DRDO kusha Air Defence System: ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে DRDO (Defence Research and Development Organisation)। অত্যাধুনিক, বহু-স্তরবিশিষ্ট দেশীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘কুশা’ (Kusha) তৈরির কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। যেটি অত্যাধুনিক ড্রোন থেকে শুরু করে ক্রুজ মিসাইল, এমনকি যুদ্ধবিমান পর্যন্ত সব ধরনের আক্রমণকে রুখে দিতে সক্ষম।
‘দেশি S-400’ তৈরির পথে ভারত! ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও জোরদার করতে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। রাশিয়া থেকে আরও S-400 কেনার পাশাপাশি দেশীয়ভাবে তৈরি প্রজেক্ট ‘কুশা’ নিয়েও দ্রুত এগোচ্ছে DRDO। এই কুশা প্রকল্পকে ইতিমধ্যেই ভারতের ‘দেশি S-400’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। এটি প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম এবং একই সময়ে ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুকে ট্র্যাক ও ধ্বংস করতে পারে চার ধরণের অত্যাধুনিক মিসাইল ব্যবহার করে। DRDO সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘কুশা’ LR-SAM (Long Range Surface to Air Missile) সিস্টেম, যা রাশিয়ার S-400 ও S-500 সিস্টেমের সমতুল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
তিনটি ধাপে নির্মিত হবে কুশা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা:
🔹 M1 ভেরিয়েন্ট
▪ পাল্লা: প্রায় ১৫০ কিমি
▪ লক্ষ্য: ড্রোন, UAV, ছোট ক্ষেপণাস্ত্র
🔹 M2 ভেরিয়েন্ট
▪ পাল্লা: ২৫০ কিমি
▪ লক্ষ্য: স্টিলথ ফাইটার, ক্রুজ মিসাইল
🔹 M3 ভেরিয়েন্ট
▪ পাল্লা: ৩৫০ কিমি
▪ লক্ষ্য: ব্যালিস্টিক মিসাইল, দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র
এই তিনটি মিসাইল সিস্টেম মিলে ভারতের আকাশসীমাকে তিনটি স্তরে রক্ষা করবে, ‘Multi-Layered Air Defence Shield’ তৈরি করতে সাহায্য করবে।
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বোঝা গেছে, আধুনিক বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শত্রুর শক্তিশালী আক্রমণ রুখে দিতে অত্যন্ত কার্যকর। এই পরিস্থিতিতে, ভারতের হাতে যদি একদিকে রাশিয়ার S-400 থাকে, আর অন্যদিকে নিজের তৈরি কুশা LR-SAM – তাহলে আকাশ সীমা হয়ে উঠবে প্রায় দুর্ভেদ্য দুর্গ।
প্রজেক্ট কুশা শুধু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়, বরং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র সাফল্যকে তুলে ধরছে। এটি সফল হলে, ভবিষ্যতে ভারতের আর বিদেশ থেকে দূরপাল্লার বায়ু প্রতিরক্ষা সিস্টেম আমদানি করার প্রয়োজন হবে না। জানা গিয়েছে নয়া এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের পরীক্ষা ২০২৫ থেকে শুরু হবে, ২০৩০ সালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই কুশা ডিফেন্স সিস্টেমের তিনটি ভিন্ন ভেরিয়েন্ট থাকবে – স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ পাল্লার জন্য। DRDO আশা করছে, ২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে এই সিস্টেমগুলির পরীক্ষার কাজ শেষ হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এগুলি ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হবে।
‘কুশা’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য:
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, ৯০% ভারতীয় উপাদান
তিনটি ভেরিয়েন্ট:
🔹 কুশা M1 (SRADS): ড্রোন ও UAV মোকাবিলার জন্য
🔹 কুশা M2 (MRSAM): মাঝারি পাল্লার হুমকি প্রতিরোধে
🔹 কুশা M3 (LRADS): 400 কিমি দূর পর্যন্ত শত্রু বিমান ধ্বংসে সক্ষম
ভারতীয় প্রতিরক্ষায় ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’র সাফল্য
‘কুশা’ শুধু একটি ডিফেন্স সিস্টেম নয়, বরং ভারতের আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা অভিযানের প্রতীক। এই সিস্টেম মোতায়েন হলে, দেশের আকাশসীমা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ও সুরক্ষিত হবে।