World's richest cricketer Aryaman Birla: বিশ্বের ধনীতম ক্রিকেটার ২২ বছর বয়সে ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন। কখনও আইপিএল খেলেননি। অথচ, ৭০ হাজার কোটি টাকার মালিক। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন, কোহলি, ধোনির থেকেও ধনী এই ২২ বছরের তরুণ ক্রিকেটার। শচীন, ধোনি ও বিরাট নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটের তিন বৃহত্তম ব্র্যান্ড। তাঁরা সকলেই নিজেদের প্রজন্মের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্ববন্দিত। কিন্তু, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ শিল্পপতি কুমার মঙ্গলম বিড়লার ছেলে আর্যমান বিড়লার কাছে কিছুই না। ২০২৩ সালে আর্যমান, আদিত্য বিড়লা গ্রুপে আদিত্য বিড়লা ফ্যাশন অ্যান্ড রিটেইল লিমিটেড (ABFRL)-এর পরিচালক নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি আদিত্য বিড়লা ম্যানেজমেন্ট কর্পোরেশন এবং গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজেরও পরিচালক। আর, এই সব শিল্পসংস্থার ভবিষ্যৎ কর্ণধার। ব্যবসায় নামার আগে, আর্যমান ক্রিকেটে কেরিয়ার গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি একটি সেঞ্চুরিও করেছেন।
আর্যমান বিড়লার রঞ্জি ট্রফি কেরিয়ার নেহাত মন্দ নয়। ১৯৯৭ সালের জুলাইয়ে মুম্বইয়ে জন্ম আর্যমান বিড়লার। তারপর চলে যান মধ্যপ্রদেশের রেওয়াতে। সেখানেই আদিত্য বিড়লা গ্রুপের সিমেন্ট ইউনিটের সদর দফতর। তিনি রাজ্যের জুনিয়র ক্রিকেট সার্কিটে অংশ নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ওড়িশার বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর প্রথম সিনিয়র-লেভেল ম্যাচ খেলেন। আর্যমান তাঁর প্রথম ইনিংসে রজত পতিদারের সঙ্গে ৭২ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপও গড়েছিলেন। রজত পতিদার ওই ম্যাচে করেছিলেন ১২৩ রান। আর আর্যমান ৬৭ বলে ১৬ রান করেছিলেন। পরের ইনিংসে করেছিলেন ২৭ বলে ৬ রান।
প্রায় একবছর পরে ইডেন গার্ডেনে বাংলার বিরুদ্ধে তিনি খেলেন। মনোজ তিওয়ারির অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি বাংলাকে ৯ উইকেটে ৫১০ রানে পৌঁছে দিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশ ৩৩৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। কিন্তু, এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে আর্যমান বিড়লা ১৮৯ বলে অপরাজিত ১০৩ রান করেন। যার ফলে, ম্যাচ ড্র হয়ে যায়। মধ্যপ্রদেশের হার বাঁচে। সেই সময় আর্যমান বলেছিলেন, তিনি একজন ক্রিকেটার হিসেবে এবার স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। কারণ, লোকে তাঁর পদবির জন্য নয়। তাঁকে দক্ষতার জন্য চিনছে। এই প্রসঙ্গে আর্যমান বলেন, 'পারফরম্যান্স হল আস্থা এবং সম্মান অর্জনের সবচেয়ে বড় পথ। আমি রান করতে শুরু করলেই লোকজন আমাকে অন্য চোখে দেখতে শুরু করেছে। আমি যখন মধ্যপ্রদেশে আসি, তখন আমার পদবির জন্য লোকে আমাকে চিনত। আমি শুনতাম যে আমি বিড়লার ছেলে, বিড়লার নাতি। কিন্তু, আমি আমার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সেই ধারণাকে বদলে দিয়েছি। এটাই এখনও পর্যন্ত আমার সবচেয়ে বড় ইনিংস। সম্প্রতি একজন এসে আমাকে বললেন, তুমি এত সরল এবং সোজাসাপটা, আমরা জানতাম না যে তুমি বিড়লা পরিবারের। এটাই আমার জীবনে পরিবর্তনের লক্ষণ।'
সেই ইনিংসের পর আর্যমানের পারফরম্যান্সের জন্য ২০১৮ সালের নিলামে তাঁকে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। যা নিয়ে বেশ হইচই হয়েছিল। তিনি দুই মরশুম রাজস্থান রয়্যালসে ছিলেন। কিন্তু, প্রথম একাদশে জায়গা পাননি। তারপরে চোট পান। ২০১৯-এর পরে একেবারেই খেলতে পারেনি। রাজস্থান রয়্যালস অবশেষে সেই বছরের নভেম্বরে আর্যমানকে ছেড়ে দেয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আর্যমান 'ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি' নেন। তারপর তিনি আর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরেননি।
ইনস্টাগ্রামে আর্যমান লিখেছেন, 'আমি আটকে গিয়েছি। আমি যাবতীয় কষ্টের মধ্য থেকে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছি। এখন আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের সকলের নিজস্ব পথ আছে। আমাদের সেই পথ ভালো করে চিনে নেওয়া উচিত। নতুন এবং বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গির জন্য আমাদের মনকে উন্মুক্ত করতে চাই। আর, আমার জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে চাই।'
আরও পড়ুন- শহীদ স্মরণে অদ্ভুতুড়ে পাখিই নাকি ম্যাসকট! 'জুলাই বিপ্লব' কাহিনীতে হাসির খোরাক BPL
এরপরই আর্যমান বিড়লা তাঁর পারিবারিক ব্যবসায় প্রবেশ করেন। সেই থেকে তিনি সাফল্যও পাচ্ছেন। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। আর, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, শচীনের সম্পত্তির মোট মূল্য ১৭ কোটি মার্কিন ডলার, ধোনির সম্পত্তির পরিমাণ ১১.১০ কোটি মার্কিন ডলার আর কোহলির সম্পত্তির পরিমাণ ৯.২০ কোটি মার্কিন ডলার।মিলিয়ন।