কলা কিনতে গিয়ে গুনতে হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা। দৈনিক ভাতার অঙ্ক ছিল ৪৯.৫ লক্ষ। সবমিলিয়ে করোনা-কালে ফুড এবং ক্যাটারিং বাবদ উত্তরাখন্ড ক্রিকেট সংস্থার খরচ হয়েছে ১.৭৪ কোটি টাকা।
প্রকাশ্যে এমন বিষ্ফোরক রিপোর্ট আসার পরই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেট মহলে।
কয়েকদিন আগেই ভারতের অনুর্দ্ধ-১৯ দলের এক ক্রিকেটারের পিতা বীরেন্দ্র শেঠি সংস্থার তরফে মৃত্যু হুমকি পাওয়ার অভিযোগ এনে সরাসরি থানায় এফআইআর করেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, হেড কোচ মনীশ ঝা, টিম ম্যানেজার নভনীত মিশ্র এবং ভিডিও এনালিস্ট পীযুষ রঘুবংশী তাঁর পুত্রকে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছেন। তারপরই পুলিশের তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সংস্থার সচিব মহিম ভার্মা, দলের হেড কোচ মনীশ ঝা, এবং মুখপাত্র সঞ্জয় গাসেইনকে।
আরও পড়ুন: কোহলিকে কি সত্যি বাদ দেওয়া হবে টিম ইন্ডিয়া থেকে! মুখ খুলে নিজের মত জানালেন সৌরভও
দেরদুনের পুলিশ আধিকারিক জনমেজয়া খান্দারি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "গত তিন দিন ধরে আমরা আলাদা আলাদা করে মহিম ভার্মা, মনীশ ঝা এবং সঞ্জয় গাসেইনকে জেরা করেছি। ওঁদের বক্তব্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে পুনরায় ওঁদের ডাকা হতে পারে।"
স্রেফ এই হুমকির ঘটনাই নয়, উত্তরাখন্ড ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আর্থিক তছরুপি, ক্রিকেটারদের বকেয়া পাওনা না মেটানোর এবং দল নির্বাচনে তীব্র পক্ষপাতিত্বের। গোটা ঘটনা নজরে আসতেই এবার নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। উত্তরাখন্ড ক্রিকেটে সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেটার রবিন বিস্ত জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সময় টিম ম্যানেজারের তরফে বলা হয়, জোম্যাটো-সুইগি থেকে খাবার অর্ডার করতে। এমনও বলা হয়, একদিন না খেয়ে থাকলে কেউই মারা যাবে না।
বিস্ত জানিয়েছেন, "কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের পরে দিল্লির ফ্লাইট ছিল আমাদের। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে টিম ম্যানেজারকে আমরা জিজ্ঞাসা করি, দেরদুনে যাওয়ার গাড়ি কোথায়? ওঁর জবাব ছিল, 'দিল্লিতে পৌঁছে দেওয়া আমাদের কর্তব্য ছিল, বাড়ি পর্যন্ত নয়। এবার বাস, ট্রেন অথবা গাড়ি ভাড়া করে নিজেরাই বাড়ি যাওয়ার বন্দোবস্ত করো।"
উত্তরাখন্ড বিধানসভা ভবনে নির্দল হিসাবে নির্বাচিত হওয়া বিধায়ক উমেশ কুমারও রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থার দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "করোনার সময় উত্তরাখন্ড ক্রিকেট সংস্থা ৬.৫ কোটি টাকা প্রফেশনাল ফি দিয়েছে। আমরা জানতে চাই কাদের হাতে এই টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে? ২০২০-র মার্চের আগে প্রফেশনাল ফি-র পরিমাণ ছিল ২.৭৫ কোটি টাকার আশেপাশে। করোনার সময় কে লাঞ্চ-ডিনারে ১.২৭ কোটি টাকার খাবার খেয়েছেন? কীভাবে ওঁরা কোচ নিয়োগ করে? বোর্ডের উচিত পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা। বড়সড় দুর্নীতি হয়ে চলেছে এখানে।"