আইপিএলে একের পর এক নিখুঁত ইয়র্কারে নজর কেড়েছিলেন। তারপরেই অস্ট্রেলিয়াগামী জাতীয় দলের জার্সিতে সুযোগ পান টি নটরাজন। আর ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেই প্রথম একাদশে অভিষেকও করে ফেললেন তিনি।
২৯ বছরের প্রতিশ্রুতিমান পেসারের উঠে আসার গল্প কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না। বাবা একজন দিনমজুর। মার নিজস্ব একটি মুরগি মাংসের দোকান রয়েছে। এমন পরিবারে নটরাজনের জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে।
আরো পড়ুন: বিরাট না রোহিত, কাকে ক্যাপ্টেন চান ভারতীয় সমর্থকরা, সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর ফল
অদ্ভুত হলেও সত্যি নটরাজন ১৯ বছর পর্যন্ত টেনিস বলে খেললেও ক্রিকেট বলটাই খেলেননি। তবে শুরুতেই তিনি নজর কাড়েন মেন্টর জেপি নাতটুর। তিনিই নটরাজনকে গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে যান চেন্নাই। সেখানে চেন্নাই লিগ খেলার সুযোগ করে দেন।
A massive day for @Natarajan_91 today as he makes his #TeamIndia debut. He becomes the proud owner of ???? 232. Go out and give your best, champ! #AUSvIND pic.twitter.com/YtXD3Nn9pz
— BCCI (@BCCI) December 2, 2020
এরপরেই নটরাজন নিজের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সমস্যায় পড়েন। বেশ কিছু ম্যাচ বাইরেও থাকতে হয়। এরপরে প্রত্যাবর্তনেই তিনি বুঝিয়ে দেন তাঁর প্রতিভার পরিচয়। বছরের পর বছর টেনিস বল খেলার অভিজ্ঞতা টি২০ ক্রিকেটের ডেথ ওভারে ঢেলে দেন। তখন থেকেই তাঁর নামের পাশে জুড়ে যায় টি২০ স্পেশালিস্ট! কয়েক বছর আগেই আরসিবি ক্যাম্পে পিনপয়েন্ট ইয়র্কারে স্ট্যাম্প ছিটকে দিয়েছিলেন এবি ডিভিলিয়ার্সের। তারপরেই আইপিএল দুনিয়ার নজরে পড়ে যান।
২০১৬ সালে কেরিয়ারের সবথেকে বড় ব্রেক থ্রু পান তিনি। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে ডিনদীগুল ড্রাগনস-এর হয়ে মারকাটারি পারফরম্যান্স মেলে ধরেন তিনি। আইপিএল স্কাউটদের নজরে পড়ে যান। ২০১৭ সালের নিলামে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ৩ কোটি টাকায় কেনে নটরাজনকে। তবে তারপরেও প্রথম একাদশে নিয়মিত হয়ে উঠতে পারছিলেন না। শেষ তিন বছরে যে ছয়টি আইপিএল ম্যাচে খেলেছিলেন। সেখানে খরুচে হিসাবে নাম হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ২০১৮ সালেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদ কেনে নটরাজনকে। এই বছরেই নিয়মিত খেলেছিলেন। আর তাতেই কেল্লাফতে।
মাঝে আইপিএল দুনিয়াতেও পাকাপাকিভাবে নিজের আবির্ভাব জানান দেওয়ার আগে নটরাজন সামাজিক পারিবারিক কর্তব্য পালন করেছেন। ভেঙে পড়া বাড়ি মেরামত করেছেন। বোনকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন ভালো কলেজে ভর্তি করে। তামিলনাড়ুর সালেম জেলায় নিজের গ্রাম ছিন্নাপ্পাপট্টিতে নিজের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলেছেন। নিজের এ সতীর্থ ক্রিকেটারকে খেলা থেকে দূরে সরে যেতে নিষেধ করেছেন।
নিজের ক্রিকেট প্রশিক্ষণ ঠিকমত হয়নি। গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কারোর যাতে এই সমস্যা না হয়, সেই কারণেই অ্যাকাডেমি খুলেছেন। নিজের গ্রাম ও রাজ্যের প্রাক্তন সতীর্থদের আর্থিক সাহায্য করে থাকেন নিয়মিত। এই না হলে চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন