দেশের শীর্ষ সারির প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বরাবর নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে দূরত্ব রক্ষা করেন। এমনকি যাঁরা নির্বাচক প্রধান হতে চান, তাঁরাও এই পদ মোটেই নিতে আগ্রহী হন না। কারণ একটাই, নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের বেতন ভীষণই কম। চেয়ারম্যানের বার্ষিক বেতন যেমন ১ কোটি টাকা। তেমন বাকি নির্বাচকদের দেওয়া হয় ৯০ লক্ষ টাকা করে।
স্টিং অপারেশন কাণ্ডে ফেঁসে চেতন শর্মা পদত্যাগ করেছেন নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে। স্টিং অপারেশনে জাতীয় দল নিয়ে একের পর এক গোপন তথ্য ফাঁস করে দিতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। আপাতত সেই শূন্যস্থান এখনও পূরণ হয়নি। শিবসুন্দর দাসকে সামনে রেখে দল নির্বাচন করা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল থেকে সলিল আঙ্কলা, পূর্বাঞ্চল থেকে শিবসুন্দর দাস, মধ্যাঞ্চল থেকে সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দক্ষিণ থেকে এস শরথ আপাতত কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। উত্তরাঞ্চল থেকে এখনও কোনও প্রতিনিধি নেই।
পিটিআইকে দেওয়া বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, বীরেন্দ্র শেওয়াগ নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য উপযুক্ত হলেও তিনি এই পদের জন্য ইচ্ছুকই নন। কম বেতনের জন্য। "বোর্ডের দায়িত্বে প্রশাসক মন্ডলী থাকার সময় বীরেন্দ্র শেওয়াগকে হেড কোচের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। তারপর হেড কোচ হয়ে যান অনিল কুম্বলে। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য তিনি মোটেই আবেদন করবেন না। ওঁর পর্যায়ে কারোর জন্য বোর্ডের বেতন কাঠামোও ভীষণ অল্প। এমন নয় যে বিসিসিআই ৪-৫ কোটি টাকা বেতন নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানকে দিতে পারবে না। এতে আদতে অনেক স্বার্থ সংঘাতের ইস্যু দেখা যাবে। এতেই নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হতে ইচ্ছুক নন নামি ক্রিকেটাররা।"
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ভারতের এই মাঠে খেলতেই চাইছে না পাকিস্তান! সমঝে দিল ICC, BCCI
গৌতম গম্ভীর, হরভজন সিং, যুবরাজ সিংয়ের মত তারকারা নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হতেই পারেন। তবে অবসরের পাঁচ বছর এখনও অতিক্রান্ত হয়নি তারকাদের। বাকিদের কারোর কারোর নিজস্ব একাডেমি রয়েছে। অনেকে আবার আইপিএলের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত, কেউ আবার আইপিএলের সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বিশেষজ্ঞ বা ধারাভাষ্যকার। এতে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হলে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট ইস্যু মাথাচাড়া দিতে পারে।
বোর্ডের তরফে এমন কাউকে খোঁজা হচ্ছে যিনি রোহিত শর্মা, রাহুল দ্রাবিড়দের সম পর্যায়ের। এর আগে দিলীপ বেঙ্গসরকার, মোহিন্দার অমরনাথ, সন্দীপ পাতিল, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তদের মত নামি তারকারা নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসেছেন। বেঙ্গসরকারের সময়ে (২০০৬-২০০৮) এই পদ ছিল সাম্মানিক। তবে শ্রীকান্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর বোর্ডের তরফে বেতন কাঠামো চালু করা হয়। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে শোচনীয় হারের পর ধোনির ক্রিকেটীয় ভবিষ্যৎ নিয়ে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন তৎকালীন বোর্ড সভাপতি এন শ্রীনিবাসন এবং প্রধান নির্বাচক মোহিন্দার অমরনাথ।
বোর্ডের তরফে আপাতত হেভিওয়েট ক্রিকেটারের সন্ধান করা হচ্ছে। বিসিসিআইয়ের সেই কর্তা জানিয়েছেন, "দিলীপ ভাই চেয়ারম্যান থাকার সময় তাঁকে এস বদ্রিনাথ এবং বিরাট কোহলির মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হয়েছিল। ভারতের এ দলের খেলা ফলো করতেন তিনি। জানতেন, নির্বাচনের সময় কাকে ব্যাক করতে হবে। তিনি গ্রেগ চ্যাপেলের যুক্তিও খন্ডন করতে পারতেন।"
চেতন শর্মার পর কে বোর্ডের নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হন, সেটাই আপাতত দেখার।
Read the full article in HINDI