Virat Kohli in ICC Champions Trophy: ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার মধ্যেও কেন তিনি ওয়ানডে-তে চেজ-মাস্টার, ফের বোঝালেন বিরাট কোহলি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছন্দে ছিলেন না। তবে পাকিস্তান এবং এবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কঠিন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত অনুশীলন করে তিনি সময়মতো জয় ছিনিয়ে আনলেন। এটা সত্যিই যে, এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিরাট কোহলি না থাকলে ভারত কোথায় থাকত! এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত। তার পিছনে কোহলির অবদান বিরাট। এবারের আসরে তিনি দু'বার রান তাড়া করায় নিজের অনবদ্য ভূমিকাকে তুলে ধরলেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১০০ রান করা ম্যাচের মত, মঙ্গলবারের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোহলি সেঞ্চুরি পাননি। তবে তাঁর ৮৪ রানের ইনিংস বিশ্বকে আবারও মনে করিয়ে দিল যে তিনি এখনই হারিয়ে যাচ্ছেন না। বরং কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং, তাঁকে কেরিয়ারের নতুন ধাপে প্রবেশের পথে একধাপ এগিয়ে দিল। সত্যি বলতে কী, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কোহলি বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন। ওই ম্যাচে তিনি পুরোপুরি স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।
সেই ইনিংসের পর কোহলি অতিরিক্ত সময় ধরে নেটে অনুশীলন করেন। স্থানীয় স্পিনারদের বল করতে ডেকেছিলেন। ভারতীয় দলের স্পিনারদের নিয়েও অনুশীলন সেরেছেন। অনুশীলনে প্রতিবার ব্যাটিং করার আগে তিনি মাঠের ফিল্ডিং সেটিং দেখে নিচ্ছিলেন একবার করে। নিজেই ফিল্ডারদের উপস্থিতি কল্পনা করে, তাঁদের পাশ দিয়ে শট মারার চেষ্টা করছিলেন। যখনই মনে হয়েছে, তিনি ফাঁকা জায়গা বের করতে সফল হয়েছেন, তখনই মুঠো হাত তুলে ওপরে তুলে আকাশের দিকে ছুড়ে দিয়েছেন বিরাট। অথবা দেখা গিয়েছে, বোলারদের ডেকে কিছু বলেছেন।
তারপরই এল সাফল্য। অনুশীলনে যা করেছিলেন, এই ম্যাচে বিরাট ঠিক সেই কাজগুলোই করে গিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে, দুই ওপেনারকে হারিয়ে ভারতের অবস্থা তখন টলমল। সামনে ছিল আসরের দুবাই পর্বে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার চ্যালেঞ্জ। কঠিন পিচ ও শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ম্যাচের মোড় বদলে দিতে পারা, সঙ্গে উইকেটে টিকে থাকা, দুটোই ছিল সমানতালে ঝুঁকিপূর্ণ। মঙ্গলবার কোহলি তাঁর ৫০ রান করেন মাত্র ৫৩ বলে, চারটি বাউন্ডারি হাঁকান। তাঁর ইনিংসে ছিল ৫৬টি সিঙ্গেল ও চারটি দুই রান, যা প্রমাণ করে যে তিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার কৌশল ইতিমধ্যে রপ্ত করে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন- অসভ্যতার শেষ নেই অজিদের! রক্তাক্ত জাদেজাকে বাধ্য করল ব্যান্ডেজ খুলতে
ম্যাচ শেষে কোহলি বলেন, 'পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচের মতোই আজকের ইনিংস ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিন আমি সাতটি চার মেরেছিলাম, সেঞ্চুরি করেছিলাম। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পিচ বুঝে খেলা, নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা এবং রান বাড়ানো। কারণ, এই উইকেটে পার্টনারশিপ গড়াই প্রধান কাজ। আজ এবং সেদিন আমি সেটাই করতে চেয়েছিলাম।'
মঙ্গলবার ৯৮ বলের ইনিংসে মাত্র ৩৩টি ডট বল খেলেন কোহলি। ৫০ রান পেরোনোর পর শ্রেয়াস আইয়ার আউট হওয়ায় তাঁকে রান তোলার গতি কিছুটা কমাতে হয়। তবে কখনও ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলেননি বিরাট। বরং নিরাপদ ক্রিকেট খেলেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়েছেন। এই স্বাভাবিক গেমপ্ল্যানই তাঁকে ২৮টি রান তাড়া করার ম্যাচে সেঞ্চুরি এনে দিয়েছে। যার মধ্যে ২৪টি ম্যাচে ভারত জয়ী হয়েছে।
ম্যাচের পর কোহলি বলেছেন, 'সময়জ্ঞান এবং ক্রিজে ধৈর্য ধরে খেলা– এটিই আজকের ইনিংসে আমাকে আলাদা করেছে। আমি একদমই মরিয়া হয়ে ব্যাট চালাইনি। আমি শুধু এক-দুই করে রান নিতে চেয়েছি। যখন একজন ব্যাটসম্যান গ্যাপে সিঙ্গেল নেয়, তখন বোঝা যায় যে সে ভালো ক্রিকেট খেলছে। এতে বড় পার্টনারশিপ গড়া সম্ভব হয়, দলেরও চাপ কমে। পাকিস্তান ম্যাচ ও আজকের ম্যাচে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় তৃপ্তির ব্যাপার।'