অবশ্যই সেরা ফ্ল্যাগশিপ ফোন বাছাই করা কঠিন, বিশেষত যেখানে ২০১৮ সালে ফ্ল্যাগশিপের ভীড় বেশি। উন্নত ডিসপ্লে, নচ ডিজাইন, ৬ থেকে ৮ জিবি র্যাম, সঙ্গে ৭ এনএম প্রসেসরের স্মার্টফোন নিয়ে এসেছেন নির্মাতারা।
ফিচারের তালিকায় রয়েছে সম্প্রতি ব্যাটারীর সাইজ, দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা, ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলিতে উন্নতমানের ক্যামেরা। সম্প্রতি চার ক্যামেরার ফোন এসেও হাজির হয়েছে গ্যাজেট দুনিয়ায়।
২০১৮ সালের সেরা পাঁচটি ফ্ল্যাগশিপ ফোনের তালিকা:
১) Galaxy Note 9 ২) iPhone XS Max ৩) OnePlus 6T ৪) Google Pixel 3 ৫) Oppo Find X
Galaxy Note 9
এই ফোনের মূল আকর্ষণ S Pen। যার মধ্যে রয়েছে একাধিক ফিচার। অনুভূমিক ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা, ৫১২ জিবির ইন্টারনাল স্টোরেজ ও সঙ্গে শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যাকআপের নতুন সদস্যকে নিয়ে রীতিমত সরগরম গ্যাজেট ওয়ার্ল্ড। বিশেষজ্ঞদের মতে ফোনটি বিক্রি হওয়ার পিছনে রয়েছে S Pen এর তাৎপর্য।
বলাই যায় S Pen ফোনটির ট্রিগার। যা প্রেস করলেই আপনার একাধিক কাজ সারা হয়ে যাবে। কোম্পানির দাবি, তারা S Pen শুধু স্টাইলাস নয়, রিমোট কন্ট্রোল বানিয়ে তুলেছে। ক্যামেরা হোক বা ভিডিও, সব কিছুই দূর থেকেই পরিচালনা করতে পারবেন আপনি। ফোনটিকে কয়েক হাত দূরে রেখে S Pen দিয়ে ছবি তুলতেও পারবেন আপনি। ফোনটিতে ৪০০০ mAh ব্যাটারি আছে। ডিসপ্লেতে রয়েছে ‘ডায়মন্ড কাট এজ’।
গ্লোবাল এডিশন প্রসেসর রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫। কিন্তু ভারতীয়দের জন্য স্যামসাং-এর নিজস্ব প্রসেসর Exynos চিপসেটে চলবে Samsung Galaxy Note 9। ভারতীয়রা এই ফোনে ডুয়াল সিমের মডেল ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। তবে স্যামসাং আবার সেই কার্বন ফাইবার সিস্টেমে ফিরে গেছে, যা ভারী গেমিংয়ের সময় শীতল রাখে ফোনটিকে।
Samsung Galaxy Note 9 ফোনটির আরেকটি ইউএসপি হল একটি ক্যামেরায় ডুয়াল অ্যাপারচার। বিভিন্ন রকম লাইটে ফোনটির ক্যামেরা একেবারে সেরা পারফরম্যান্স দিতে প্রস্তুত। তার জন্য কোনরকম অতিরিক্ত ম্যানুয়াল সেটিংয়ের বা আলোর কমবেশি নিয়ে ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন হবে না। দুটি অ্যাপারচার থাকার কারণে কম থেকে অতিরিক্ত আলো, সব পরিস্থিতিতেই নিজের থেকে ক্যামেরা বদলে নেবে অ্যাপারচারের মোড।
আরও পড়ুন: Samsung Galaxy Note কিনবেন নাকি iPhone XS Max কিনবেন ?
iPhone XS Max
iPhone XS Max সম্ভবত এই বছরের সবচেয়ে প্রত্যাশিত ফোন ছিল। একে অবশ্যই সেরার তালিকায় রাখা যায়। iPhone XS Max নিখুঁতের পাশাপাশি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল।
ফোনগুলির চলার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে ‘A12 Bionic chipset’। প্রথমে সেভেন ন্যানো মিটার প্রসেসর থাকত এই আইফোনের মধ্যে। গেম খেলা ও ভারী কাজ করার জন্য এই নতুন প্রসেসর লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানি। এটিতে আইফোনের সর্বকালের সেরা ক্যামেরা রয়েছে।
OnePlus 6T
জীবনে অনুঘটকের মত কাজ করে প্রযুক্তি। যা দিয়ে বহুক্ষণের কাজ, বা কঠিন কাজ এক ক্লিকেই সেরে ফলতে পারি আমরা। এই দৃষ্টিভঙ্গিকেই ভর করে প্রত্যেক বছর একটি করে ফোন লঞ্চ করে Oneplus। এবছর যার লেটেস্ট আপডেটেড ফোন T সিরিজের।
৬.৪-ইঞ্চির Full HD + AMOLED ডিসপ্লে, যার অ্যাসপেক্ট রেশিও থাকবে ১৯.৫:৯। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ প্রসেসর। ৬ জিবি ও ৪ জিবি র্যাম। ১২৮ জিবি/ ২৫৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। ১৬ এমপি + ২০ এমপি রিয়ার ক্যামেরা, ১৬ এমপি ফ্রন্ট ক্যামেরা। অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই সঙ্গে অক্সিজেনস অপারেটিং সিস্টেম থাকবে। ৩৭০০ mAh এর ব্যাটারি।
Google Pixel 3
ক্যামেরাই ফোনটির ইউএসপি। স্যামসাং নোকিয়া বা শাওমি নয়। গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ফোন Pixel 3। কয়েকদিন আগে ভারতের বাজারে ল়ঞ্চ হয়েছে ফোনটি। Google জোর দিয়ে বলেছে যে Pixel 3 ফোনটিতে এবার কেবল হার্ডওয়্যার বা লুকের দিকে নজর দেওয়া হয়নি। তার পরিবর্তে আরও নতুন ফিচার নিয়ে আসা হয়েছে ইউজারদের জন্য। ফিচারগত দিক দিয়ে ক্যামেরার মান বাড়িয়েছে গুগল।
Google Pixel 3 specifications: ৫.৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি + ডিসপ্লে (২১৬০ x ১০৮০) ১৮: ৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও ডিসপ্লে। কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫। এইচডিআর সাপোর্ট। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ প্রসেসর, অ্যাড্রেইন ৬৩০ জিপিইউ। পিক্সেল ভিজ্যুয়াল কোর। ৪ জিবি র্যাম, ৬৪ ও ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। ১২ ও ২ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল পিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা, f / ১.৮ অ্যাপারচার; অপটিক্যাল + ইলেক্ট্রনিক ইমেজ স্টেবিলাইজেশন। ৮ মেগাপিক্সেলর ডুয়াল ক্যামেরা (ওয়াইড অ্যাঙ্গেল)। IP68 জল এবং ধুলো প্রতিরোধী। ২,৯১৫ এমএএইচ ব্যাটারী। ওয়্যারলেস চার্জিং। অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই ভার্সন। ডুয়াল ফ্রন্ট-ফায়ারিং স্পিকার।
Oppo Find X
এমনটা আগে দেখেনি গ্যাজেট ওয়ার্ল্ড, এমনই দাবি করেছে ওপো কোম্পানি। আপাতত ফ্ল্যাগশিপ ফোন Oppo Find X। কিছুদিন আগে ঘটা করে ভারতে লঞ্চ হয় ওপোর এই ফোনটি।
৬.৪ ইঞ্চির ১০৮০+ OLED ডিসপ্লেতে থাকবে না বেজেল। তবে অবশ্যই নচ ডিজাইন রয়েছে। ফোন বডির ৯৩.৮ শতাংশই জুড়ে রয়েছে স্ক্রিন।Find X ফোনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর ক্যামেরা। এ ফোনের ক্যামেরা সিস্টেম পুরোপুরি মোটেরাইজড। ফোন বন্ধ থাকলে ক্যামেরাও বন্ধ থাকে, এবং ফোন টার্ন অন করলে ২৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা পপ আপ করে ওঠে, যে ক্যামেরায় রয়েছে ৩ডি ফেসিয়াল স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থাও। পিছনে আছে LED ফ্ল্যাশ সহ ২০ ও ১৬ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা কম্বিনেশন। কোম্পানির দাবি ০.৫ সেকেন্ড সময় লাগবে ক্যামেরা অন হতে। বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতের বাজারে Apple iPhone X, Samsung Galaxy S9+, Huawei P20 Pro, ফোনগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে সক্ষম ওপোর আসন্ন ফ্ল্যাগশিপ ফোন।