আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ শিরোপা ভারত আবার অপরাজিত থেকেই জিতে নিয়েছে। টানা ১০টা ম্যাচ জিতেছে। প্রস্তুতি, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাঁর কোচিংয়ে ভারতীয় দল কীভাবে চলেছে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন দ্রাবিড়। তিনি বলেছেন, 'সত্যি বলতে কী, আমি আলাদা কিছু করতে চাইনি। আমার মনে হয়, আমরা ওয়ানডে বিশ্বকাপে দারুণ একটা ক্যাম্পেইন চালিয়েছিলাম। রোহিত এবং গোটা দল, যারা সবাই সেই ওয়ানডে বিশ্বকাপে ছিল, আমরা দারুণ একটা লড়াই চালিয়েছি। আমাদের প্রস্তুতি, পরিকল্পনা, ম্যাচে আধিপত্য, আমাদের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব ছিল, সব করেছি।'
দ্রাবিড় বলেন 'আমি কিছু পরিবর্তন করতে চাইনি। কেউ আমাদের কিছু জিজ্ঞাসা করলে আমরা আমাদের সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে সেটা নিয়ে আলোচনা করতাম। জিজ্ঞাসা করতাম, কী করা উচিত? সাধারণত সবাই বলত, আমরা যেটা করছি, সেটাই ঠিকভাবে করতে হবে। আমাদের এই শক্তিটাই তৈরি করতে হবে। এই স্পন্দনটাই তৈরি করতে হবে। দলের পরিবেশটা এরকমই বজায় রাখতে হবে। যা আমাদের ছিল, তা আছে। আশা করা যায়, তাতে আরও কিছু মিলবে।'
আরও পড়ুন- বাবা টিম ইন্ডিয়ার তারকা, ছেলে মাঠে নামল ইংল্যান্ডের জার্সিতে! বেনজির দৃশ্য ক্রিকেট দুনিয়ায়
গত বছর ভারতে একদিনের বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা ভাগ করে দ্রাবিড় বলেছেন, 'দেশজুড়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। ভক্তদের আনন্দ, তাঁদের আবেগ অনুভব করেছি। আমি কখনও ভারতে খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের সাধ পাইনি। কোচ হিসেবে বিশ্বকাপে দেশের এক শহর থেকে অন্য শহরে ঘোরার অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই খেলাটি যে দেশের মানুষের কাছে কী, তা ঘুরে ঘুরে দেখেছি। সত্যিই ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য একটা অভিজ্ঞতা। আমি ভেবেছিলাম আমরা একটি অভূতপূর্ব খেলেছি। ফাইনালেও জিততে পারব। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়া সেদিন আমাদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছে। ওরা একটা ভালো দল। ওদের অভিনন্দন। খেলাধূলায় এটা ঘটতেই পারে। এটাই খেলার মজা।'
গত বছরের নভেম্বরে একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অধিনায়ক রোহিত শর্মার দুর্দান্ত (৪৭), কেএল রাহুলের (৬৬) এবং বিরাট কোহলির (৫৪) সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া ভারতকে মাত্র ২৪০ রানে থামিয়ে দিয়েছিল। সৌজন্যে মিচেল স্টার্কের ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেওয়া, অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ৩৪ রানে ২ উইকেট দখল ভারতীয় ব্যাটারদের রুখে দিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার স্কোরলাইনও এক পর্যায়ে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, ট্র্যাভিস হেডের অপরাজিত ১৩৭ এবং এবং মারনাসের অপরাজিত ৫৮, ছয় উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার হাতে ম্যাচ এবং বিশ্বকাপের শিরোপা তুলে দেয়।