Aircraft Servicing: আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে একের পর এক সামনে আসছে বিমানে কারুগরি ত্রুটি। কখনও কখনও বিমানের কারিগরি ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণ করতে হয়, আবার কখনও কখনও বিমানের চাকা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা হচ্ছে। বেশিরভাগ সমস্যা বোয়িং বিমানগুলিতে দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, এই বিমানগুলির পরিষেবার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে, কতদিন পরপর বিমানের সার্ভিসিং হয়? সেই সার্ভিসিং বাবদ কত টাকা খরচ হয়?
যেকোনো বিমানের সার্ভিসিং এয়ারলাইন্সের রক্ষণাবেক্ষণ হ্যাঙ্গারে করা হয়। সমস্ত বড় বিমানবন্দরে, সমস্ত এয়ারলাইন্সের নিজস্ব নিজস্ব হ্যাঙ্গার থাকে। এখানে বিমানের মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্ভিসিং করা হয়। এর পাশাপাশি, পরিষেবার জন্য MRO (রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং ওভারহল) সুবিধাও রয়েছে। এই স্থানে বিমানের বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এখানে বিমানটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয় এবং যদি কোনও ত্রুটি থাকে তবে তা মেরামত করা হয়।
ভারতের মুম্বই, হায়দ্রাবাদ, নাগপুর এবং ব্যাঙ্গালোরের মতো বড় বিমানবন্দরগুলিতে MRO হাব রয়েছে। এর পাশাপাশি, লাইন রক্ষণাবেক্ষণ স্টেশনও রয়েছে। ফ্লাইটের আগে এই MRO গুলিতে চেকিং এবং ত্রুটি মেরামত করা হয়।
বিমানের সার্ভিসিং বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত, কত ধরনের সার্ভিসিং হয় বিমানে? কখন হয় D-চেক? জানুন পুরো প্রক্রিয়া
বিমান ওড়ার আগে বা পরে প্রতিটি বিমানকে নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্ভিসিং করতে হয়। এতে যেমন যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, তেমনি বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কমে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠিক কখন, কীভাবে ও কত রকমে বিমান সার্ভিসিং হয়।
সার্ভিসিংয়ের সময়সূচি ও ধাপ:
বিমানের সার্ভিসিং মূলত চারটি ধাপে ভাগ করা হয়:
১. প্রাক-উড়ান ও ট্রানজিট চেক
প্রতিটি ফ্লাইটের আগে ও পরে করা হয়
জ্বালানি, ইঞ্জিন তেল, টায়ার ও গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম পরীক্ষা হয়
এটি দ্রুত এবং রুটিন পর্যায়ের চেকিং
২. A-চেক (প্রতি ১-২ মাসে)
প্রতি ৪০০-৬০০ ফ্লাইং আওয়ারে একবার করা হয়
হালকা মেরামত, ফিল্টার ও তেল পরিবর্তন, সাধারণ যন্ত্রাংশ চেক করা হয়
৩. B-চেক (প্রতি ৬-৮ মাসে)
কিছু নির্দিষ্ট অংশ বিশদভাবে পরীক্ষা করা হয়
A চেকের তুলনায় একটু গভীর পর্যবেক্ষণ
৪. C-চেক (প্রতি ১৮-২৪ মাসে)
পুরো বিমান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হয়
বড় ধরনের মেরামতের প্রয়োজন হলে এখানে ধরা পড়ে
বিমান সাধারণত ১-২ সপ্তাহ সার্ভিসিংয়ের জন্য হাবে থাকে
৫. D-চেক (প্রতি ৬-১০ বছরে)
সবচেয়ে জটিল এবং সময়সাপেক্ষ সার্ভিসিং
পুরো বিমান খুলে প্রতিটি অংশ পরীক্ষা, মেরামত বা বদল করা হয়
খরচ প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে
DGCA-এর কড়া নিয়ম
ভারতে DGCA (Directorate General of Civil Aviation) প্রত্যেকটি সার্ভিসিং প্রক্রিয়ার জন্য কড়া নিয়ম তৈরি করেছে। বিমান সংস্থাগুলোকে সব তথ্য ডিজিসিএ-র কাছে জমা দিতে হয় এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অডিট হয়।