একের পর এক হার। আর ফুটবলারদের মুণ্ডুপাত কোচের। কোচের মতামত নিয়ে তারপরেই ফুটবল মহলের আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যাওয়া। শতবর্ষের ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলতে নেমে আপাতত এমনই ঘোরতর সমস্যায়। রবিবারই ইস্টবেঙ্গল খেলতে নামছে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিপক্ষে।
তার আগের রবি ফাউলার পাশে পেয়ে গেলেন স্বয়ং কার্লেস কুয়াদ্রাতকে। বেঙ্গালুরু এফসি বস সরাসরি বলে দিলেন, ফাউলারের বক্তব্য শুনুক ইস্টবেঙ্গল! ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কিংবদন্তি ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের প্রাক্তন সহকারী বলে দিলেন, "রবি ফাউলারের ফুটবল জ্ঞান নিয়ে কোনো সংশয়ই থাকা উচিত নয়। ওঁর মতামত অবশ্যই ক্লাবের শোনা উচিত।"
আরো পড়ুন: লিগে এটিকেএমবি-ই ফেভারিট, অভিমান ভুলে বলে দিলেন কিবু
চলতি মরশুমে একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন লিভারপুলের সুপারস্টার ফুটবলার। কোচ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলে এসেই তিনি বলে দিয়েছিলেন, অধিকাংশ ভারতীয় ফুটবলারকে দেখে মনে হয়, কোচিংয়ের প্রাথমিক হাতেখড়িও হয়নি। শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসির কাছে হারের পরেই বিষোদগার করে আবার বলে দেন, আইলিগের দল নিয়ে আইএসএল খেলতে নেমেছে ইস্টবেঙ্গল।
একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের পরেও ইংরেজ কোচের পাশে দাঁড়িয়ে কুয়াদ্রাত জানিয়েছেন, "ভারতীয় ফুটবল অন্যান্য দেশের থেকে আলাদা। এখানে এসেই ভারতের ফুটবল সংস্কৃতি বুঝে নেওয়া মোটেই সহজ নয়। আলবার্তো রোকার কথা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। উনি বেঙ্গালুরুতে এসে আইলিগে প্রথমবার চতুর্থ হয়েছিলেন। সেই দলে কিন্তু সন্দেশ জিংঘান, অমরিন্দর সিং, লেনি রদ্রিগেজ, লিংডো, জন জনসন, সিকে বিনীতদের মত ফুটবলার ছিল। যে কোনো প্রোজেক্ট বাস্তবায়িত হতে সময় লাগে। তাই ফাউলারকেও সময় দেওয়া প্রয়োজন।"
চলতি টুর্নামেন্টে বেঙ্গালুরু এফসি এখনো পর্যন্ত অপরাজিত। তিনটে জয় এবং তিনটে ড্র সমেত উদ্যান নগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজি আপাতত লিগ তালিকায় তিন নম্বরে। নিজের দলের সাফল্য কুয়াদ্রাত ধরে রাখতে চান। সেই বার্তা দিয়েই তিনি বলে দিয়েছেন, "আমাদের প্রোজেক্ট নিরন্তর একটা প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে। সব মরশুমেই কোর টিম গঠন করে আমরা এগোতে চাই। তবে আমাদের অনেককেই হারাতে হয়েছে। কারণ অন্যান্য দল বেশি অর্থ অফার করেছে অনেককে। এভাবেই হারাতে হয়েছে মন্দার রাও দেশাই, নিশু, শুভাশিস বোস, লেনি রদ্রিগেজকে।
এর পরেই তাঁর বিশ্লেষণ, "তবে শুধু মাত্র বিগ বাজেটের দল গড়েই প্লে অফে পৌঁছানো যায় না। প্রতি মরশুমে প্লে অফে ওঠা মোটেই সহজও নয়। তবে আমরা কিন্তু প্রত্যেক মরশুমেই প্লে অফে পৌঁছানোর রেকর্ড অক্ষুণ্ন রেখেছি। এবারেও আমাদের পাখির চোখ শেষ চারে।"
কাছ থেকে দেখছেন সুনীল ছেত্রীকে। প্রতি মরশুমে। দেশের সেরা ফুটবলারকে নিয়ে বাকিদের মতোই উচ্ছ্বসিত তিনি। প্রিয় ছাত্রকে নিয়ে বলতে গিয়ে বার্সায় বড় হয়ে ওঠা কোচ বলছিলেন, "সুনীল যেভাবে টানা ১৫ বছর ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পারফর্ম করছে, তেমনটা মোটেই সহজ নয়। ওঁকে যতই দেখি, ততই ভাবি, ওকে রিপ্লেস করার মত এখনো হয়ত ভারতীয় ফুটবলে কেউ আসেনি। অনেক প্রতিভাবান ফুটবলারই উঠে এসেছে। তবে এভাবে ধারাবাহিক ভাবে গোল করে যাওয়া, গোটা ম্যাচে ইমপ্যাক্ট ফেলা- সত্যিই কঠিন।"
আর ক্যাপ্টেন সুনীলে ভরসা করেই কুয়াদ্রাত আপাতত প্লে অফে উঠতে বদ্ধপরিকর। তিনি নিজেই জানালেন, "এবারে তিনটে দলে ভালো মানের ফুটবলার এবং ভারতীয় ফুটবলে অভিজ্ঞ কোচ রয়েছে- এটিকে এবং বিএফসি একই কোচ ধরে রেখেছে। মুম্বই সিটির দলটাও আকর্ষণীয়। এফসি গোয়াও রয়েছে। অন্যান্য দলের কাছে এই পরিবেশে অভ্যস্ত হওয়া, বিদেশি ফুটবলাররা কতটা নিজেদের মেলে ধরতে পারে- তার উপরে নির্ভর করছে সাফল্য।"
কুয়াদ্রাতের ভরসা পেয়ে ফাউলার কেরালা ম্যাচে প্রথম জয় তুলে আনতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন