ফের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়েছে হকির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে । গত রবিবার নেদারল্যান্ডসের ব্রেদায় সেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেই সোনা হাতছাড়া করেছে ভারত। ২০১৬-র লন্ডনের মতো এবারও শ্যুটআউটে ম্যাচের ফয়সলা হল।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল টিম ইন্ডিয়াকে। অজিরা এই টুর্নামেন্টে ১৫ বার সোনা জিতল। ভারতের সংগ্রহে থাকল দু’টি রুপো। শনিবার নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করেই ফাইনাল খেলতে নেমেছিল সর্দার-শ্রীজেশরা।
চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ভারত। কিন্তু টুর্নামেন্টে হরেন্দ্র সিংয়ের শিষ্যদের পারফরম্যান্স কিন্তু কথা বলেছে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের উপর রোড রোলার (৪-১) চালানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচেও তাঁরা মেসির দেশ আর্জেন্তিনাকেও হারিয়েছিল ২-১ গোলে। হকিতে ভারতের বিশ্ব র্যাঙ্কিং ছয়। সেখানে আর্জেন্তিনা দু’নম্বরে। খেলার মাঠে কিন্তু র্যাঙ্কিংয়ের উল্টো প্রতিফলনই দেখা গিয়েছিল। দাপটের সঙ্গেই খেলেছিলেন সর্দাররা।
আরও পড়ুন: Champions Trophy Hockey 2018: বিশ্বকাপের বাজারেও খবরে সর্দাররা, পাকিস্তানের পর এবার আর্জেন্তিনা বধ
কমনওয়েলথ গেমসের পর থেকে ভারতের দায়িত্ব নেওয়া হরেন্দ্র দলটাকে পাল্টে ফেলেছেন। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তিনি বলেছিলেন যে, কমনওয়েলথ গেমস এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করেই আসন্ন এশিয়ান গেমসের দল নির্বাচন করা হবে। পাশাপাশি কোচ এও জানিয়েছিলেন, ভারতের চেয়ে ক্রমতালিকায় উপরের দিকে থাকা অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্তিনার মতো টিমের সঙ্গেই এই ট্রফিতে খেলে নিজেদের পরখ করে নিতে পারলেন তাঁরা।
এই টুর্নামেন্টের বিশ্লেষণে যে দিকগুলো উঠে আসছে:
শ্রীজেশের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা: ভারতের ফাইনালে ওঠার অন্যতম সেরা কারিগর টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন ও গোলকিপার পিআর শ্রীজেশ। বিশ্বের তাবর হেভিওয়েটরা আটকে গিয়েছে শুধু তাঁর বিশ্বস্ত দস্তানাতেই। বিশেষত হল্যান্ডের বিরুদ্ধে ডু-আর-ডাই ম্যাচে। শ্রীজেশ নির্ভরতাই কাটাতে হবে টিমকে।
ব্যাক-আপ গোলকিপার: এক বছর আগেও শ্রীজেশের বিকল্প খুঁজতে হিমশিম খেয়েছে ভারত। কিন্তু চিত্রটা বদলে গিয়েছে। কমনওয়েলথ গেমসে সুরাজ কারকেরার দুরন্ত পারফম্যান্সই তাঁকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ করে দিয়েছে।এছাড়াও ২০১৬ জুনিয়র বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য কৃষাণ পাঠকও নজর কেড়েছেন। তাঁরা হয়তো শ্রীজেশের মানের নন ঠিকই, কিন্তু ব্যাক-আপ গোলরক্ষক হিসেবে অবশ্যই তাঁদের কথা ভাবা যাবে।
মণদীপের সুযোগ নষ্ট: মণদীপ যেমন একদিকে দুর্দান্ত গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেন, ঠিক আবার প্রচুর সিটারও হাতছাড়া করেন। মণদীপের বিকল্প সেই অর্থে এখনও তৈরি হয়নি দলে। রমনদীপ সিং আহত। ফলে মণদীপকেই এগিয়ে আসতে হচ্ছে।
তরুণ খেলোয়াড়: ভারতের তরুণ খেলোয়াড়রা যত দিন যাচ্ছে তত ধারাল হয়ে উঠছেন। দিলপ্রীত সিং, বিবেক সাগরদের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। জার্মানপ্রীত সিং হাফ-ব্যাকে বেশ ভাল পারফর্ম করেছেন। অন্যদিকে কমনওয়েলথে বাদ পড়ার পর দলে ফিরে যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন সুরিন্দর সিং।
ড্র্যাগ-ফ্লিকস: ভারতের পেনাল্টি কর্নার কনভারসন রেট অত্যন্ত খারাপ। হরমনপ্রীত সিং সেভাবে কাযর্কারী হতে পারেননি। যেখানে অমিত রোহিদাস ও বরুণ কুমাররা ভরসামান ব্যাক-আপ নন। এরপর হয়তো দলে ফিরতে পারেন রুপিন্দরপাল সিং। ভারতের সহকারী কোচ ও প্রাক্তন অজি ড্র্যাগ-ফ্লিকার ক্রিস সিরেলোককে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।