/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/image-2021-08-14T155809.499_copy_1200x676.jpg)
২০১৮ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত দৃষ্টিহীন ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অনবদ্য পারফর্ম করে সকলের মন জিতে নিয়েছিলেন।বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে চালকের আসনে বসিয়েছিলেন তিনি।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়। এবং ২০১৪ সালে গুজরাট দলে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত দৃষ্টিহীন ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ৩০৮ রানের লক্ষমাত্রাকে সামনে রেখে ব্যাটিং করতে নেমে ভারত দুউইকেট বাকি থাকতেই জয় ছিনিয়ে নেয় তুমদার সৌজন্যে।
নজর ছিল আরও উঁচুতে। তবে নরেশ তুমদা এখন পেটের ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। নেমে পড়েছেন রাস্তায়।
আরও পড়ুন: বাবা বিছানায়! অলিম্পিক থেকে বহু দূরে দারোয়ানের কাজে নামলেন চ্যাম্পিয়ন বক্সার
বিশ্বকাপজয়ী ভারতের জার্সিতে তুমদারের অনবদ্য পারফরম্যান্স আজও মনে রেখেছেন ক্রিকেট প্রেমীরা। তবে দৃষ্টিহীন এই ক্রিকেটার তুমদা প্যান্ডামিকে কার্যত দিশেহারা। পরিবারকে বাঁচাতে এখন মজুরের পেশায় নেমে পড়েছেন তিনি।
নরেশ তুমদাই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। করোনার কারনে আর্থিক সঙ্কট বেনজিরভাবে তাঁকে খেলা থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এই প্রতিভাবান দৃষ্টিহীন ক্রিকেটার তুমদা পরিবারের হাল ধরতে গুজরাটের নবসারীতে একজন দৈনিক মজুর হিসাবে কাজ করছেন।
মনে হতে পারে কোনও ছবির চিত্রনাট্য বোধহয়। তবে একদমই নয়। দৃষ্টিহীন ক্রিকেটার তুমদার জীবনে আপাতত এটাই ঘোর বাস্তব। ২৯ বছরের ক্রিকেটার পরিবারের হাল ধরতে সবজি বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। তবে সেখানে সুবিধা করতে না পেরে আপাতত এখন গুজরাটের নবসারীতে শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: অলিম্পিকের সময়েই মৃত্যু প্রিয় বোনের! দেশে ফিরেই বুকচেরা হাহাকার ভারতীয় তারকার
করোনার আগে পর্যন্ত তুমদা ছিলেন ভারতীয় দৃষ্টিহীন ক্রিকেট একাদশ এবং দৃষ্টিহীন ক্রিকেট বিশ্বকাপের একজন অন্যতম সেরা পারফর্মার। করোনা মহামারী জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। চরম সংকট নেমে এসেছে অনেকের জীবনেই।
প্রতিদিন বেঁচে থাকার লড়াই করতে করতে মানুষ আজ সত্যিই বড়ই ক্লান্ত। কিন্তু হেরে গেলে চলবে না! জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তুমদা এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়েই শিরোনামে উঠে এসেছেন।
একাধিক জায়গায় চাকরির আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে সাড়া না মেলায় অতঃপর নেমে পড়তে হয়েছে মজুরের পেশায়। এক সংবাদ সংস্থাকে তুমদা জানিয়েছেন “সরকারের কাছে অনেকবার আবেদন জানিয়েছি। হন্যে হয়ে ঘুরেছি একটি চাকরির জন্য। তবে চাকরি জোটেনি। বাড়িতে বৃদ্ধ মা বাবা রয়েছেন, আমিই সংসারেরে একমাত্র রোজগেরে। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ২৫০ টাকার দৈনিক মজুরির বিনিময়ে শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হয়েছি। পেট চালাতে তো হবে!" তিনি আরও যোগ করেছেন “গতবছর লকডাউনে আমাকে পেটের তাগিদে সবজি বিক্রিও করতে হয়েছে।"
Gujarat: Naresh Tumda, part of team that helped India win 2018 Blind Cricket World Cup, now works as a labourer in Navsari to earn livelihood
"I earn Rs 250 a day. Requested CM thrice but didn't get reply. I urge govt to give me job so that I can take care of my family," he said pic.twitter.com/NK4DFO6YYC— ANI (@ANI) August 8, 2021
২০১৮ দৃষ্টিহীন ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাধারন জয় পেয়ে মনের দিক থেকে অত্যন্ত খুশি ছিলেন নরেশ। তিনি বলছিলেন, “বিশ্বকাপ জয়ের পর ভেবেছিলাম একটি চাকরি নিশ্চয় পাব।" তবে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে অচিরেই।
বারবার আবেদন জানিয়েও কোন সাড়া না পেয়ে তুমদা অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। তার পরিবারের কথা তুলে ধরে তিনি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিও লেখেন। এখন স্রেফ উত্তরের আশায় বুক বাঁধছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন