Advertisment

পাকিস্তানকে হারিয়ে ঐতিহাসিক প্রতিশোধ ইংল্যান্ডের! স্টোকসের ব্যাটে তছনছ বাবরদের চ্যাম্পিয়ন-স্বপ্ন

টসে জিতে পাকিস্তানকে প্ৰথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ইংল্যান্ড

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

পাকিস্তান: ১৩৭/৮
ইংল্যান্ড: ১৩৮/৫

Advertisment

৩০ বছর আগের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি হল না। ঐতিহাসিক মেলবোর্নে ১৯৯২ বিশ্বকাপের বদলা নিয়ে কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ দখল করল ইংল্যান্ড। পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বক্রিকেটে আরও একবার চ্যাম্পিয়ন জস বাটলারের ইংল্যান্ড। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড, তিন বছরের মধ্যেই। পাকিস্তানের ১৩৮ রানের টার্গেট তাড়া করে ইংল্যান্ড জিতল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে। এক ওভার বাকি থাকতে।

আর পাকিস্তানকে বধ করে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে বেন স্টোকস। দেশের বিশ্বকাপ-বদলা নেওয়ার ম্যাচেই যিনি ব্যক্তিগত শাপমোচন করে গেলেন রবিবার। ২০১৬-র টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ইডেন গার্ডেন্সে কার্লোস ব্রেথওয়েট চার-ছক্কায় স্টোকসকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের হারে রাতারাতি খলনায়ক বনে গিয়েছিলেন তারকা অলরাউন্ডার। রবিবার ছয় বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটালেন। ব্যাট হাতে। পুরোনো 'পাপের' প্রায়শ্চিত্ত করলেন এমসিজিতে।

আরও পড়ুন: সেমিতে কলঙ্কের হারেও সুখবর! কোটি কোটি টাকার পুরস্কার পেয়ে দেশে ফিরছে টিম ইন্ডিয়া

১৩৭ রান ডিফেন্ড করতে নেমে পাকিস্তানের সিমাররা ইংল্যান্ডকে শুরু থেকে প্রবল চাপে রেখেছিল। রান চেজ করার সময় ম্যাচ পেন্ডুলামের মত কখনও ইংল্যান্ডের দিকে, কখনও পাকিস্তানের দিকে ঢলল। টানটান ম্যাচে হ্যারিস রউফ, নাসিম শাহ, শাহিন আফ্রিদির পেস বরাবর পাল্টা লড়াই ছুড়ে দিল অল্প রানের পুঁজি নিয়েও।

আলেক্স হেলস, ফিল সল্ট ফিরে যাওয়ার পর অধিনায়ক বাটলার বেন স্টোকসকে নিয়ে দলকে টানছিলেন। তবে পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই হ্যারিস রউফ ফিরিয়ে দেন বাটলারকে (১৭ বলে ২৬)। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ৪৫/৩ এবং সেখান থেকে ক্রিজে টিকে যাওয়া হ্যারি ব্রুকস (২৩ বলে ২০) আউট হয়ে যাওয়ার পরে ইংল্যান্ড একসময় ৮৪/৪ হয়ে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন: গুজরাট টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করা ১০ কোটির তারকা এবার KKR-এ! বিরাট চমকে বড় ঘোষণা নাইটদের

তবে যাবতীয় চাপ একাই ব্যাট হাতে শুষে নিলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের ক্যাপ্টেন। দুর্ধর্ষ হ্যারিস রউফ, নাসিম শাহদের সামলে একদিকে যেমন ক্রিজ আঁকড়ে মরিয়া লড়াই চালালেন। তেমন শেষদিকে খাপ খুললেন।

পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিল শাহিন আফ্রিদির চোটও। হ্যারি ব্রুকসের ক্যাচ ডিপ মিড উইকেটে ধরতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পান তারকা। খানিক শুশ্রূষা নিয়ে মাঠে ফিরে বল হাতে রান আপেও দাঁড়িয়েছিলেন। তবে এক বল হাতে ঘুরিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আফ্রিদিকে।

শেষদিকে রুদ্ধশ্বাস রোমাঞ্চের ইঙ্গিত দিয়ে ইংল্যান্ডকে শেষ ৫ ওভারে তুলতে হত ৪১ রান। দুর্ধর্ষ পাক-বোলারদের সামনে ইংল্যান্ড তখন রীতিমত ভয়ার্ত। তবে ষোলতম ওভারটাই হয়ে দাঁড়াল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। শাহিন আফ্রিদি মাঠ ছাড়ার পর ওভারের বাকি পাঁচ বল করার দায়িত্ব দেওয়া হয় পার্ট-টাইম স্পিনার ইফতিকার আহমেদকে। স্টোকস সেই ওভারেই একটা বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৩ রান তুলে চাপ অনেকটা হালকা করে দেন।

আফ্রিদির বাকি দুই ওভার আর সামলে দিতে পারেনি বাকি পাক বোলাররা। নাসিম শাহ, হ্যারিস রউফদের বোলিং কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় ডেথ ওভারে অনভিজ্ঞ মহম্মদ ওয়াসিমের ওপর ভরসা করতে হয় বাবর আজমকে। দুর্ধর্ষ বেন স্টোকস এর ফায়দা নিয়েই হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেন। মঈন আলিও ১৩ বলে ১৯ রানের ক্যামিও খেলে যান।

তার আগে চেনা ফর্মুলায় টসে জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাট করতে পাঠানোয় দ্বিধা করেননি জস বাটলার। পাকিস্তান এমসিজিতে শুরুটা মোটেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে করতে পারেনি। ১৪ বলে ১৫ করে মহম্মদ রিজওয়ান আউট হয়ে গিয়েছিলেন। মহম্মদ হ্যারিসও মনে রাখার মত দিন উপহার দিতে পারেননি দর্শকদের। সাত তাড়াতাড়ি ফেরেন তিনিও।

আর পাকিস্তানি ব্যাটিংকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন আদিল রশিদ এবং স্যাম কুরান। চলতি বিশ্বকাপে স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন রশিদ। তিনি চার ওভারের কোটায় ফাইনালে মাত্র ২২ রান খরচ করে তুলে নেন জোড়া উইকেট। চলতি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ডেলিভারিতে তিনি এদিন ফেরান পাক ক্যাপ্টেন বাবর আজমকে। রশিদের গুগলি পড়তে না পেরে তাঁর হাতেই ক্যাচ তুলে বিদায় নেন বাবর আজম।

আরও পড়ুন: CSK-র আইপিএল চ্যাম্পিয়ন তারকা এবার মুম্বইয়ে! বিশ্বকাপ চলার সময়ই বিরাট ঘোষণা রোহিতদের

আর ম্যাচের সেরা স্যাম কুরান বল হাতে আসল ফারাক গড়ে দেন। চার ওভারের স্পেলে ১২ রান খরচ করে কুরানের শিকার তিন জন পাক ব্যাটসম্যান। ক্রিস জর্ডনও স্লগ ওভারে দুই উইকেট শিকার করে যান। শন মাসুদ ২৮ বলে ৩৮ করে পাকিস্তানের টপ স্কোরার। পরপর উইকেট হারিয়ে পাক ব্যাটিং লাইন আপ কখনই সেভাবে ছন্দ খুঁজে পায়নি। নির্ধারিত ২০ ওভারে কোনওরকমে ১৩৭/৮ তুলতে সমর্থ হয়।

England ICC Cricket World Cup Pakistan Cricket T20 World Cup
Advertisment