বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে গ্রুপ-বির প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে ৬ রানে হারিয়ে চমকে দিল স্কটল্যান্ড। শোচনীয় পরিস্থিতি থেকে লোয়ার অর্ডারে দুরন্ত ফাইটব্যাক করেন ক্রিস গ্রেভস। ২৮ বলে ৪৫ রানের দুরন্ত গ্রেভসের দুরন্ত ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষপর্যন্ত স্কটল্যান্ড ১৪০/৯ তুলে দেয় স্কোরবোর্ডে।
টসে জিতে স্কটল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। ১২ ওভারের মধ্যেই স্কটল্যান্ড ৫৩/৬ হয়ে ধুঁকছিল। সেখান থেকে শুরু ক্রিস গ্রেভস ম্যাজিক। মার্ক ওয়াটের (১৭ বলে ২২) সঙ্গে ৫১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে প্রাথমিকভাবে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন গ্রেভস। তারপরে শেষ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডকে লড়াই করার মত স্কোর ১৪০-এ পৌঁছে দেন তিনি।
আরও পড়ুন: সৌরভদের বিরাট প্রস্তাবে সরাসরি ‘না’ পন্টিংয়ের! কোটি কোটি টাকার সুযোগ হেলায় হারালেন মহাতারকা
জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ১৩৪/৭-এর বেশি তুলতে পারেনি। ব্যাটের পরে বল হাতেও ম্যাজিক দেখান গ্রেভস। ৩ ওভারে ১৯ রানের বিনিময়ে গ্রেভস ২ উইকেট শিকার করে যান। সাকিব আল হাসান (২০) এবং মুশফিকুর রহিমের মত দুই তারকা- (৩৮) দুজনেই গ্রেভসের শিকার। গ্রেভসের সঙ্গেই স্কটিশদের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরেন মিডিয়াম পেসার ব্র্যাড হোয়েল (৪ ওভারে ২৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট)। জোশ ড্যাভি এবং মার্ক ওয়াট একটি উইকেট দখল করে দলকে জেতাতে সহায়তা করেন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৪ রান। সাফিয়া শরিফের ওভারে মেহেদি হাসান (১৩ নটআউট) এবং সাইফুদ্দিন (৫ নটআউট) অবশ্য সেই টার্গেট পেরোতে পারেননি।
অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ (২৩) এবং আফিফ হোসেন (১৮) বাংলাদেশকে ম্যাচে রেখেছিলেন। তবে হোসেনকে আউট করে ব্রেকথ্রু দেন মার্ক ওয়াট।
আরও পড়ুন: পরের বছর আইপিএল কোথায়, ফাইনালের মঞ্চে বিরাট আপডেট সৌরভের
তার আগে স্কটিশদের টাইট বোলিংয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। বড় শট হাঁকাতে গিয়ে প্রথমে আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার (৫)। হোয়েলের স্লোয়ারে ঠকে গিয়ে এরপরে ফেরেন লিটন দাসও (৫)। সাত তাড়াতাড়ি দুই উইকেট হারানোর পরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রান যোগ করে দলকে টানছিলেন। তবে এই জুটিতে ভাঙন ধরান গ্রেভস। স্কটিশ তারকার হাফ ট্র্যাকারে মিস হিট করে বসেন সাকিব। দৌড়ে গিয়ে সেই ক্যাচ তালুবন্দি করেন ম্যাকলয়েড।
এর পরে মুশফিকুর জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব স্থাপন করেছিলেন। তবে গ্রেভসের সেই ওভারেই গুড লেংথের বল স্কুপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান।
এর আগে স্কটল্যান্ড নিজেদের ইনিংসে ব্যাপক সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল। তৃতীয় ওভারেই সাইফুদ্দিন কাইল কোয়েৎজারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশের বোলিংয়ের সামনে স্কটল্যান্ড ৩৯/১ এর বেশি তুলতে পারেনি। এরপরে স্কটিশ ইনিংসে ধস নামান মেহেদি হাসান এবং সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম ওভারেই মেহেদি ফিরিয়ে দেন উইকেট কিপার ম্যাথু ক্রস (১১) এবং জর্জ মুনসিকে (২৯)। দুজনেই দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ রান যোগ করে ফেলেছিলেন।
সাকিব পরপর ফিরিয়ে দেন রিচি বেরিংটন (২) এবং মিচেল লিস্ককে (০)। ক্যালাম ম্যাকলয়েড মেহেদি হাসানের তৃতীয় শিকার হওয়ার পরে স্কটল্যান্ড ৫৩/৬ হয়ে যায়। এরপরেই শুরু গ্রেভসের ম্যাজিক। চার বাউন্ডারি এবং জোড়া ওভার বাউন্ডারিতে স্কটল্যান্ডকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন গ্রেভস।
এই নিয়ে বিশ্বকাপে মোট দুবার জিতল স্কটল্যান্ড। এর আগে ২০১৬-য় স্কটল্যান্ড জিতেছিল হংকংয়ের বিরুদ্ধে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন