নিউজিল্যান্ড: ১৭২/৪
অস্ট্রেলিয়া: ১৭৩/২
ফের স্বপ্নভঙ্গ নিউজিল্যান্ডের। স্বপ্নভঙ্গের নাম নিউজিল্যান্ড। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ক্যাপ্টেনস নকেও শেষরক্ষা হল না। বিশ্বকাপের ফাইনালে ট্রান্স তাসমানিয়ান যুদ্ধে নিউজিল্যান্ডকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফের একবার চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের ১৭৩ রানের টার্গেট হাতে ৮ উইকেট নিয়ে ৭ বল বাকি থাকতে স্বচ্ছন্দে পেরিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটিং বিস্ফোরণের পাল্টা দিলেন অজি অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। ৫০ বলে ৭৭ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসে প্রথমবারের মত অস্ট্রেলীয়দের টি২০ খেতাব এনে দিলেন। তাঁকে যোগ্য সহায়তা করলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ৩৮ বলে ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে।
আরও পড়ুন: উইলিয়ামসনের তাণ্ডবে ছারখার অস্ট্রেলিয়া! রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে রাজত্ব ক্যাপ্টেন কেনের
কিউয়িদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই ক্যাপ্টেন ফিঞ্চকে হারিয়েছিল। তৃতীয় ওভারেই ফিঞ্চকে ফিরিয়ে অজিদের ধাক্কা দিয়েছিলেন বোল্ট। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ওয়ার্নার-মার্শের ৯২ রানের পার্টনারশিপই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। ওয়ার্নার হাফসেঞ্চুরির পরেই বোল্টের বলে ফিরে গেলেও ম্যাক্সওয়েলকে (১৮ বলে ২৮) সঙ্গে নিয়ে মার্শের দলকে জেতাতে কোনও সমস্যাই হয়নি।
অথচ মার্শের মস্তানি নয়, কুড়ি কুড়ি বিশ্বযুদ্ধে যাবতীয় শিরোনামে থাকতে পারতেন কিউয়ি নেতা কেন উইলিয়ামসন। দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে মরুঝড় তুলে ধরেছিলেন মহাতারকা।
টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালে ব্যক্তিগত যুগ্ম সর্বোচ্চ স্কোর এবং দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি- জোড়া রেকর্ডে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন কিউয়ি ক্যাপ্টেন। প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্কদের মত সেরার সেরাদের ছাতু করে ৪৮ বলে ৮৫ রানে বিস্ফোরক ইনিংসে দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন ১৭২/৪-এর নিরাপদ স্টপেজে। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হল না।
আরও পড়ুন: ফাইনালে নেমেই বিশ্বরেকর্ড উইলিয়ামসন-বোল্টের! এমন নজির আর কারোর নেই
টসে হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার দুরন্ত বোলিং প্রথম থেকেই ব্যাকফুটে ছিল কিউয়িরা। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ড্যারেল মিচেলকে ফিরিয়ে বড়সড় আঘাত হেনেছিলেন জোশ হ্যাজেলউড। এরপরে জাম্পা, হ্যাজেলউড, কামিন্সদের আটোসাঁটো বোলিংয়ে রান তোলার গতি হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।
দলগত হাফসেঞ্চুরিতেই পৌঁছতে নিউজিল্যান্ড প্রায় ৯ ওভার নিয়ে নেয়। তবে ১০ ওভারের পর পুরো খেলাই কেন উইলিয়ামসন-ময়। উইলিয়ামসনের ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় হ্যাজেলউড ক্যাচ মিস করে বসেন বাউন্ডারি লাইনের ধারে। তারপরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
কেন উইলিয়ামসনের স্বভাববিরুদ্ধ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে পুরো অজি বোলিং আক্রমণই খেই হারিয়ে ফেলে। সবথেকে বেশি নির্দয় ছিলেন স্টার্কের বিরুদ্ধে। ১৬তম ওভারে স্টার্কের ওভারে উইলিয়ামসন চারটে বাউন্ডারি, একটা ওভার বাউন্ডারি সমেত তুলে যান ২২ রান। স্টার্ক নিজের ৪ ওভারের কোটায় খরচ করলেন রান ৬০ রান। টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে স্টার্কই সবথেকে খরুচে বোলার।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন কোন দল, আগাম ভবিষ্যৎবাণী করলেন সৌরভ
হ্যাজেলউড শেষমেশ উইলিয়ামসনকে ফেরালেও তাঁর আগে দলের বড় রানে পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করে যান। অজি বোলারদের মধ্যে সবথেকে নজরকাড়া বোলিং করলেন জোশ হ্যাজেলউড। কিউয়ি ব্যাটিং তান্ডবের মুখে দাঁড়িয়েও তিনি নিজের ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানের বিনিময়ে তিনজনকে আউট করে যান। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে আগুন জ্বালানো উইলিয়ামসনকে তিনিই ফেরান শেষমেশ।
বড়সড় টোটালও অবশ্য দিনের শেষে ডিফেন্ড করতে পারল না ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ট্রেন্ট বোল্ট৪ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে দুরন্ত বোলিং করে গেলেও বাকিরা অজি ঔদ্ধত্যের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন