ISRO Chandrayaan 2 Landing: শেষ পনেরো মিনিটের চিন্তায় প্রহর গুনছে ইসরো। ইতিহাস গড়তে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রমের লক্ষ্য এখন শুধুই চাঁদ। চাঁদের একেবারে নিকটে পৌঁছে গিয়েছে ল্যান্ডার। ম্যানুভারের মাধ্যমে ক্রমশ কমছে দূরত্ব। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১.৩০ থেকে ২.৩০ এর মধ্যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে বিক্রম। আর এই গুরুতর সময়টাই শুরু থেকেই ভাবাচ্ছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের।
Advertisment
Chandrayaan 2 Landing:
Chandrayaan 2: বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "চন্দ্রযান ২ এর প্রতিটা মুহূর্ত, প্রতিটা পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। অনেক হিসেব নিকেশ করার মাধ্যমেই এগিয়ে চলেছে চন্দ্রযান। মহাকাশ থেকে সে যা তথ্য পাঠাচ্ছে তা ইসরোর কম্পিউটারে রেজিস্টার হচ্ছে। তারপরই সেটিকে নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। সুতরাং প্রতিটা মুহূর্তেই আশঙ্কা থাকে, অভিযান সফল হচ্ছে কী হচ্ছে না।"
ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিভনও জানিয়েছেন, অবতরণের শেষ পনেরো মিনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়। চন্দ্রযান-২ থেকে ল্যান্ডার আলাদা হওয়ার পর একাধিকবার কক্ষপথ বদল করেছে অবতরণকারী ল্যান্ডার। আপাতত ৩৫ x ১০১ কিমি কক্ষপথে ঘুরছে সেটি। চন্দ্রযান-২ ৯৬ x ১২৬ কিমি-র কক্ষপথে ঘুরছে। চন্দ্রযানের কক্ষপথ বদল হবে না। অবতরণের চার ঘণ্টা পর ল্যান্ডারের ভেতর থেকে বেরিয়ে কাজ শুরু করবে 'রোভার' প্রজ্ঞান।
দেবীপ্রসাদবাবু বলেন, "এই অভিযানের সময়কাল মাত্র ১৪ দিন। তাই সময় নষ্ট না করে অবতরণের চার ঘণ্টার মধ্যেই কাজ শুরু করবে প্রজ্ঞান। বিক্রম ও প্রজ্ঞান সৌরশক্তি দ্বারা চালিত। ১৪ দিন পর টানা ১৫ দিনের জন্য চাঁদের দক্ষিণ ভাগে অন্ধকার নেমে আসবে। যার ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যাবে প্রজ্ঞানের। অন্ধকারের সঙ্গে প্রচন্ড ঠান্ডাও হয়ে যাবে ওই এলাকা, তখন বিকল হয়ে পড়বে প্রজ্ঞানের যন্ত্রপাতি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে কলকাতায় ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা তথা দেশের অন্যতম জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, "ম্যানুভারিং করে ল্যান্ডারকে যখন অবতরণ করানো হবে, তখন সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য ভয় থাকে। ল্যান্ডার জোরে চাঁদের মাটি স্পর্শ করলে চলবে না। এতে বিক্রম সহ প্রজ্ঞানের ক্ষতি হতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "৬ তারিখ রাতে অরবিটার স্ক্যান করা হবে চাঁদের মাটি। স্ক্যান করে ল্যান্ডিংয়ের যথাযথ স্থান খুঁজে বের করবে বিক্রম। দক্ষিণ ভাগে ৭০ ডিগ্রী অক্ষাংশে ল্যান্ড করার কথা জানিয়েছে ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ ভাগে চড়াই-উতরাই রয়েছে, বড় বড় টিলা, খাদও রয়েছে সেখানে। যার জন্য কোথায় গিয়ে ল্যান্ড করবে বিক্রম, তা ভাবাচ্ছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের।"
সন্দীপবাবু আরও বলেন, "রকেট যখন মহাকাশে উড়ে যায় তখন গতিমুখের উল্টোদিকে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। কিন্তু ল্যান্ডার যখন চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে, তখন গতিবেগ কমিয়ে সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য একইদিকে চাপ সৃষ্টি করা হবে। এই ম্যানুভেরিংটা নিয়ে আপাতত চিন্তিত বিজ্ঞানীরা।" প্রসঙ্গত, এবছরই ইজরায়েল তাদের ল্যান্ডারকে সফট ল্যান্ডিং করাতে অক্ষম হওয়ায় সম্পূর্ণ অভিযানই মাঠে মারা যায় তাদের।
"স্ক্যানের তথ্য ল্যান্ডার পাঠাতে থাকবে ইসরোকে, অবতরণের সঠিক স্থান খুঁজে পেলে ভারত থেকে গতি কমানোর কম্যান্ড পৌছে যাবে ল্যান্ডারে। Sinpenius N ও Manzinus C এর মাঝে একটা উঁচু জায়গা আছে, সেখানেই ল্যান্ড করানো হবে। তবে ঠিক কোথায় ল্যান্ড করা হবে সেটি তখনই ঠিক করা হবে ক্যামেরার মাধ্যমে," বলছেন সন্দীপবাবু।