India vs New Zealand: কেরিয়ারটা বাউন্ডারি লাইনে চলে গিয়েছিল। সাইড লাইনে যাওয়া ছিল শুধুই অপেক্ষা। বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট, পারফরম্যান্সের ঝলকানিতে ভরিয়ে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি এখন যেন ২২ গজের রাজা। শ্রীলঙ্কায় বিরুদ্ধে হারের পরই অধিনায়কত্ব হারিয়েছিলেন এই অভিজ্ঞ পেসার। বেঙ্গালুরু বোঝাল, তিনি ফুরিয়ে যাননি।
ক্রিজে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫০ ছোটান সরফরাজ তাঁর বলে ঠকঠক করে কেঁপেছেন। মিড অফে ক্যাচ দিয়ে শেষ পর্যন্ত সাউদিকে রেহাই দিয়েছেন। ভারত অধিনায়ক, বিগ হিটার রোহিতও ঠকেছেন তাঁর বলে। কেরিয়ারের সূর্যাস্তে বছর ৩৫-এর আন্ডাররেটেড ক্রিকেটার, ফাস্ট-বোলিংয়ের অভিজাত কুশীলবদের তালিকায় না থেকেও যেন বোঝালেন তাঁর মানের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি।
তিনি না-ই বা হতে পারেন বুমরা, রাবাদা, বোল্ট। কিন্তু, ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিতে লাইন-লেংথ রাখা আর নৈপুণ্যের কারসাজিটা তাঁরও আসে। সঙ্গে ব্যাটিংটা? তিন ফরম্যাটে সেঞ্চুরি আছে। পাশাপাশি, নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। অ্যান্ডারসনের চেয়ে ভারত, শ্রীলঙ্কায় তাঁর রানের গড় ভালো। অনেক সাউদি অনুরাগীর তো দাবি, যে তিনি যখন রান পান, তখনই নাকি নিউজিল্যান্ড জয়ী হয়।
একবার পডকাস্টে বলেছিলেন, 'আমি যতটা না নেতা, তার চেয়ে বেশি সৈনিক। লোকেদের অর্ডার দেওয়ার চেয়ে নিজে কাজ করে দেখাতে বেশি ভালো পারি।' তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ এবং মাউঙ্গাকারমেয়া ক্রিকেট ক্লাবের কোচ স্টিভ কুনিসের মতে, 'একদম লাজুক ছেলে। সব সময় হাসে। তবে বোলিংটা ভালো করে। অভিজ্ঞ ব্যাটাররা ওঁকে হেলাফেলা করতে গেলেই ঠকবে। ওঁর চরিত্রটা খুবই কঠিন। এমন একটা চরিত্র, যে নিজের স্বপ্নটাকে কখনও বিসর্জন দেয় না।'
স্টিভ কুনিস বলেছেন, 'সাউদি একটা ক্রিকেট ক্লাবে খেলত। ওয়াইওতিরায় ওর বাড়িটা একটা বিরাট খামার। সেটা ওয়াংগারেইয়ের ওই ক্রিকেট ক্লাব থেকে ৩০ মাইল দূরে। সেই খামার বাড়িতে ওঁর বোনরা টেনিস খেলে। প্রতি উইকেন্ডে, ওর বাবা মারে সকালে টিমকে ক্রিকেট ক্লাবে দিয়ে যেত। সন্ধ্যায় নিয়ে যেত। ক্লাবে ও সব সময় বল করত। কখনও হয় আউট-সুইঙ্গার দিচ্ছে। না হলে স্লোয়ার বল করছে, এরকম চলত।'
আরও পড়ুন- 'দঙ্গল' তোলপাড়! লোভীরা ভিনেশ আর বজরংকে ছেঁকে ধরেছে, নোংরামিটা ধরে ফেলে নিশানা সাক্ষীর
কোচ জানিয়েছেন, সাউদি ছেলেবেলায় সবসময় শিখতে চাইত। নতুন কিছু শেখার ভীষণ আগ্রহ ছিল। হয়, আউট-সুইঙ্গার ভালো করার চেষ্টা করছে। না-হলে অন্যকিছু। এরপর ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন কোচ জন ব্রেসওয়েল বলেন, 'বয়সের চেয়ে বলের ওপর ওঁর নিয়ন্ত্রণটা ছিল দেখার মত। ওঁর শরীরটা ছিল ফাস্ট বোলারদের মতই ফিট। তার ফলে ইনজুরি কম পেত।' যে ইনজুরির সমস্যায় শেন বন্ড, সাইমন ডল, ডিয়ন ন্যাশ, শ্যেন ও'কনররা ভুগেছে- সেই সমস্যা সাউদির ছিল না। বেঙ্গালুরু বোঝাল, সাউদি আছেন আগের মতই।