তর্কাতীতভাবে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্ট তো বটেই সাদা বলের ক্রিকেটেও অশ্বিন টিম ইন্ডিয়ার অপরিহার্য অংশ। তবে সেরার সেরা তারকা হওয়া সত্ত্বেও অশ্বিন একসময় অবসরের বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন।
দ্যা ক্রিকেট মান্থলি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অশ্বিন জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেও কঠিন সময় পেরিয়েছেন তিনি। একসময় যে কারণে অবসরের চিন্তাভাবনাও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। টানা চোট আঘাতে যেমন ভুগছিলেন, তেমন নতুন স্পিনারদের আবির্ভাবে জাতীয় দলে তাঁর জায়গা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: কোহলি বড্ড লড়াই করে! প্রশংসা করেও প্রকাশ্যে বিরাট কটাক্ষ সৌরভের
"২০১৮-২০২০ এর মধ্যে একাধিকবার খেলা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করি। বারবার ভাবতাম- অনেক প্রচেষ্টা করছি। তবে সেই অনুপাতে প্রত্যাশিত সাফল্য মিলছে না। যতই চেষ্টা করতাম, ততই ব্যর্থতা ধাওয়া করত। এথলেটিক পিউবালজিয়া আর পেটলার টেন্ডনাইটিস নিয়ে ওভারে ছয় বল করার পরে হাঁফাতে থাকতাম। তারপরে গোটা শরীরে ব্যথা শুরু হত।"
"তাই আমাকে ভারসাম্য রেখে খেলতে হত। হাঁটুতে অসহনীয় ব্যথা হওয়ার পরের ওভারে হয়ত কম লাফিয়ে বল করতে হত। কম লাফালে আবার কোর মাসল, পিঠ এবং কাঁধে অতিরিক্ত চাপ পড়ত। ওভারের তৃতীয় বলে হয়ত হিপ মাসলে জোর দিয়ে সাইড-অন একশন করতে হত। আর ছয় বল করার পরে মনে হত- আর পারছি না। এবার ব্রেকের দরকার।"
তবে স্রেফ চোট আঘাতের জন্যই নয়। তাঁর চোট নিয়ে যেভাবে ক্রিকেট সার্কিটে আলোচনা হত, তাতেও সন্তুষ্ট ছিলেন না তারকা স্পিনার। অশ্বিন জানিয়েছেন, সেই সময় সেভাবে কাউকে পাশেও পাননি। কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহালের উত্থানে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জায়গা হারিয়েছিলেন অশ্বিন। সেই সময় যে ব্যাকিং দরকার ছিল, তাও পাননি তিনি।
আরও পড়ুন: KKR ছেড়ে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিতে গম্ভীর! নিলামের আগেই মহা দলবদল IPL-এ
অশ্বিন জানিয়েছেন, "একাধিক কারণে অবসরের চিন্তা ভাবনা আসছিল। মনে হচ্ছিল, চারপাশের মানুষজন আমার চোট নিয়ে সেভাবে সংবেদনশীল নন। সেই সময় অনেককে ব্যাক করা হচ্ছিল। আমাকে বাদ দিয়ে। জাতীয় দলকে এত ম্যাচ জিততে সাহায্য করেছি, আর আমাকেই নাকি কেউ সাহায্য করছে না। বারবার এমন ভাবনা মাথায় ঘুরছিল। বারবার মনে হচ্ছিল এমন একটা কাঁধ চাই, যে সাধারণত, আমি সাহায্যের প্রত্যাশী নই। তবে সেই মুহূর্তে সত্যিই এমন কাউকে দরকার ছিল।"
পুরোনো ঘটনা শেয়ার করে অশ্বিন জানিয়েছেন, "২০১৮-য় ইংল্যান্ড সিরিজের পরে, একটা সময় সাউদাম্পটন টেস্টের পরে, সেই বছরেই অস্ট্রেলিয়া সফরে এডিলেড টেস্টে এবডোমেন পেশি ছিঁড়ে গিয়েছিল। সেই সময় মনৰৰ কথা বলার জন্য স্রেফ একজনই ছিল- আমার স্ত্রী। বাবা আমাকে বারবার বোঝাতেন- সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তোমাকে প্রত্যাবর্তন ঘটাতে হবে। অন্তত আমার মৃত্যুর আগে। বাবার জন্য সেই সুযোগ আরও ব্যক্তিগত হয়ে দাঁড়িয়েছিল।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন