What Did MS Dhoni Say to Vignesh Puthur? Friends and Coaches Reveal the Journey of an Auto Driver’s Son to IPL: বিঘ্নেশ পুথুর এখনও কেরলে সিনিয়র পর্যায়ের ক্রিকেট খেলেননি। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই চাইনাম্যান বোলার চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত বল করে ম্যাচে নজর কেড়েছেন। সোমবার সকালে, যখন শ্রীরাগ বিঘ্নেশকে ফোন করলেন, তখন তিনি এক সেকেন্ডও অপচয় না করে সবার মনে থাকা সেই প্রশ্নটাই করেন, 'এড্ডা, পুল্লি এন্তা দা পারঞ্ছু?' অর্থাৎ ধোনি কী বললেন?। ধোনিকে ম্যাচের পর বিঘ্নেশের সঙ্গে কথা বলতে এবং তাঁর পিঠ চাপড়ে দিতে দেখা গিয়েছে।
তাতেই সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে, ধোনি ঠিক কী বলেছেন বিঘ্নেশকে? শ্রীরাগ বলেন, 'ধোনি জানতে চেয়েছেন, ওঁর বয়স কত এবং বলেছেন, যে ব্যাপারগুলো তোমাকে আইপিএলে তুলে এনেছে, সেগুলো একইভাবে চালিয়ে যাও।' এই প্রশ্নই কেরালার মল্লপুরম জেলার পেরিনথালমান্না শহরের কুন্নাপল্লি এলাকার পরিচিত অটোচালক বাবু (বিঘ্নেশের বাবা)-কে সবাই করছেন। বিঘ্নেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শ্রীরাগ। তিনিই তাঁকে মোটরবাইকে চাপিয়ে অনুশীলনে নিয়ে যেতেন। সেই শ্রীরাগ বললেন, 'ও খুবই লাজুক ও ইন্ট্রোভার্ট ছেলে, বেশি কথা বলে না। কিন্তু যখন বল হাতে নেয়, তখন ও একদম অন্যরকম মানুষ হয়ে যায়। গত রাতেই সবাই সেটা দেখেছে।'
বিঘ্নেশের ছেলেবেলার কোচ সিজি বিজয়কুমারও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, '১০ বছর বয়সে যখন ও প্রথম একাডেমিতে আসে, তখন তার পরনে ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি, পিছনে লেখা ছিল গৌতম গম্ভীরের নাম। সাধারণত আমরা নতুন ক্রিকেটারদের ব্যাটিং, উইকেটকিপিং ও ফাস্ট বোলিং শেখানোর চেষ্টা করি। কিন্তু বিঘ্নেশের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই ছিল কেবল রিস্ট স্পিন। ওঁর কবজির নমনীয়তা ও বল করার ধরন ছিল অসাধারণ। প্রথম ইম্প্রেশন গুরুত্বপূর্ণ এবং চেন্নাইতে যা ঘটল, সেটা ওঁর কবজির নমনীয়তা আর বল করার ধরনেরই প্রতিফলন।'
বিঘ্নেশের প্রথম ক্রিকেট অনুপ্রেরণা ছিলেন তাঁর প্রতিবেশী শরিফ। তিনি বলেন, 'আমি নিজে লেগ-স্পিন করতে চাইতাম, কিন্তু পারতাম না। তাই বিঘ্নেশকে চেষ্টা করতে বললাম। আর ও তখন থেকেই বল ঘোরাতে পারত। আমি ওর বাড়ির লোকজনকে বোঝাই যে ও যদি সিরিয়াসলি ক্রিকেট খেলে, তাহলে অবশ্যই বড় কিছু করবে।'
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরম্যান্স করলেও বিঘ্নেশ কেরালার সিনিয়র দলে সুযোগ পাননি। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্স স্কাউটরা তাঁর প্রতিভা দেখে তাঁকে আইপিএল নিলামে কিনে নেয়। কোচ বিজয়কুমার বলেন, 'অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ে ও খুব একটা ভালো খেলতে পারেনি, তাই কেরালা দলে সুযোগ পায়নি। তবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ওঁর প্রতিভাকে গুরুত্ব দিয়েছে, শুধুমাত্র উইকেটসংখ্যা দেখে বিচার করেনি।'
১৫ বছর বয়সে বিঘ্নেশ জলি রোভার্স দলে খেলতে শুরু করেন। অধিনায়ক ছিলেন কেরালার প্রাক্তন খেলোয়াড় শাবিন পাশা। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ও গুগলি ও ফ্লিপার শিখে নিয়েছিল এবং নিয়মিত উইকেট পেত। পাশা বলেন, 'ওর কিছু অ্যালার্জির সমস্যা ছিল, যার ফলে কেরালা ক্রিকেট লিগে ভালো খেলতে পারেনি। কিন্তু, ওঁর প্রতিভা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স স্কাউটদের চোখে পড়ে যায়।'
আরও পড়ুন- নতুন ‘Whistle Podu’ গানে CSK তারকাদের নাচ, ধোনি রইলেন শান্ত মেজাজে!
বিঘ্নেশের আইপিএল যাত্রা তাঁর পরিবারের কাছে এক বড় ঘটনা। তাঁর বন্ধু শ্রীরাগ বলেন, 'ওঁর বাবা-মা এখনও ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারছেন না। এই মুহূর্তে শিকড়ের প্রতি সত্য থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত খ্যাতি ও টাকা অনেক ক্রিকেটারের ক্ষতি করেছে, যেমন বিনোদ কাম্বলি বা পৃত্থী শ’র ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি। মাত্র একটি ম্যাচ কাউকে ভালো বা খারাপ খেলোয়াড় বানায় না।'
যদিও বিঘ্নেশের জীবন এখন বদলে গেছে, কিন্তু শ্রীরাগের মতে, 'ও আগের মতই নম্র এবং সহজ-সরলই আছে। এই এলাকায় সবাই ওর ভালো চরিত্র নিয়েই কথা বলে। আমরা ছোট চায়ের দোকানে আড্ডা দিতাম, হয়তো ওটা বদলাতে হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, বিঘ্নেশ বদলাবে না। আমি শুধু অপেক্ষায় আছি, ও এখন ওঁর প্রিয় ওরিও মিল্কশেকের ব্যাপারে কী করে, দেখা দেখার জন্য! ডায়েটের কারণে হয়তো ওসব খাওয়া বন্ধ করবে, কিন্তু ও ফিরে এলে একদিন ভালো একটা ভোজ অবশ্যই হবে!'