Sachin Tendulkar about his farewell moments: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর বিদায়বেলার প্রতিটি ক্ষণ আজও হুবহু বলে দিতে পারেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর। তাঁর বিদায়বেলা ভারতীয় তথা বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। শচীন জানিয়েছেন, সেই দিন তিনি আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। সতীর্থরা তাঁকে কাঁধে চাপিয়ে ঘুরিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে শ্রদ্ধা জানাতে পিচে আসা, ড্রেসিংরুম থেকে নিঃশব্দে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া- এমন প্রতিটি ঘটনা তাঁর আজও সেই দিনের মতই স্পষ্ট মনে আছে। কারণ, ওই বিশেষ ঘটনাই প্রায় এক-চতুর্থাংশ শতাব্দী বা ২৪ বছর ধরে লাগাতার বয়ে যাওয়া শচীনের কেরিয়ারে ইতি টেনেছিল।
তিনি অবসর নেবেন, সেটা আগে থেকেই জানা ছিল। তাই শচীন ভক্তরা তাঁদের 'গুরু'র শেষ দুটি টেস্ট মিস করতে চাননি। এই দুটো হল তাঁর কেরিয়ারের ১৯৯ এবং ২০০-তম টেস্ট ম্যাচ। এর মধ্যে প্রথমটায় শচীন ইডেনে একটা ইনিংসে ব্যাট করেন। তাতে করেছিলেন ১০ রান। যা ভক্তদের মনঃপূত হয়নি। তাই, সকলের চোখ ছিল ওয়াংখেড়েতে তাঁর ২০০তম টেস্ট ম্যাচে। শচীন নিজে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে তাঁকে শেষ ম্যাচ তাঁর হোম গ্রাউন্ড ওয়াংখেড়েতে খেলতে দেওয়া হয়। শচীন জানিয়েছেন, এটা তাঁর জন্য বা ভক্তদের জন্য নয়। তিনি এই অনুরোধ করেছিলেন তাঁর মা রজনী তেন্ডুলকরের জন্য।
রবিবার সন্ধ্যায় মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা যখন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের বার্ষিকী উদযাপন করছে, সেই সময় শচীন বলেন, 'সিরিজ ঘোষণার আগেই আমি বিসিসিআই সভাপতি শ্রীনিবাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁকে অনুরোধ করেছিলাম যাতে আমার শেষ ম্যাচ মুম্বইয়ে দেওয়া হয়। কারণ, আমার দীর্ঘ ক্রিকেটার জীবনের ৩০ বছরে আমার মা আমাকে কোথাও খেলতে দেখেননি। যখন অবসর নিচ্ছি, আমার মায়ের শরীরের অবস্থা এমন ছিল যে ওয়াংখেড়ে ছাড়া আর কোথাও যেতেও পারত না।'
এই প্রসঙ্গে শচীন বলেন, 'আমি বলেছিলাম যে আমার একটা শেষ ইচ্ছা আছে। কেন আমি ২৪ বছর দেশের হয়ে খেলতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, আমার মায়ের সেটা দেখা উচিত। আমার অনুরোধ বিসিসিআই মেনে নিয়েছিল। ম্যাচ ওয়াংখেড়েতে দিয়েছিল। ওই ম্যাচটা ছিল আমার কাছে একটা আবেগ।'
আরও পড়ুন- কেন কেকেআর ছাড়লেন? সত্যিটা ফাঁস করে দিলেন শ্রেয়স আইয়ার
শচীন ওই ম্যাচে সাবলীলভাবেই ৭৪ রান তোলেন। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করার পরই গোটা স্টেডিয়াম উঠে দাঁড়িয়ে 'মাস্টার ব্লাস্টার'কে কুর্নিস করেছিল। কিন্তু, এখনও সেই ম্যাচের সম্প্রচারকারীদের নিয়ে ক্ষোভ যায়নি শচীনের। তিনি বলেন, 'আমাদের বিপক্ষে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওঁদের দল আমাকে বিশেষ শ্রদ্ধা জানায়। দর্শকরা আমাকে সম্মান জানিয়েছে। মেগা স্ক্রিনে দেখছিলাম আমার মা রজনী তেন্ডুলকরের মুখ। অঞ্জলি ছিল, বাচ্চারা ছিল। তাঁদেরকেও স্ক্রিনে দেখিয়েছে। কিন্তু, সম্প্রচারকারী সংস্থার ডিরেক্টর বোধহয় ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান! আমাকে সেভাবে ফোকাস করল না। আমার আবেগ নিয়ে যেন ওঁরা সেদিন খেলা করেছে!'