অবসর ভাবনা ওয়ার্নারের। রাসেলের পাল্টা দিলেন কার্তিকও। আইপিএল নিয়ে বোর্ডের পরিকল্পনা শুরু। অবশেষে জয় আনন্দের।পিওনের চাকরিতে আবেদন প্রতিবন্ধী ক্যাপ্টেনের।
ওয়ার্নারের ভবিষ্যৎ
করোনা পরবর্তী সময়ে খেলা চালু হলে, দীর্ঘদিন পরিবার ছাড়াই কাটাতে হবে। এমন ভাবনা থেকেই এবার ভবিষ্যতের কথা ভাবতে শুরু করে দিলেন তিনি। ক্রিকইনফো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অজি বিধ্বংসী ওপেনার ওয়ার্নার জানিয়েছেন, "আমার ক্রিকেট কেরিয়ারে আমার স্ত্রী ক্যান্ডিস ও দুই মেয়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে। সবসময়েই পরিবারকে আগে প্রাধান্য দিতে হয়। আর এমন সময়ে ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ভাবনা চিন্তা করতেই হবে। ক্রিকেট মাঠে ফেরাই লক্ষ্য ছিল আমার। ঘরের মাঠে টি২০ বিশ্বকাপ খেলা আদর্শ ছিল। এখন সেটাও পিছিয়ে গিয়েছে।"
ওয়ার্নার আপাতত নিজের সিদ্ধান্ত পরিবারের সঙ্গে বসেই ঠিক করতে চান। তিনি বলছেন, "স্কুলে বাচ্চারা যাচ্ছে। আমি কোথায় থাকব, সেই সব ভাবনা চিন্তা করেই পরিবারের সঙ্গে যৌথ সিদ্ধান্ত নেব আমি। এটা পুরোটাই ফ্যামিলি ডিসিশন।"
বল বিকৃতি পর্ব মিটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুদিন আগেই প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তিনি। তিনি তিন কন্যার পিতা। তাই তিনি সাফ জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা মোটেই সহজ নয়।
করোনার প্রভাবের মধ্যেই জৈব নিরাপদ পরিবেশে ক্রিকেট চালু করার বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে ইংল্যান্ড ও ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ড। তিন টেস্টের সিরিজের শেষ টেস্ট ইতিমধ্যেই শেষ দিনের খেলা হচ্ছে মঙ্গলবারে। এরপরেই হবে ইংল্যান্ড-পাক সিরিজ। পাশাপাশি আইপিএলও শুরু হয়ে যাবে সামনের সেপ্টেম্বরে।
এমন পরিস্থিতিতেই সব দিক খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেবেন ওয়ার্নার।
পিয়নের চাকরি
প্রতিবন্ধী দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহু ম্যাচ খেলেছেন। দেশের হয়ে অধিনায়কত্বও করেছেন। তবে ভাগ্য বিড়ম্বনায় পড়ে দীনেশ সাইন আপাতত পিয়নের চাকরি করতে চান। নাডা-র দফতরে আবেদনও করেছেন।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, "৩৫ বছর বয়সে স্নাতক স্তরে পড়াশুনা করছি। দ্বাদশ শ্রেণির পরে ক্রিকেট খেলেছি। দেশের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করেছি। তবে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত অর্থ কষ্টে রয়েছি। নাডায় একটি পিওনের পদ খালি রয়েছে।"
জন্ম থেকেই পোলিও রোগাক্রান্ত তিনি। এই প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই ২০১৫ থেকে ২০১৯ এর মধ্যে নয়টি ম্যাচ খেলেছেন। নেতৃত্বও দিয়েছেন। স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে প্রবল সমস্যায় পড়েছেন। তাই চাকরি করে সংসারে থিতু হওয়াই তাঁর আপাতত লক্ষ্য। এতদিন দিনেশের সংসার চালাতে সাহায্য করছিলেন তাঁর দাদা। তবে তিনিও এখন সমস্যায়। তাই চাকরি পেতে বদ্ধপরিকর তিনি।
এর আগে জেলার আদালতে আবেদন করেছিলেন। তবে এখন তিনি বলছেন, "সাধারণ হলে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ২৫। তবে প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এই বয়স ৩৫। তাই চাকরি পাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ।"
সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, "ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার জন্য কখনই উপলব্ধি করতে পারিনি যে আমি প্রতিবন্ধী। ২০১৫ সালে পাঁচ দলীয় টুর্নামেন্টে আমি সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ছিলাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও দু উইকেট নি-ই।"
২০১৯ সালে আবার একজন সরকারি আধিকারিক হিসাবে ইংল্যান্ড ট্যুরে যান তিনি। তবে খেলোয়াড়, আধিকারিক হিসাবে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অর্থ কষ্টে ভুগেছেন সর্বদাই। এখন তাঁর আশা, নাডায় চাকরি হয়ে গেলে তিনি অবসর সময়ে নতুনদের গাইড করতে পারবেন।
আনন্দ জিতলেন
টানা ছয় ম্যাচ হার সহ্য করার পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। লিজেন্ডস অফ চেজ অনলাইন টুর্নামেন্টের সপ্তম রাউন্ডে আনন্দ এদিন হারালেন ইজরায়েলের বরিস গেলফাদকে। খেলার ফলাফল ২.৫-.৫।
সোমবার রাতে প্রাথমিক এডভান্টেজ কাজে লাগাতে পারেননি তারকা দাবাড়ু। কালো ঘুঁটি নিয়ে প্রথম গেম ৪৫ চালেই জয় ছিনিয়ে নেন তিনি। সেকেন্ড গেমে প্রতিদ্বন্দ্বীকে কিস্তিমাত করেন ৪৯ চালে। তৃতীয় গেমে ৪৬ চালের খেলায় আনন্দ এরপরে ড্র করে শেষ হাসি হাসেন।
এই জয়ের ফলে ছয় পয়েন্ট সংগ্রহ করে ক্রমতালিকায় অষ্টম স্থানে উঠে এলেন ভারতীয় কিংবদন্তি। পিছনে ফেললেন হাঙ্গেরির পিটার লেকো (৫) এবং চীনের ডিং লিরেনকে (৩)।
ম্যাগনাস কার্লসেন চেজ টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলছেন ভারতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার। ম্যাগনাস কার্লসেন চেজ ট্যুর টুর্নামেন্ট এ কার্লসেন, লিরেন, নেপোমনিয়াচি এবং গিরি চার তারকা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪০-৫০ বছরের কিংবদন্তি দাবাড়ুদের বিরুদ্ধে। এই টুর্নামেন্টে এবারই প্রথমবার অংশ নিচ্ছেন আনন্দ।
অষ্টম রাউন্ডে আনন্দ খেলবেন বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে তিন নম্বরে থাকা চীনের ডিং লিরেনের বিরুদ্ধে।
আইপিএল ও বিসিসিআই
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আইপিএল ব্যবস্থা প্রায় পাকা। আপাতত কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতীয় বোর্ড। বিসিসিআইও শীঘ্রই প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে পৌঁছে দেবে 'কী করা যাবে, যাবে না'-র নির্দেশিকা। তার আগে সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে সম্ভবত আরব আমিরশাহিতে পরিদর্শক দল পাঠানো হবে ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে।
এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় জানতে আগ্রহী ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্রিগেড। যেমন-
১) ক্রিকেটারদের পরিবার: সংক্রমণের সময়ে পরিবারকে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভ্রমণে অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। বোর্ডের এক কর্তা বলছেন, দু মাসের জন্য পরিবার থেকে ক্রিকেটারদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা রীতিমত অপরাধ। মনে রাখতে হবে আইপিএলে জৈব নিরাপত্তা বলয়ে কোনো সামাজিক যোগাযোগ ছাড়াই কাটাতে হবে ক্রিকেটারদের। এখন পরিবার বিহীন হয়ে থাকলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন ক্রিকেটাররা।
এক কর্তা তাই বলছেন, "সাধারণ সময়ে স্ত্রী, বান্ধবী সহ পরিবারের বাকিরা নির্দিষ্ট সময়ে দেখা করতে পারেন ক্রিকেটারের সঙ্গে। তবে এখন পরিস্থিতি একদমই আলাদা। যদি পরিবারকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে কি তাদের ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে হবে নাকি নিজেদের মত ঘুরতে যেতে পারবেন? অনেক ক্রিকেটারদেরই ৩-৫ বছরের বাচ্চা রয়েছে। তাদের পক্ষে কীভাবে একটাই ঘরে থাকা সম্ভব।"
আরও পড়ুন
করোনা রুখতে এদেশেই এবার সুন্দরী রোবট, কীর্তি জানলে চমকে উঠবেন
২) ছোট ছিমছাম হোটেল নাকি রিসর্ট?
স্বাভাবিক সময়ে ক্রিকেটাররা পাঁচতারা হোটেলেই থাকতে পছন্দ করেন, যেখানে সবাই এসে দেখা করতে পারেন। তবে এই পরিস্থিতিতে শুধু থাকার জন্য পাঁচতারা হোটেল ভাড়া নেওয়াটা অর্থের অপচয় বলেই মনে করছেন অনেকে। এক কর্তা বলছেন, দুবাইয়ে অনেক তিন তারা বুটিক হোটেলেও পাঁচ তারার সুবিধা পাওয়া যায়। পাশাপাশি, মরু শহরে অনেক রিসর্টও রয়েছে যা দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া হয় থাকে।
২০১৪ সালে দুবাইয়ে আইপিএলের সময়ে যুক্ত থাকা এক কর্তা জানিয়েছেন, "সব ফ্র্যাঞ্চাইজির সুযোগ সুবিধা অবশ্য সকলের মত হবে না। যেমন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এই কঠিন সময়েও ওদের কাছে সেরা পরিকাঠামো রয়েছে। নিজস্ব বিমান যেমন রয়েছে তেমনই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে সেরা চিকিৎসকদের ওরা উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। ফাইভ স্টার হোটেল ওঁরা ভাড়া করতেই পারে। অন্যদের ভাবতে হবে তারা কী করবে। বিচ রিসর্টই তাঁদের পক্ষে আদর্শ।" রিসর্ট এ থাকার সুবিধা কী, সসি কর্তা জানাচ্ছেন, সেন্ট্রাল এসি না থাকায় এবং আলাদা আলাদা কটেজে বিচ্ছিন্ন থাকায় সংক্রমণের সম্ভবনা অনেক কম।
টিম বাস ড্রাইভার এবং স্থানীয় নিরাপত্তা আধিকারিক:
সাধারণ সময়ে বিদেশ সফর কালে সেই দেশের বোর্ডের তরফে একজন লোক্যাল ম্যানেজার এবং টিম বাস দেওয়া হয়, যেখানে চালক দিনের শেষে বাড়ি ফিরে যান। তবে ভাইরাস সংক্রমণের সময় স্থানীয় লিয়াজোঁ অফিসার এবং গাড়ির চালক দুজনকেই সম্ভবত জৈব নিরাপত্তা পরিবেশে দু মাসের জন্য রেখে দেওয়ার কথা বলা হবে।
ক্যাটারিং:
খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের প্রতিদিন টেস্ট করা হবে এবং বাস ড্রাইভার এবং লিয়াজোঁ অফিসারের মত তাঁদেরও সম্ভবত বায়ো সিকিওর পরিবেশে রেখে দেওয়া হবে।
রাসেলের পরেই মুখ খুললেন কার্তিক
গত সংস্করণেই তিক্ততার শুরু হয়েছিল। কেকেআরের দুই তারকা আন্দ্রে রাসেল বনাম দীনেশ কার্তিক লেগে গিয়েছিল টুর্নামেন্টের মাঝপথেই। তবে দীনেশ কার্তিক দাবি করে বসলেন ক্যারিবিয়ান তারকার সঙ্গে মনোমালিন্য মিটিয়ে ফেলেছেন তিনি।
কেকেআরের অধিনায়ক এক ক্রিকেট শো এ এসে জানালেন, "রাসেল এমন একজন যে নিজের হৃদয় উজাড় করে খেলে ও যেটা বলেছে সেটা হয়ত হৃদয় থেকেই বলেছে। তবে যেটুকু বুঝেছি ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা সোজাসুজি কথা বলতে পছন্দ করে। যেটা ওরা বলে যথেষ্ট সততার সঙ্গেই বলে থাকে। মানুষ কীভাবে বিষয়টি নেবে সেটা সম্পূর্ন তাঁদের বিষয়। যদি কেউ এটা খারাপভাবে নেয়, সেটা তাদের ভুল। তবে এটাকে গঠনমূলক ভাবেই নেওয়া উচিত, যেমনটা আমি নিয়েছি। আমরা এই বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা বলেছি।"
রাসেল এর আগে সরাসরি কার্তিকের সমালোচনা করে জানিয়েছিলেন, অধিনায়কের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত দলের বেশ কিছু হারের জন্য দায়ী। আর খারাপ হারের জন্য দলের ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতিও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে।
তারপরেই মুখ খুলেছেন কার্তিক। তিনি সরাসরি রাসেলের সঙ্গে কথা বলেন। কী কথা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কার্তিক জানান, "ও আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে অখুশি ছিল। হার একদমই মেনে নিতে পারছিল না। তবে ও যেটা বলেছে সেই বিষয়ে সম্পুর্ন শ্রদ্ধা রয়েছে আমার। আমার সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ক্ষমাশীলও হয়ে পড়েছিল। দিনের শেষে ওর সঙ্গে কিন্তু আমার দারুণ বন্ডিংটাই থাকে। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক দুর্ধর্ষ বলেই এই বিষয় নিয়ে বেশি বির্তক ঘটেনি।"
রাসেলের সঙ্গে তাঁর দোস্তি নিয়েও মুখ খুলেছেন কার্তিক। সেই শো এ তারকা ক্রিকেটার বলেছেন, "ওর সঙ্গে আমার সম্পর্কের সততার জন্যই ওকে সরাসরি গিয়ে বলতে পেরেছি, রাস, বিষয়টা কী জানো,তুমি যেটা বলেছ সেটা আমি মোটেই ঠিক করোনি। কারণ, বিষয়টা নিয়ে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তা মোটেই ঠিক নয়। ও-ও আমাকে বলে, স্কিপার, আমি ঠিক এই বিষয়টি ফিল করেছি, সেই কারণে ঘটনা নিয়ে এতটা চর্চা হচ্ছে।"
রাসেল কার্তিককে আরো বলেন, যেভাবে খেলা উচিত সেভাবে ব্যাপারটা হচ্ছে না। যা শুনে কার্তিকের জবাব, "অধিনায়ক হিসেবে সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়। আমি হয়ত কিছু কিছু বিষয় পরিবর্তন করতে পারি তবে অবশ্যই তোমার কথা অনুযায়ী নয়।"