Amir Ali’s jackpot: আইপিএলের সঙ্গে তুলনা চলে না। কিন্তু, এখন হকি লিগেও যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তাতে অনেক খেলোয়াড়ই উপকৃত হচ্ছেন। যেমন, লখনউয়ের আমির আলি। রাস্তার ধারের গ্যারেজ মালিকের ছেলে আমির, হিল (HIL)-এর নিলাম থেকে ৩৪ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ জল নিগম অফিসের প্রধান ফটকের বাইরে লখনউয়ের হজরতগঞ্জে, আমিরদের পারিবারিক গ্যারাজ। সেখানে কাজ করেন আমিরের বাবা তাসাভুর আলি। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফোনের শব্দ হতেই উদ্বিগ্ন তাসাভুর। হাতে রাখা গ্যারেজের টুলবক্স পাশে ফেলে ছুটলেন ফোন ধরতে। স্মার্টফোন এখনও তাঁর জীবনে বিলাসিতা।
কিন্তু, না ওটা ফোনের না, এসএমএসের ঘণ্টি। সেটা পড়েই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন তাসাভুর। কারণ, তাতে লেখা ছিল যে তাঁর ছেলে আমির আলি কেরিয়ারে সবচেয়ে বেশি বেতন পেয়েছে। হকি ইন্ডিয়া লিগে বিশাখাপত্তনমের একটা দল ২০ বছর বয়সি ডিফেন্ডারকে কিনেছে ৩৪ লক্ষ টাকায়। কিছুক্ষণের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। ‘ইমামবাড়া চাচা’ থেকে পাড়ার ছোট্ট ছেলেটা, সবাই তাসাভুরকে শুভেচ্ছা জানানো শুরু করেন। এই প্রসঙ্গে তাসাভুর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'আমি আশাবাদী ছিলাম। আমি জানতাম, আমির একদিন আমাদের সবাইকে গর্বিত করবে। এই তো শুরু। ও এরপর অনেক দূর যাবে।'
এক দশক আগেও এসব ভাবাই যেত না। তখন হকি খেলে ভালো কিছু করা ছিল যেন 'স্বপ্ন'-র ব্যাপার। বাস্তবটা সত্যিই কঠিন। যে বয়সে খেলোয়াড়রা খেলাধুলার টেকনিক্যাল ব্যাপারগুলো শেখে, সেই বয়সে আমির তাঁর বাবাকে গ্যারেজের কাজে সাহায্য করছিলেন। পরিবারের সদস্যদের ধারণা ছিল, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় আমির পারিবারিক গ্যারেজে যোগ দেবেন। অবশ্য এটাকে গ্যারেজ বলাটা একটু বড় করে দেখানো।
আরও পড়ুন- হাতে সময় অল্প, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য পাকিস্তানের পিঠ চাপড়াতে বাধ্য হল আইসিসি
আমিরের কথায়, 'আমাদের কাছে শুধু একটা ছোট টিনের ব্রিফকেস আছে। আর, জল নিগম অফিসের প্রধান ফটকের বাইরে বসে আছি। এই ইঞ্জিনগুলো খুবই ভারী। তোলা মুশকিল। সেটা দিয়েই গ্যারেজে কাজ করা শুরু হয়েছিল। শিগগিরিই, আমি বাইক সার্ভিসিং শুরু করি। তখন আমার বয়স ১২ বছর। আমার বাবা আমাকে এবং আমার ভাই শাহরুখকে বলেছিলেন, দক্ষতা বাড়াতে হবে। তখন থেকে আমি ওঁনাকে সাহায্য করে যাচ্ছি।' জুনিয়র ইন্ডিয়া দলের অধিনায়কের কথায় যেন ফুটে উঠল এক অনন্য বাস্তবতা।