উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসাবে কোনও ক্রিকেটার কতটা ভাল, তার মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। উইকেটকিপার হিসাবে দুনিয়ার সেরা তো ছিলেন-ই। ব্যাটসম্যান হিসাবেও ছিলেন দুনিয়ার অন্যতম সেরা।
অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে রানমেশিন ছিলেন তারকা। স্রেফ ঝুড়ি ঝুড়ি রান করাই নয়। যেভাবে প্রতিপক্ষ বোলিং আক্রমণকে চূর্ণ করে গিলক্রিস্ট রান করতেন, তা রীতিমত গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একইভাবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণে ঋষভ পন্থ দুনিয়ার সাড়া ফেলে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারতীয় তারকা নিজেকে গিলক্রিস্টের সঙ্গে তুলনায় হাজির করেছেন।
আরও পড়ুন: রাজনীতির শিকার ঋদ্ধিমান! বাদ পড়ার খবর চাউর হতেই বঙ্গতারকার পাশে কিরমানি
আর এই তুলনায় বড় মন্তব্য করলেন স্বয়ং রিকি পন্টিং। জানিয়ে দিলেন, দুজনে একই ঘরানার ক্রিকেটার। তবে তাঁর সতর্কবার্তা, পন্থ এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন। গিলক্রিস্টের সঙ্গে পুরোপুরি তুলনার আগে আরও এগোতে হবে পন্থকে।
আইসিসি ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পন্টিং জানিয়েছেন, "হ্যাঁ, দুজনে একই ঘরানার। পন্থ নিজেকে এই পর্যায়ে তুলে এনেছে। তবে ওঁকে আরও ৫০-৬০ টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেওয়া হোক। তারপরেই সর্বকালের সেরা উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ওঁর তুলনা হোক।"
"চারিত্রিকগত দিক থেকে ঋষভ অনেক বেশি খোলামেলা, প্রাণোচ্ছল, অনেক বেশি হুল্লোড়ে প্রকৃতির। এবং চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তো বটেই। গিলিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালবাসে। তবে অনেক বেশি শান্ত স্বভাবের, চুপচাপ। একমাত্র যখন হাতে ব্যাট নিয়ে নামত, তখনই ঋষভের মত তান্ডব শুরু করত।"
আরও পড়ুন: একজন-দুজন নন, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে চার সিনিয়র বাদ পড়ছেন টিম ইন্ডিয়ায়! তুঙ্গে আলোচনা
পন্থ এবং গিলক্রিস্ট কীভাবে একই প্রকৃতির, সেই বিষয়ে পন্টিং একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। "কীভাবে ব্যাট করতে হবে, সেটা গিলিকে কখনই বোঝানো যেত না। সিডনিতে একটা টেস্ট ম্যাচের কথা মনে পড়ছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ওর সঙ্গে আমি ব্যাটিং করছিলাম। চার-পাঁচ উইকেট তখন পড়ে গিয়েছিল। দিনের খেলা শেষ হতে মাত্র তিন ওভার বাকি ছিল। এর মধ্যে দানিশ কানেরিয়ার দু-ওভার বল করত। ও গিলিকে লম্বা ফুটমার্কে একটা করে লং অন এবং ডিপ মিড উইকেটে ফিল্ডিং সাজিয়ে বোলিং করছিল।"
"গিলিকে সেই সময় গিয়ে বলি, আজকের মত দেখেশুনে খেলে ছেড়ে দাও। কাল দিনের শুরুটা ভালভাবে করা যাবে। উইকেট ক্রমেই ভাল হচ্ছে। অন্য প্রান্তে নতুন বলে আক্রমণ শুরু হবে। আজকের দিনটা কাটিয়ে দাও কোনওরকমে।"
"পরের বলেই ফুটমার্কে টার্ন করা একটা ডেলিভারিতে ও এগিয়ে এসে লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাল। আমি ভাবলাম, ওঁকে বলাই বৃথা। ও তো কথাই শুনবে না। তবে দিনের শেষে ও কিন্তু অপরাজিত থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিল। জানি না কীভাবে। তবে সেই সমস্ত ওভার কাটিয়ে পরের দিন সকালে আবার ব্যাট করতে নেমেছিল।"
পন্টিং বলছেন, ঋষভ পন্থ-ও এরকম প্রকৃতির। যাঁর মধ্যে অনেকটাই নব্বই দশকের ক্রিকেটার ছায়া দেখা যায়। "ঋষভ অনেকটা এরকম। ওঁর টেস্ট ব্যাটিংয়ের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। কটা টেস্ট হান্ড্রেড রয়েছে জানি না। তবে বেশ কয়েকটা নব্বইয়ের ঘরের স্কোর রয়েছে। আসলে ও ছক্কা হাঁকিয়ে শতরান পূর্ণ করতে গিয়ে আউট হয়েছে বেশ কয়েকবার।" বলে দিয়েছেন পন্টিং।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন