বিদ্রোহ জারি রেখেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁকে হুমকি দেওয়া সাংবাদিকের নাম বোর্ডকে মোটেই জানাবেন না তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে আগেই জানানো হয়েছিল, বোর্ডের তরফে ঋদ্ধিমানের কাছে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের নাম জানতে চাওয়া হবে, যে সাক্ষাৎকারের আর্জি জানিয়ে কার্যত তাঁকে হুমকিও দিয়ে বসেছিলেন।
তবে সাহা এবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বললেন, "বোর্ডের তরফে এখনও কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। যদি ওঁরা সেই সাংবাদিকের নাম জানতে চায়, আমি সাফ জানিয়ে দেব, কোনও সাংবাদিকের কেরিয়ার নষ্ট করা, কাউকে টেনে নীচে নামানো মোটেই আমার উদ্দেশ্য নয়। এই কারণে টুইটেও সেই ব্যক্তির নাম গোপন রেখেছি। বাবা-মার কাছে এরকম শিক্ষা পাইনি। আমার উদ্দেশ্য ছিল মিডিয়ায় এরকম ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা একজন ক্রিকেটারের ইচ্ছাকে মর্যাদা না দিয়ে এরকম কাণ্ড ঘটান।"
আরও পড়ুন: ঋদ্ধিমানকে হুমকি দেওয়া সেই সাংবাদিক কে! বিরাট পদক্ষেপের পথে সৌরভের বোর্ড
"এটা মোটেই ঠিক নয়। যে এরকম করেছে, সে-ও ভাল করে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। প্লেয়াররা যাতে এরকম ঘটনার সম্মুখীন না হন, সেই কারণেই সেই টুইট করেছি। সকলকে জানাতে চেয়েছি, যা করা হয়েছে, তা রীতিমতো ভুল। ভবিষ্যতে যেন এরকম না ঘটে।"
টুইটারে হোয়াটসএপ চ্যাটের সেই কথোপকথনের স্ক্রিনশট শেয়ার করে দেন ঋদ্ধিমান সাহা। এমন ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পরই বীরেন্দ্র শেওয়াগ থেকে হরভজন সিং, আকাশ চোপড়া, হরভজন সিংরা বাংলার তারকা কিপারের পাশে দাঁড়ান।
আরও পড়ুন: বোর্ডের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথাবার্তা প্রকাশ্যে কেন! ঋদ্ধিকে এবার বিঁধলেন সৌরভের দাদা স্নেহাশিস
শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে ঋদ্ধিমান সহ ইশান্ত শর্মা, চেতেশ্বর পূজারা, অজিঙ্কা রাহানে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন। তারপরই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঋদ্ধিমান দাবি করেন, ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে পরোক্ষে অবসরের কথা চিন্তাভাবনা করতে বলেন। এছাড়াও সৌরভ যে কানপুর টেস্টের পরে ঋদ্ধিকে টিম ইন্ডিয়ায় থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন, তা-ও খোলসা করেন ঋদ্ধিমান।
ঋদ্ধিমান আরও জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। তবে ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারদের সংস্থা-র সদস্য প্রজ্ঞান ওঝা সাহাকে ফোন করেছিলেন। "ওঝা আমাকে বলে, 'ব্যক্তিগত কোনও বিষয় জিজ্ঞাসা করব না। তবে এই বিষয়ে তুমি যদি আরও এগোতে চাও, বোর্ড তোমাকে সাহায্য করবে। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দি-ই, এই মুহূর্তে সেরকম কোনও পরিকল্পনা নেই। তার কারণ-ও জানাই। ও এই বিষয়ে সহমত হয়ে জানায়, এটা পুরোটাই আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।"
আরও পড়ুন: সাংবাদিকের গলায় হুমকির সুর! সাহসী চ্যাট ফাঁস করে তুলকালাম ঋদ্ধিমানের, দেখুন
এদিকে, সিএবি সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ঋদ্ধির এই মুহূর্তে রঞ্জি খেলা উচিত। এই বিষয়ে ঋদ্ধিমান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "রঞ্জি থেকে সরে দাঁড়ানোর সঙ্গে জাতীয় দলের নির্বাচনের কোনও সম্পর্কই নেই। ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরে আমার স্ত্রী ধরে ধীরে সেরে উঠছেন। তবে আমার কাছে সমস্ত অপশন খোলা রয়েছে।"
গোটা ঘটনার পরে কি ক্রিকেটে খেলার মোটিভেশন থাকবে? ঋদ্ধির জবাব, "ভালবাসার জন্য ক্রিকেটটা খেলি। যতদিন সেই ভালবাসা অবশিষ্ট থাকবে, ততদিন বুটজোড়া তুলে রাখব না। জাতীয় দলে, রাজ্য দলে বা আইপিএলে ডাক পেলাম কিনা, সেটা বড় বিষয় নয়। যতদিন উপভোগ করছি, ততদিন খেলা চালিয়ে যাব। ক্লাব এবং অফিস ক্রিকেট খেলে অবসর নিতেও দ্বিধা করব না।"