ক্রিকেটের সঙ্গে বরাবর নিজেকে জড়িয়ে রাখতে পছন্দ করেন রবি শাস্ত্রী। অবসরের পরে টিম ইন্ডিয়ায় সাপোর্ট স্টাফ হিসাবে টানা সাত বছর কাজ করেছেন। এর মধ্যে দুটো আলাদা পর্বে জাতীয় দলের হেড কোচও ছিলেন। তবে ২০১৭-য় প্ৰথমবার কোচিংয়ের মেয়াদ শেষের পরে নাকি বোর্ডের তরফে প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, যাতে তিনি পুনরায় কোচ না হতে পারেন। এমনই বিষ্ফোরক স্বীকারোক্তি এবার খোদ শাস্ত্রীর।
২০১৬-য় অনিল কুম্বলে অল্প সময়ের জন্য জাতীয় দলের কোচ হওয়ার আগে রবি শাস্ত্রী দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন টিম ডিরেক্টর হিসাবে। শাস্ত্রী ডিরেক্টর পর্বে ভারত দেশ-বিদেশে বেশ কিছু স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছিল। তবে বোর্ড সেই সময় শাস্ত্রীকে কোচের পদে না বসিয়ে কুম্বলের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় শাস্ত্রী সেই বিষয়ে মুখ খুলে বলেছেন, "হঠাৎ করেই যেন আচমকা বজ্রপাত হয়। দু বছরের মধ্যে আমাকে বলে দেওয়া হয়, ধারাভাষ্যকারের চাকরি, অন্য সবকিছু ছেড়ে দলের সঙ্গে যোগ দিতে হবে। হঠাৎ করে যাঁর কোনও ব্যাখ্যা আমার কাছে ছিল না। আমি ধীরে ধীরে দলকে তৈরি করছিলাম। তার ফলাফলও দেখা যাচ্ছিল। তবে আমাকে হঠাৎ সরিয়ে দেওয়া হয়। কেউই আমাকে কোনও কারণ জানায়নি।"
আরও পড়ুন: কোহলিকে সরাতে চায়নি বোর্ড! বোমা ফাটিয়ে এবার বিস্ফোরণ সৌরভের
সেই সিদ্ধান্তে আহত হয়েছিলেন জানিয়ে শাস্ত্রী আরও বলেন, "যেভাবে আমাকে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল, তাতে আহত হয়েছিলাম। জাতীয় দলে আমার যা অবদান, তাতে আরও ভাল ভাবে অন্তত বোর্ডের পক্ষে বলা যেত- দেখো তোমাকে আমরা চাইছি না। তোমাকে আমরা পছন্দ করছি না। আমাদের ভাবনায় অন্য কেউ রয়েছে। যাইহোক, আমি ফের একবার টিভিতে ফিরে যাই। নয় মাস আমার কাছে কোনও হিসাব ছিল না যে দলের মধ্যে কোনও সমস্যা রয়েছে। কী ভুল হতে পারে, তা বহু ভেবেই কিনারা করতে পারিনি। আমাকে বলা হয়েছিল- দলের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। আমার পাল্টা প্রশ্ন ছিল- মাত্র নয় মাসে কী সমস্যা ঘটতে পারে? দলকে দারুণ জায়গায় ছেড়ে এসেছিলাম। মাত্র নয় মাসে কী এমন ভুল হয়ে থাকতে পারে?"
২০১৭-য় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত পাকিস্তানের কাছে হারের পরে অনিল কুম্বলে পদত্যাগ করেন। পুনরায় শাস্ত্রীকে হেড কোচ করে আনা হয়। সেই সময়ে।বোর্ডের একাংশের তরফে চেষ্টা করা হয়, যাতে তিনি পুনরায় আর চাকরি না পান। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের সদ্য প্রাক্তন কোচ।
"দ্বিতীয় পর্বে ব্যাপক বিতর্কের পরে কোচ হয়ে আসি। যাঁরা আমাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিল, তাদের মুখের ওপর কার্যত এটা জবাব ছিল। যাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, সেই তাঁকেই নয় মাস পরে দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে হল। বোর্ডের নির্দিষ্ট করে কোনও ব্যক্তির দিকে আঙ্গুল তুলছি না। তবে আমি যাতে আর চাকরি না পাই, সেই প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।" বলেছেন তিনি।
যাইহোক, জাতীয় দলে চার বছর কোচিংয়ের মেয়াদ পর্বে শাস্ত্রীর ভারত একের পর এক মাইলস্টোন গড়েছে। তবে একটাও আইসিসি খেতাব জিততে পারেনি, এটাই আক্ষেপের হয়ে থেকেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন