Table Tennis player Bharati Ghosh: বাংলা তথা দেশের টেবল টেনিস জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। ৮৩ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন প্রখ্যাত টেবল টেনিস কোচ, 'বঙ্গরত্ন' ভারতী ঘোষ। তিনি গত কয়েকমাস ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার তিনি নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতী ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরই তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। কোচকে ভর্তি করা হয়েছিল মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে।
শিলিগুড়ির পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিঙের শিশুদেরও টেবল টেনিসের প্রশিক্ষণ দিতেন এই কোচ। পাঁচ দশক ধরে তিনি কোচিং করিয়েছেন। রেলে চাকরি করতেন। পাশাপাশি, চলত প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ। অলিম্পিয়ান মান্তু ঘোষ, সৌম্যজিৎ ঘোষরা তাঁর হাতেই তৈরি। তাঁর কোচিংয়ে প্রায় হাজার তিনেক টেবল টেনিস খেলোয়াড় তৈরি হয়েছেন। যাঁদের অনেকে আবার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ভারতী ঘোষের অন্যতম কৃতী ছাত্রী মান্তু ঘোষ বলেন, 'ভারতী দি'র মৃত্যু ক্রীড়াজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি বহু টেবল টেনিস খেলোয়াড় তৈরি করেছেন।' শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, 'আমরা ভারতী ঘোষকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলাম। তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ক্রীড়াগুরু এবং বঙ্গরত্ন সম্মানও পেয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর কথা জেনে সত্যিই খুব খারাপ লাগছে।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার ২০১৯ সালে ভারতী ঘোষকে 'বঙ্গরত্ন' পুরস্কারে সম্মানিত করেছিল। পাশাপাশি, ২০২১ সালে ক্রীড়া দফতর তাঁকে 'ক্রীড়াগুরু' সম্মানেও ভূষিত করে। এমনিতে কোনও কোচিংয়ে ডিগ্রি তাঁর ছিল না। কিন্তু, তারপরও তিনিই ছিলেন প্রশিক্ষক হিসেবে রাজ্যের টেবল টেনিসের অন্যতম সেরা কোচ।
তাঁর জীবনের কাহিনি সম্পর্কে শোনা যায়, ভাইয়ের বন্ধুর সাহায্যে শিলিগুড়ির বিখ্যাত সেহগল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন। হাতেগোনা কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে টেবল টেনিস খেলতেন। কোচ ছাড়াই প্রশিক্ষণ নিতেন। প্রথমে সিনিয়রদের দেখে খেলাটি রপ্ত করেন। পরে, মহাবীরস্থানে এক কোচিং ক্যাম্পেও ভরতি হয়েছিলেন। অত্যন্ত অল্প সময়েই এই খেলা রপ্ত করে নিয়েছিলেন। তারপরই শুরু করেন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ।
আরও পড়ুন- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি: বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড: টাইগারদের তুরুপের তাস, কে এই নাহিদ রানা?
অবিবাহিত এই কোচ থাকতেন শিলিগুড়িরই দেশবন্ধু পাড়ার এক ছোট্ট ঘরে। একাই থাকতেন। নিজের সব কাজ একাই করতেন। বেতন দিতে না পাড়া প্রতিভাবান খেলোয়াড়দেরকে প্রশিক্ষণ দিতেন। প্রতিবন্ধীদেরও দিতেন বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ। ফলে, তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও ছিল প্রচুর।